লতা না থাকলে বলিউডে হারিয়ে যেতেন তিনি, একসময় স্বীকার করেছিলেন বাপ্পি নিজেই
বাপ্পি লাহিড়ী আজ আর আমাদের মধ্যে নেই, কিন্তু তার সঙ্গীত চিরকাল থেকে যাবে।

সঙ্গীত প্রেমীদের জন্য এটি সবচেয়ে দুঃখের মাস। লতা মঙ্গেশকর ৬ ফেব্রুয়ারি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার পর, ১৫ ফেব্রুয়ারি একই দিনে চলে গেলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ও বাপ্পি লাহিড়ী। মঙ্গলবার রাতে ৬৯ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন সকলের প্ৰিয় ‘বাপ্পি দা’। এই গায়ক তথা সুরকার ভারতীয় সঙ্গীতকে উন্নীত করতে এবং দেশে ডিস্কো ঘরানাকে পূর্ণতা দিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন। বাপ্পি লাহিড়ী এবং লতা মঙ্গেশকরের যুগলবন্দী সুরের জাদুর দুনিয়ায় নিয়ে গেছে দেশবাসীকে। একবার একটি সাক্ষাৎকারে বাপ্পি লাহিড়ী বলিউডে তার সাফল্যের কৃতিত্ব পুরোপুরি লতা মঙ্গেশকরকে দেন। ঠিক কী বলেছিলেন বাপ্পি? চলুন জেনে নেওয়া যাক।
বাপ্পি লাহিড়ী আজ আর আমাদের মধ্যে নেই, কিন্তু তার সঙ্গীত চিরকাল থেকে যাবে। তিনি এবং প্রয়াত কিংবদন্তি গায়িকা লতা মঙ্গেশকর একসঙ্গে বহু কাজ করেছেন। ফলস্বরূপ ভারতীয়রা উপহার পেয়েছেন, কালিওঁ কা চমন, গোরি হ্যায় কালাইয়াঁ, সাইয়া দিওয়ানের মতো সব সুন্দর কালজয়ী গান। একবার এক সাক্ষাৎকরে বাপ্পি লাহিড়ী বলেছিলেন কীভাবে তিনি প্রথম লতা মঙ্গেশকরের সাথে দেখা করেছিলেন এবং কীভাবে তিনি তাঁকে তাঁর কর্মজীবনে সাহায্য করেছিলেন। তিনি বলেন, “আমার বয়স তখন ৪ বছর, যখন কলকাতার ইডেন গার্ডেন এলাকায় আমরা থাকতাম। সেই বাড়িতে লতাজি এসে আমাকে আশীর্বাদ করেছিলেন। আমার কাছে এখনও তাঁর কোলে বসে থাকার একটি ছবি আছে।”
বাপ্পি লাহিড়ী আরও বলেন, “তিনি আমার বাবার (অপরেশ লাহিড়ী) জন্য অনেক বাংলা গান গেয়েছেন। বাবা কলকাতার একজন সুপরিচিত সুরকার ছিলেন। তারপর থেকেই লতাজি আমার পাশে থেকেছেন। তিনি প্রথম দাদু নামের একটি বাংলা ছবিতে আমার সুরে গান গেয়েছিলেন। তিনি যদি আমার জন্য গান না গাইতেন, আমি প্রতিযোগিতায় হারিয়ে যেতাম।”
একই সাক্ষাৎকারে বাপ্পি লাহিড়ী বলেন, কীভাবে লতা মঙ্গেশকর চলচ্চিত্র এবং সঙ্গীত জগতে তাঁকে জায়গা করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমার প্রথম বলিউডে বড় কাজ ছিল আমির খানের বাবা তাহির হোসেনের জাখমি ছবিতে। তাতে লতাজি গেয়েছিলেন অভি অভি থি দুশমনি এবং আও তুঝে চাঁদ পে লে যাউ। দুটোই বড় হিট। সেই ছবিতে আশা-কিশোরের দ্বৈত গান জলতা হ্যায় জিয়া মেরা, ভিগি-ভিগি রাতোঁ মে- ও ছিল সেটাও হিট। তারপর চলতে চলতে এবং আপ কি খাতির ছবির গান যা আজও মানুষ ভোলেনি। এভাবেই শুরু হয়েছিল বলিউডে আমার যাত্রা।”
বাপ্পি লাহিড়ীর মৃত্যুতে সঙ্গীত জগতে একটি যুগের অবসান হল।