বোমা মেরে আলোচনা নয়: পরমাণু চুক্তি নিয়ে ট্রাম্পকে কড়া জবাব দিল ইরান
মধ্যপ্রাচ্যে ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও ইরান-আমেরিকা সম্পর্ক নতুন করে তেতে উঠেছে।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২০:১৩: ৩০ হাজার পাউন্ড বোমা ফেলে আবার আলোচনা? সম্ভব না! এমনটাই মার্কিন মুলুককে জানিয়ে দিল ইরান। ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাঘাচির জবাব – আমেরিকার এই আগ্রাসনে সব আলোচনার দরজা বন্ধ। মধ্যপ্রাচ্যে ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও ইরান-আমেরিকা সম্পর্ক নতুন করে তেতে উঠেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আলোচনার প্রস্তাবকে সরাসরি নস্যাৎ করে দিলেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী। তাঁর কটাক্ষ, “আমাদের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় ৩০ হাজার পাউন্ডের বোমা ফেলেছে আমেরিকা। ওদের এই সামরিক অভিযান পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনাকে আরও কঠিন করে তুলবে।”
সরকারি টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আরাঘাচি (Abbas Ghanchi) স্পষ্ট ভাষায় জানান, ইরানের সঙ্গে নতুন করে আলোচনার বিষয়ে আমেরিকার সঙ্গে কোনও যোগাযোগ হয়নি। তিনি জানান, না কোনও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় নি—আলোচনার রাস্তায় হাঁটছে না ইরান। বরং বোমা ফেলে আমেরিকা (America) আলোচনার সেই রাস্তা চিরতরে বন্ধ করে দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে ওবামা প্রশাসনের সময় সাক্ষরিত ঐতিহাসিক পরমাণু চুক্তির মাধ্যমে ইরানের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছিল আমেরিকা। কিন্তু হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর সেই চুক্তি এক তরফা ভাবে বাতিল করে ফের নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়। ট্রাম্প প্রশাসনের তরফে নতুন চুক্তির প্রস্তাব পাঠানো হলেও, তাতে থাকা কঠোর শর্তে সায় দেয়নি ইরান। সেই থেকেই উত্তেজনা বাড়তে থাকে।
সম্প্রতি ইরান-ইজরায়েল সংঘর্ষে আমেরিকার প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ এবং ইরানি পরমাণু স্থাপনায় সামরিক হামলার ঘটনায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। এর মাঝেই ইরানি সংসদ (মজলিস) আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA)-র নজরদারির বাইরে থাকার সিদ্ধান্তে সায় দিয়েছে। যার ফলে ইরানের (Iran) পরমাণু কর্মসূচি এখন থেকে সম্পূর্ণ দেশের নিয়ন্ত্রণাধীন থাকবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, উত্তর কোরিয়ার পথেই কি তবে হাঁটতে চলেছে ইরান? IAEA থেকে বেরিয়ে গিয়ে যেভাবে পিয়ংইয়ং গোপনে পরমাণু বোমা বানিয়েছে, তেমনটাই কি ইরানের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা? আন্তর্জাতিক মহল এখন সেই প্রশ্নেরই জবাব খুঁজছে।