সিকিমের বিপর্যয় কি নিছকই প্রাকৃতিক বিপর্যয়, নাকি মোদী সরকারের গাফিলতিতে?

পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিমের সীমানায় ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক ভেঙে গিয়েছে। তবে, উত্তর সিকিম সব চেয়ে বেশি বিপর্যস্ত।

October 6, 2023 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ভয়াল আকার নিয়েছে সিকিমের পরিস্থিতি। তিস্তার জল বেড়ে যাওয়ায় পাহাড়ি পথের একাধিক জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিমের সীমানায় ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক ভেঙে গিয়েছে। তবে, উত্তর সিকিম সব চেয়ে বেশি বিপর্যস্ত। সিকিমে বিপর্যয়ে এখনও পর্যন্ত ৬ জওয়ান সহ ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত ৮টা নাগাদ একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে এমনই জানানো হয়েছে রাজ্যটির প্রশাসনের তরফে এবং বিপর্যয়ের কারণে উত্তরবঙ্গ-সহ মৃত্যুর সংখ্যা ২১ ছাড়িয়েছে।

তবে এই বিপর্যয় নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। হিমবাহ সৃষ্ট দক্ষিণ লোনক হ্রদ নিয়ে গত ১০ বছর ধরে মিলছিল অশনি সঙ্কেত। নানা বিশেষজ্ঞ সংস্থার সতর্কবার্তাও এসেছে বারবার। বিপদ এড়াতে কী করতে হবে, তা জানিয়েও দেওয়া হয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থা সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনকে (সিডব্লুসি)। এমনকী গত ১৭-২৮ সেপ্টেম্বর, মাত্র ১১ দিনে হ্রদটি যখন আরও প্রায় ৬ হেক্টর বিস্তৃত হয়েছিল, তখনই দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সেই হুঁশিয়ারি কানে তোলেনি মোদীসরকার। চালানো হয়নি নজরদারিও। আর তার জেরেই মঙ্গলবার মধ্যরাতে সিকিম-উত্তরবঙ্গজুড়ে নেমে এসেছে বিপর্যয়। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১। এর মধ্যে ১১ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে সিকিমের বিভিন্ন অংশে। বুধবার গজলডোবায় তিস্তা ব্যারেজ থেকে পাওয়া গিয়েছিল তিনজনের মৃতদেহ। এদিন আরও সাতজনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে ময়নাগুড়ির দোমোহনিতে। এর মধ্যে কেবল সেনাকর্মী নায়েক ভবানী সিংকে শনাক্ত করা গিয়েছে। নিখোঁজের সংখ্যা এখনও শতাধিক।

সূত্রের খবর, ২৬০ ফুট গভীর হয়ে পড়েছিল লেকটি। অর্থাৎ প্রায় ১০ তলা বাড়ির সমান উচ্চতার জল জমেছিল সেখানে। তার চাপে যে কোনও মুহূর্তে ফেটে পড়ে বড়সড় বিপর্যয় ঘটাবে সাউথ লোনক লেক, এমনটাও জানানো হয়েছিল বিশেষজ্ঞদের তরফে। দাওয়াই ছিল একটাই—ড্রেন আউট বা বের করতে হবে লেকের জল। সেই উদ্যোগ যে একেবারে নেওয়া হয়নি, তা নয়। সিকিম সরকারের পরিবেশ দপ্তরের দাবি, চীন (তিব্বত) সীমান্তের দুর্গম অংশে ১৭ হাজার ১০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত লেকটি। ইয়াকে মালপত্র বোঝাই করে চারদিনের হাঁটাপথে সেখানে পৌঁছতে হয়। সেনাবাহিনীর সাহায্য নিয়ে লেকের জল পাম্প করে বের করতে টিম পাঠানো হয়েছিল সেপ্টেম্বর মাসে। কিন্তু বিদ্যুতের অভাবে অত্যাধুনিক ‘সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প’ বসানো যায়নি। সাধারণ সাকশন পাম্প বসিয়ে কাজ সারতে হয়েছিল। তাতে যে সমস্যা মেটেনি, মঙ্গলবার রাতে ‘গ্লেসিয়ার লেক আউটবার্স্ট ফ্লাড’ (গ্লফ)-এর রাক্ষুসে আগ্রাসন তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen