আইপিএলে বিজ্ঞাপন আসবে তো? চিন্তায় আগামী বছরের সম্প্রচারকারীরা

টিভি না ডিজিটাল, কোথায় তাঁরা বিজ্ঞাপন দেবেন সেটাই বুঝে উঠতে পারছেন না। গত বছর টিভিতে আইপিএলের দর্শকসংখ্যা ৩০-৩৫ শতাংশ কমেছে। সেটা আরও চিন্তা বাড়িয়েছে বিজ্ঞাপনদাতাদের।

June 30, 2022 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

আগামী বছরের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ নিয়ে চিন্তিত সম্প্রচারকারীরা। কয়েকদিন আগেই বিপুল অঙ্কের অর্থে বিক্রি হয়েছে আইপিএলের সম্প্রচার স্বত্ব। টিভি এবং ডিজিটাল স্বত্ব বিক্রি মিলিয়ে বোর্ডের কোষাগারে ঢুকেছে প্রায় পঞ্চাশ হাজার কোটি টাকা। তবে যে দু’টি সংস্থা সবচেয়ে বেশি টাকা খরচ করেছে, সেই স্টার এবং ভায়াকম ১৮ আগামী দিনে এই টাকা নিজেদের ঘরে ঢোকাতে পারবে কি না, সেটা নিয়েই তৈরি হয়েছে সংশয়।

এবারই প্রথম টিভি ও ডিজিটালের সম্প্রচার স্বত্ব কিনেছে দু’টি আলাদা সংস্থা। দু’সংস্থাই একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছে। এতে বিজ্ঞাপনদাতারা পড়েছেন সমস্যায়। টিভি না ডিজিটাল, কোথায় তাঁরা বিজ্ঞাপন দেবেন সেটাই বুঝে উঠতে পারছেন না। গত বছর টিভিতে আইপিএলের দর্শকসংখ্যা ৩০-৩৫ শতাংশ কমেছে। সেটা আরও চিন্তা বাড়িয়েছে বিজ্ঞাপনদাতাদের। পরের মরসুমে যদি দর্শকসংখ্যা না বাড়ে, তা হলে নতুন সমস্যা দেখা দিতে পারে।

উল্লেখ্য, গত বছরের এপ্রিলে আইপিএলের দর্শকসংখ্যা তুঙ্গে উঠেছিল। তবে কোভিডের কারণে প্রতিযোগিতা বন্ধ হয়ে যায়। দ্বিতীয় পর্ব যখন আমিরশাহিতে শুরু হয়, তখন মানুষের মধ্যে আগ্রহও হ্রাস পায়। স্বাভাবিক ভাবেই কমে যায় দর্শকসংখ্যা। এবার সেই সংখ্যা অনেকটাই কমেছে। এর অন্যতম একটা কারণ, মহেন্দ্র সিংহ ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস, রোহিত শর্মার মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের মতো জনপ্রিয় দলগুলির ক্রমাগত খারাপ পারফরম্যান্স। বিজ্ঞাপনদাতাদের সমস্যা অন্য জায়গায়।

সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুসারে, ডিজিটালে এই মুহূর্তে জনপ্রিয়তা তুঙ্গে ওঠার কোনও সম্ভাবনা নেই। অন্তত আগামী তিন-চারটি বছর টিভিই দাপট দেখাবে। ডিজিটাল মাধ্যমের পুরোপুরি দখল নেওয়া প্রক্রিয়া শুরু হতে দেরি আরও কয়েক বছর। তবে যে ভাবে ডিজিটাল মাধ্যমের জনপ্রিয়তা বেড়ে চলেছে, তাতে অনেকেই বুঝতে পারছেন না টিভি না ডিজিটাল, কোথায় বিজ্ঞাপন দেওয়া সুবিধার হবে। দু’জায়গাতেই বিজ্ঞাপন দিতে গেলে খরচ বাড়বে। কারণ স্বত্ব আলাদা আলাদা সংস্থার হাতে। সে ক্ষেত্রে কোনও দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যেতে পারেন বিজ্ঞাপনদাতারা। তবে সে ক্ষেত্রে খরচের পরিমাণ এক লাফে অনেকটাই বাড়বে। তেমনটাই অনুমান বিশেষজ্ঞ মহলের।

প্রসঙ্গত, আইপিএল যতই ইপিএল-কে পিছনে ফেলে সম্প্রচার স্বত্বের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসুক, এই প্রতিযোগিতা এখনও বিশ্বদরবারে সেভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারেনি। কারণ, এই প্রতিযোগিতায় ৯৮ শতাংশ বিজ্ঞাপন আসে ঘরোয়া বাজার থেকে। ২ শতাংশ আন্তর্জাতিক বিজ্ঞাপন থাকে। যত দিন না আন্তর্জাতিক বিজ্ঞাপনের সংখ্যা আরও বাড়ছে, তত দিন গোটা বিশ্বেও তার জনপ্রিয়তা বাড়বে না। ফলে বিরাট অর্থে ভায়াকম ১৮ ডিজিটাল সম্প্রচার স্বত্ব কিনে নিলেও, কী ভাবে খরচ এবং লাভের ব্যবধান কমাবে তারা, সেটাই এখন ভাববার বিষয়।

এমনিতেই পরের বার থেকে বিজ্ঞাপনের খরচ বাড়তে চলেছে। টিভিতে বিজ্ঞাপন পিছু খরচ ১০ শতাংশ বাড়তে পারে। ডিজিটালের ক্ষেত্রে দাম বৃদ্ধি ৩০ শতাংশে পৌঁছতে পারে। সে ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপনদাতার সংখ্যা হয়তো এমনিতেই কমবে। পরোক্ষে যা স্বত্বাধিকারীদের লাভের পরিমাণ কমিয়ে দেবে। আরও একটি বিষয় এখানে তাৎপর্যপূর্ণ। গত দু’বছরে মোট বিজ্ঞাপনদাতাদের অর্ধেক ছিলেন কোনও না কোনও স্টার্টআপ সংস্থা থেকে। তাদের তরফে বিজ্ঞাপন দেওয়ার পরিমাণ কমে গিয়েছে অনেক। সেদিকটাও ভাবাচ্ছে সম্প্রচারকারী সংস্থাগুলিকে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen