Jan Vishwas Bill 2025: ছোটখাটো অপরাধে আর গ্রেপ্তার নয়, সংসদে কেন্দ্রের নতুন বিলের কী উদ্দেশ্য?
কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, এর ফলে সাধারণ মানুষের হয়রানি কমবে, বিচারব্যবস্থা চাপমুক্ত হবে এবং জেলগুলিতে বন্দির সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আসবে

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৭:৩০: ভারতে ছোটখাটো অপরাধে (Crime) গ্রেপ্তার আর নয়, এবার থেকে দায় মিটবে শুধুমাত্র জরিমানায়। এই লক্ষ্যেই লোকসভায় পেশ হলো জনবিশ্বাস (বিধি সংশোধনী) বিল, ২০২৫ (Jan Vishwas Amendment bill)। কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, এর ফলে সাধারণ মানুষের হয়রানি কমবে, বিচারব্যবস্থা চাপমুক্ত হবে এবং জেলগুলিতে বন্দির সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আসবে।
এখনও পর্যন্ত দেশের নানা আইনে বহু তুচ্ছ ঘটনাকেও ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে ধরা হয়। যেমন, রাস্তায় গরুর দুধ দোয়ানো, পোষা কুকুরকে অনুশীলন না করানো বা জরুরি গাড়িকে রাস্তা না-ছাড়া। এসব ঘটনার জন্য জেল পর্যন্ত হতে পারে। নতুন বিল অনুযায়ী, এগুলি আর ফৌজদারি অপরাধ নয়, বরং জরিমানা বা সতর্কবার্তায় দায় মিটবে।
কেন্দ্রের প্রস্তাব অনুযায়ী, ১০টি মন্ত্রক ও দপ্তরের অধীনে থাকা ১৬টি আইনে মোট ৩৫৫টি ধারার সংশোধন আনা হবে। এর মধ্যে ২৮৮টি ধারাকে পুরোপুরি ‘অপরাধমুক্ত’ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাকি ধারাগুলিতেও সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে শাস্তি শিথিল করার কথা বলা হয়েছে।
এই সংশোধনীর মূল উদ্দেশ্য বিচারব্যবস্থার উপর চাপ কমানো। দেশের বিভিন্ন জেলা আদালতে এখনো সাড়ে তিন কোটির বেশি ফৌজদারি মামলা (Criminal case) বিচারাধীন, যার মধ্যে ২ কোটির বেশি মামলা চলছে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে। ছোটখাটো অপরাধের মামলা বাদ দিলে গুরুতর মামলাগুলি দ্রুত নিষ্পত্তি সম্ভব হবে বলে মনে করছে কেন্দ্র।
আরও পড়ুন: Jan Vishwas 2.0: প্রথমবার আইন ভঙ্গ করলে শাস্তি নয়, নয়া আইন আনছে মোদী সরকার
নতুন বিলে প্রথমবার আইন ভাঙলে অনেক ক্ষেত্রেই সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। যেমন, ওজন পরিমাপে গরমিল ধরা পড়লে আগে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান ছিল, এখন প্রথমবার হলে শুধু সাবধান করা হবে। আবার হর্ন বাজানো নিষিদ্ধ এলাকায় প্রথমবার অকারণে হর্ন বাজালেও কেবল সতর্কবার্তা দেওয়া হতে পারে। তবে একই অপরাধ বারবার ঘটলে জরিমানা ও কারাদণ্ডের বিধান বহাল থাকবে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে প্রস্তাবিত ‘জন বিশ্বাস আইন’-এর আওতায় ফৌজদারি শাস্তির পরিধি কমিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এই আইনের মাধ্যমে ফুড কর্পোরেশনস অ্যাক্ট, ১৯৬৪-এর ধারা ৪১ এবং ইন্ডিয়ান ফরেস্ট অ্যাক্ট, ১৯২৭-এর ধারা ৩৩-সহ একাধিক আইনি ধারায় কারাদণ্ডের বিধান বাতিল করা হয়। মোট ১৮৩টি ধারাকে অপরাধমুক্ত করেছিল সরকার।
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপে পুরনো আইনগুলির কড়াকড়ি শিথিল হবে। কিন্তু প্রথমবার অপরাধ করলে যদি শুধু সতর্ক করা হয়, তাহলে কেউ কেউ বারবার ইচ্ছাকৃতভাবে আইন ভাঙতে পারেন। যদি সতর্কবার্তা যথাযথভাবে নথিভুক্ত না হয় বা প্রয়োগে শিথিলতা থাকে, তাহলে অপরাধীর পুনরাবৃত্তি ধরা কঠিন হবে।