মতপ্রকাশ হবে নির্ভীকই, বার্তা সাংবাদিকদের

জরুরি অবস্থার ৪৫তম বর্ষপূর্তির কয়েক ঘণ্টা পরই পিটিআইয়ের উপর এই রাজরোষকে ব্যঞ্জনাময় বলেই মনে করছে ওমেন্স প্রেস কর্পোরেশন ও প্রেস অ্যাসোসিয়েশন।

June 29, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা বজায় রাখতেই হবে, কোনও হুমকির কাছে মাথা নোয়াবে না মতপ্রকাশের স্বাধীনতা৷ সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের পাশে দাঁড়িয়ে এমনটাই জানালো ইন্ডিয়ান জার্নালিস্ট ইউনিয়ন, ইন্ডিয়ান ওমেন্স প্রেস কর্পোরেশন ও প্রেস অ্যাসোসিয়েশন৷ পিটিআইয়ের বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন ‘জাতীয়তাবাদ বিরোধী’ বলে তাদের সতর্ক করে চিঠি পাঠিয়েছে প্রসার ভারতী৷ পিটিআইয়ের সঙ্গে তাদের বার্ষিক সাত কোটি টাকার চুক্তি নবীকরণ হবে কি না, তাও খতিয়ে দেখছে আকাশবাণী রেডিয়ো ও দূরদর্শনের পরিচালক সংস্থা প্রসার ভারতী৷ এই চিঠি ঘিরেই বিতর্ক। পিটিআই জানিয়েছে, তারা সব দিক খতিয়ে দেখে জবাব দেবে।

ভারতে নিযুক্ত চিনা রাষ্ট্রদূত সান ওয়েইডংয়ের একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছিল পিটিআই। তাতে পূর্ব লাদাখে ইন্দো-চিন সংঘর্ষের দায় ভারতের ঘাড়েই চাপিয়েছিলেন সান। ভারতের তোলা অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে জবাব দিতে চাননি তিনি। এই সাক্ষাৎকারটির নির্ধারিত কিছু অংশ টুইট করেন চিনা রাষ্ট্রদূত। সূত্রের খবর, তার পর দিন শনিবার চিঠি পাঠানো হয় পিটিআই-কে।

মতপ্রকাশ হবে নির্ভীকই, বার্তা সাংবাদিকদের

প্রসার ভারতীর পাঠানো এই প্রচ্ছন্ন ‘হুমকি’ চিঠির কড়া সমালোচনা করেছে রাজনৈতিক শিবিরও৷ তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের কথায়, ‘প্রসার ভারতী বলেছে, পিটিআইয়ের কভারেজ জাতীয় স্বার্থে হয়নি৷ কঠোর সত্য বিজেপির পছন্দ নয়৷ এই পরিস্থিতিতে সরকার অফিসিয়াল ফেক নিউজ চ্যানেল শুরু করতে পারে, যেখানে সাংবাদিকরা সরকারের হয়ে সত্য কথা বলবেন৷’ প্রতিবাদ এসেছে কংগ্রেসের তরফেও৷

প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের টুইট, ‘একটি প্রতিবেদন দেশের স্বার্থে হয়েছে কি না, তা বিচারের অধিকার প্রসার ভারতীকে কে দিল? প্রসার ভারতীর লেখা চিঠি কি পিটিআইয়ের প্রতি প্রচ্ছন্ন হুমকি? দূরদর্শন, আকাশবাণীর মতো সংস্থাগুলি উপর প্রসার ভারতীর নিয়ন্ত্রণের পর সংস্থাগুলির বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে৷ প্রসার ভারতীর উচিত অবিলম্বে পিটিআইকে দেওয়া চিঠি প্রত্যাহার করা৷’

ইন্ডিয়ান জার্নালিস্ট ইউনিয়নের তরফে রবিবার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে প্রসার ভারতীর ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেছেন সংস্থার সভাপতি কে শ্রীনিবাস রেড্ডি ও সাধারণ সম্পাদক বলবিন্দর সিং৷ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে ইন্ডিয়ান ওমেন্স প্রেস কর্পোরেশন ও প্রেস অ্যাসোসিয়েশন-ও৷ তাদের বক্তব্য, পিটিআই শুধুমাত্র পেশাদারি কর্তব্য পালন করেছে। ভারতীয় ভূখণ্ডে যখন চিনা অনুপ্রবেশ ঘটেছে, তখন একজন সাংবাদিকের দায়িত্ব অপর পক্ষকে (এক্ষেত্রে চিন সরকারের প্রতিনিধিকে) প্রশ্ন করা, কেন এটা ঘটছে। এই সাক্ষাৎকারে সব খবর ছিল—এমনকী চিনা রাষ্ট্রদূত প্রথমবার এটাও স্বীকার করেছেন যে চিনের তরফেও বেশ কয়েকজনের প্রাণ গিয়েছে।

জরুরি অবস্থার ৪৫তম বর্ষপূর্তির কয়েক ঘণ্টা পরই পিটিআইয়ের উপর এই রাজরোষকে ব্যঞ্জনাময় বলেই মনে করছে ওমেন্স প্রেস কর্পোরেশন ও প্রেস অ্যাসোসিয়েশন। তাদের মতে, গণতন্ত্রের মূলভিত্তি যে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ মিডিয়া, তা সম্ভবত সরকার ভুলে গিয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen