Israel-Iran conflict: তেহরানের বাসিন্দাদের শহর ছেড়ে চলে যেতে বললেন ট্রাম্প, ভয়ঙ্কর কিছু ঘটতে চলেছে?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১০:২৩: শেষপর্যন্ত কি মহাযুদ্ধেই পর্যবসিত হচ্ছে ইজরায়েল-ইরান সংঘাত? দক্ষিণ চীন সাগরে মোতায়েন মার্কিন রণতরী ইউএসএস নিমিৎজের গতিবিধি দেখে সেই আশঙ্কার মেঘ ঘনীভূত হতে শুরু করেছে। রবিবার রাতে ইজরায়েলের তেল আভিভে মার্কিন দূতাবাসের পাশেই আছড়ে পড়ে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র। ওই বিস্ফোরণে কোনও মার্কিন কূটনীতিক বা কর্মীর আঘাত না লাগলেও ভবনটির ক্ষতি হয়। সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিতে হয় দূতাবাস। কর্মীদেরও অবিলম্বে নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিতে বলা হয়।
তারপরেই খবর মেলে পশ্চিম এশিয়ার দিকে রওনা দিয়েছে মার্কিন এয়ারক্র্যাফ্ট ক্যারিয়ার নিমিৎজ। এমনকী রবিবার রাতেই ইউরোপের দিকে উড়ে গিয়েছে মার্কিন বায়ুসেনার ৩০টি এয়ারক্র্যাফ্ট। সেগুলির গন্তব্য এখনও অজানা। সেই খবরেও অবশ্য যুদ্ধের তীব্রতা বন্ধ হয়নি। সোমবার দুপুরেই ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সগর্বে ঘোষণা করেন, ‘তেহরানের আকাশ এখন আমাদের দখলে। জয়ের পথে এগিয়ে চলেছি আমরা।’ বিকেলেই তেহরানে সংবাদ পরিবেশন চলাকালীন সরকারি টিভি চ্যানেলের দপ্তরে আছড়ে পড়ে ইজরায়েলি মিসাইল।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের রাজধানী তেহরানের বাসিন্দাদের শহর ছেড়ে চলে যেতে বলার কিছুক্ষণ পর থেকেই তেহরানে বিকট বিস্ফারণের শব্দ পাওয়া যেতে থাকে। কানাডায় জি সেভেন সম্মেলনে ট্রাম্পের এহেন মন্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ বেড়েছে।
আর তারপরই ইরান আর ইসরায়েলের মধ্যে পঞ্চম দিনের মত যখন হামলা-পাল্টা হামলা চলছে, তখন সংঘাত ছাপিয়ে আমেরিকার প্রেসিডেন্টের ওই বার্তা উঠে এসেছে আলোচনার কেন্দ্রে। ট্রাম্প যা কিছু ঘটতে চলেছে তার জন্য ইরানকে দায়ী করে এদিন সোশাল মিডিয়া হ্যান্ডেল ‘ট্রুথ’-এ লেখেন, ‘ইরানের উচিত ছিল নতুন পরমাণু চুক্তিতে সই করা। আমি ওদের চুক্তিতে সই করতে বলেছিলাম। সেটা করলে এই লজ্জার ও সাধারণ মানুষের প্রাণহানীর ঘটনা ঘটত না। ইরান কোনওভাবেই পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হতে পারবে না। আমি এটি বারবার বলেছি।’ এরপরই ইরানবাসীকে বার্তা দিয়ে ট্রাম্প লেখেন, ‘সবাই জরুরিভিত্তিতে তেহরান খালি করে দিন।’
ইজরায়েল ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’-এ শুরু থেকেই টার্গেট করেছিল ইরানের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমকে। সেই কৌশলে তারা সফল। তারপর থেকেই ইজরায়েলি জেট ক্রমাগত ইরানের ভিতরে ঢুকে বোমা ও শর্ট রেঞ্জ মিসাইল ছুড়ে চলেছে। ইজরায়েলি সেনার মুখপাত্র এফি ডেফরিন দাবি করেছেন, তাঁদের ৫০টি যুদ্ধবিমান ইরানে ঢুকে অভিযান চালায়। ইরানের ১২০টি সারফেস টু সারফেস মিসাইল লঞ্চার ধ্বংস করা গিয়েছে, যা সেদেশের মোট মিসাইল লঞ্চারের ৩০ শতাংশ। ইজরায়েলি হামলায় এখনও পর্যন্ত ইরানে ২২৪ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠনের দাবি, মৃতের সংখ্যা চারশোর বেশি। আহত প্রায় দেড় হাজার।
ইরান অবশ্য হাল ছাড়ছে না। রবিবার তারা ফের ৪০০-রও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে ইজরায়েলের তেল আভিভ, পেটা তিকভা, হাইফা বন্দর সহ একাধিক এলাকা। একাধিক ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইজরায়েলের বসতি এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সারি সারি বহুতল বিধ্বস্ত। এখনও পর্যন্ত ২৪ জন ইজরায়েলি নাগরিকের মারা গিয়েছেন বলে খবর। আহতের সংখ্যা পাঁচশো ছাড়িয়েছে। ইজরায়েলি দুই গুপ্তচরকেও খতম করেছে তেহরান।