ফের কল্যাণ বনাম মহুয়া, আবারও সংঘাতে দুই সাংসদ?

“কালীগঞ্জের উপনির্বাচনে আমাকে দিদি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) প্রচারে যেতে বলেছিলেন। উনি (মহুয়া মৈত্র) আইপ্যাককে বলে আমার যাওয়া আটকে দেন।

June 29, 2025 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

আবারও সংঘাতে জড়ালেন মহুয়া মৈত্র এবং কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। অতীতে চোস্ত ইংরেজি বলা, লক্ষ টাকার ব্যাগ নেওয়া সাংসদ মহুয়া মৈত্র এবং আইনজীবী তথা লোকসভার সাংসদ কল্যাণ কাজিয়ায় জড়িয়েছেন। সমাজ মাধ্যমে সে দৃশ্য ভাইরালও হয়েছিল।

ল কলেজে ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগের প্রেক্ষিতে শুক্রবার কল্যাণ বলেছিলেন, “সহপাঠী যদি সহপাঠিনীকে ধর্ষণ করেন, তা হলে নিরাপত্তা দেবে কে?” এহেন মন্তব্যের পরই বিতর্ক শুরু হয়। কল্যাণের মন্তব্যের কড়া নিন্দা করে অবস্থান স্পষ্ট করে তৃণমূল। দলের তরফে সমাজ মাধ্যমে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়, কল্যাণের মন্তব্য একান্ত ব্যক্তিগত মতামত। পাল্টা প্রকাশ্যেই দলের বক্তব্যকে চ্যালেঞ্জ করেন কল্যাণ! অন্যদিকে, প্রবীণ তৃণমূল সাংসদ কল্যাণকে নাম না-উল্লেখ করে পাল্টা কটাক্ষ করেছেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র। মহুয়া জানিয়েছেন, এই ধরনের নারীবিদ্বেষী মন্তব্য যেই করুন না কেন, তৃণমূল তার প্রতিবাদ করে। মহুয়ার মন্তব্যের নিশানা যে কল্যাণ তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

কল্যাণের মন্তব্যের কড়া নিন্দা করে সমাজ মাধ্যমে তৃণমূল জানায়, “মহিলাদের ওপর অপরাধের ক্ষেত্রে বরাবরই জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও করা হবে। যারা এই নৃশংস ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে যেন কঠোরতম শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়।”
তৃণমূলের এই বার্তা সমাজ মাধ্যমে শেয়ার করেন মহুয়া। তিনি লেখেন, “ভারতে নারীবিদ্বেষ দলের গণ্ডিতে আটকে নেই। কিন্তু তৃণমূলকে অন্যদের থেকে আলাদা করে একটাই বিষয়, আমরা এই ধরনের বিরক্তিকর মন্তব্যের প্রতিবাদ করি, তা সে যে-ই করুন না কেন।”

মহুয়ার এহেন মন্তব্যে চুপ করে বসে থাকেননি কল্যাণ। বাংলার এক দৈনিক সংবাদপত্রের ডিজিটাল সংস্করণকে প্রতিক্রিয়ায় তিনি জানান, “দেড় মাসের হানিমুন শেষ করে দেশে ফিরেই কি ওঁর আমার পিছনে লাগা শুরু হল? আমি সব নারীকে সম্মান করি, কিন্তু মহুয়া মৈত্রকে ঘৃণা করি। যাঁকে পার্লামেন্টের এথিক্স কমিটি বহিষ্কার করে তাঁকে ঘৃণাই করি।” (সম্প্রতি পুরীর প্রাক্তন সাংসদ পিনাকী মিশ্রের সঙ্গে বিয়ে সেরেছেন মহুয়া।)

কল্যাণ আরও বলেন, “আমি নারীবিদ্বেষী? আপনি এক মহিলার ৪০ বছরের বিবাহিত জীবন নষ্ট করে, তাঁকে কষ্ট দিয়ে সেই পুরুষকে বিয়ে করেছেন। আমি নারীবিদ্বেষী?” শ্রীরামপুরের সাংসদের প্রশ্ন, “কালীগঞ্জের উপনির্বাচনে আমাকে দিদি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) প্রচারে যেতে বলেছিলেন। উনি (মহুয়া মৈত্র) আইপ্যাককে বলে আমার যাওয়া আটকে দেন। এত কিসের ভয়?”

প্রসঙ্গত, অতীতে কল্যাণ ও মহুয়ার বাকবিতণ্ডায় জড়ানোর দৃশ্য চাক্ষুষ করেছে নেটিজেনরা। বিগত এপ্রিলে ভুয়ো এপিক নিয়ে আন্দোলন চলার সময় রীতিমতো কলতলার ঝগড়ার পর্যায়ে নেমে আসেন দুই সাংসদ। ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, কমিশনের বাইরে প্রহরার দায়িত্বে থাকা বিএসএফ এবং সিআইএসএফ জওয়ানদের উদ্দেশে কল্যাণকে গ্রেপ্তার করতে বলেন মহুয়া। মহুয়ার অভিযোগ, কল্যাণের ব্যবহার নাকি ‘অ্যাবিউসিভ’ ছিল (দুর্ব্যবহার)। যদিও প্রকাশ্যে অবশ্য কেউ কারও নাম উল্লেখ করেননি। শোনা যায়, কল্যাণের আচরণে ক্ষিপ্ত মহুয়া নাকি তৃণমূলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ত্যাগ করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠিও লিখেছিলেন।

এই ঘটনার পর সাংবাদিক সম্মেলনে কল্যাণ বলেছিলেন, “নারদার চোর আর এর-তার থেকে গিফট-নেওয়া সব দু’নম্বরিগুলো এক জায়গায় হয়েছে। দু’নম্বরিদের এক জায়গায় হতে বেশি সময় লাগে না।” বিদেশে নিবাসী ভারতীয় ব্যবসায়ীর থেকে উপহার নিয়ে সংসদে আদানি ও মোদীকে জড়িয়ে প্রশ্ন তোলার অভিযোগে সপ্তদশ লোকসভা থেকে মহুয়াকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। রাজনীতির জগতের কেউ কেউ বলেন, উপহার নেওয়ার প্রসঙ্গ তুলে কল্যাণ সেই ইঙ্গিতই করেছিলেন। এখন দেখার মহুয়া-কল্যাণের সাম্প্রতিক বাকযুদ্ধের জল কোনদিকে গড়ায়

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen