মহাকাশে পাড়ি দিল ভারত-আমেরিকার যৌথ উদ্যোগে তৈরি ‘নিসার’! রচিত হল নতুন ইতিহাস
বিশ্বের জলবায়ুর পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ, কৃষি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ‘নিসার’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৯:০০: জিএসএলভি-এমকে২ রকেটের পিঠে চেপে পাড়ি দিল ইসরো (ISRO) এবং নাসার (NASA) যৌথভাবে তৈরি স্যাটেলাইট ‘নাসা-ইসরো সিনথেটিক অ্যাপারচার রেডার’ (নিসার)। বুধবার বিকেল ৫ টা ৪০ মিনিটে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে নিসার (NISAR satellite) উৎক্ষেপণ করা হয়। সেই ঐতিহাসিক মিশনের সাক্ষী থাকার জন্য অনেকে হাজির হন। তাঁদের উচ্ছ্বাসের মধ্যেই ক্রমশ উড়ে যেতে থাকে নিসার।
নিসার নামটি হয়েছে নাসা এবং ইসরো নামের সংযোজনে। এটির পুরো নাম নাসা-ইসরো সিন্থেটিক অ্যাপারচার রাডার স্যাটেলাইট। দুদেশের মহাকাশ গবেষণা ক্ষেত্রকে চাঙ্গা করতে এই উদ্যোগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় এক দশকের বেশি সময় ধরে ভারত-মার্কিন গবেষকদের দক্ষতা ও সফ্টওয়্যার-হার্ডওয়্যার বিনিময়ে এই উপগ্রহের জন্ম হয়েছে।
কী কী কাজ করবে ‘নিসার’?
‘নিসার’ই বিশ্বের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ যা দ্বৈত ফ্রিকোয়েন্সির রেডার (এল-ব্যান্ড এবং এস-ব্যান্ড) ব্যবহার করে পৃথিবীর পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্র, বায়ুমণ্ডল, বনজঙ্গল, হিমবাহ, ভূকম্পন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ পর্যবেক্ষণ করবে। ভূপৃষ্ঠে কয়েক মিলিমিটারের পরিবর্তনও ধরা পড়বে এই কৃত্রিম উপগ্রহে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, বছরের যে কোনও মরসুমে, শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা কিংবা দিন-রাত নির্বিশেষে মহাকাশ থেকে পৃথিবীর উচ্চমানের ছবি তুলতে পারবে এই কৃত্রিম উপগ্রহ। আর সে কারণেই বিশ্বের জলবায়ুর পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ, কৃষি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ‘নিসার’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, নাসা বা ইসরোর সবথেকে শক্তিশালী এবং অত্যাধুনিক রেডার সিস্টেম হল নিসার। আগের যে কোনও কৃত্রিম উপগ্রহের থেকে দৈনিক ভিত্তিতে আরও বেশি তথ্য পাঠাতে পারবে। ভূপৃষ্ঠ এবং পৃথিবীর বরফের থ্রি-ডি দৃশ্য পাঠাবে। লাগাতার ভূমিকম্প ও ধসপ্রবণ এলাকার উপরে নজরদারি চালাবে। নির্ধারণ করবে যে কত দ্রুত গ্লেসিয়ার এবং বরফের চাদরের (হিমালয়, আন্টার্টিকা, উত্তর মেরু, দক্ষিণ মেরু) পরিবর্তন হচ্ছে।