কোন মিষ্টি খেয়ে ঘুমতে যান কালীঘাটের মা কালী?

সন্ধ্যা আরতির সময় হারান মাঝির দোকানের মিষ্টি মা কালীকে নিবেদন করা হয়। কথিত আছে, হারান মাঝির দোকানের মিষ্টি খেয়েই নাকি মা কালী শয়নে যান।

February 27, 2023 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বাংলার জনপ্রিয়তম মিষ্টিটির নাম রসগোল্লা। রসের এই সাদা মিষ্টিটি বাংলা তথা বাঙালির অহংকারের নাম, নবীন ময়রার অনবদ্য এক আবিষ্কার। রসগোল্লা বলতেই আমাদের মনে পড়ে গোল্লা পাকানো অর্থাত্‍ গোল মিষ্টির কথা। কিন্তু খাস কলকাতার বুকে সেই রসগোল্লাই চ্যাপ্টা হয়ে গেল। তার রঙ সাদা, সেও রসালো। কিন্তু কোথায় পাবেন চ্যাপ্টা রসগোল্লার দেখা?

কালীঘাট মন্দিরের কাছে দেবনারায়ণ লেনে রয়েছে হারান মাঝির দোকান। যদিও দোকানের কোনও তথাকথিত নাম নেই। দোকানটি প্রতিষ্ঠাতার নামেই পরিচিত। সেটাই এই দোকানের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন। লোকমুখে হারান মাঝির মিষ্টির দোকান, ডাকটাই এদের ইউএসপি। এই দোকানেই মেলে চ্যাপ্টা রসগোল্লা। আদপে মিষ্টির নাম ক্ষীরমোহন, তবে রসগোল্লা যেভাবে তৈরি হয়, ঠিক একইভাবে এই মিষ্টি তৈরি করা হয়। রসগোল্লার মতোই ক্ষীরমোহনকে রসে ফোটানো হয়। পার্থক্য বলতে কেবল আকৃতির। ক্ষীরমোহনকে রসগোল্লার মতো গোল না করে চ্যাপ্টা করা হয়। এই আকৃতির কারণেই মিষ্টিটি চ্যাপ্টা রসগোল্লা নামেই জনপ্রিয় হয়। ক্রেতারাও দেদার কেনেন এটি।

হারান মাঝির মিষ্টির দোকানের বয়সে ১৫০ বছরেরও বেশি। হাওড়ার দেউলটির হারান চন্দ্র মাঝি কালীঘাট মন্দিরের পিছনে দোকান তৈরি করেছিলেন। আজ চার পুরুষ ধরে হারান মাঝির পরিবার দোকান চালিয়ে আসছে। বুবাই মাঝি ও রাজু মাঝি এখন দোকান সামলাচ্ছেন। তাঁরাই বলেন আজও কম করে ২০০ পিস চ্যাপ্টা রসগোল্লা প্রতিদিন বিক্রি হয়। নানান এলাকার লোক, এমনকি দূর থেকে লোকজন এই মিষ্টি কিনতে আসেন। আবার আবার কেউ এই মিষ্টি দিয়েই কালীঘাট মন্দিরে মায়ের পুজো দেন।

কালীঘাটের মায়ের ভোগের জন্য মিষ্টি এই হারান মাঝির দোকান থেকেই যায়। সন্ধ্যা আরতির সময় হারান মাঝির দোকানের মিষ্টি মা কালীকে নিবেদন করা হয়। কথিত আছে, হারান মাঝির দোকানের মিষ্টি খেয়েই নাকি মা কালী শয়নে যান। আজও এই দোকানে আধুনিকতা প্রবেশ করেনি, অন্দরসজ্জা সেই পুরনো আমলের। ইতিহাস-ঐতিহ্যকে ভর করেই চলছে দোকান। হয়ে উঠেছে কলকাতার ইতিহাসের অনন্য উপাদান।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen