ফিরে দেখা – কিংবদন্তি কনিকা বন্দোপাধ্যায়

কনিকা বন্দোপাধ্যায় – কবিগুরু যার নাম ‘অণিমা’ থেকে কণিকা রেখেছিলেন, যার গানে মুগ্ধ হয়ে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ডাকতেন ‘আকবরী মোহর’ সেই কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এখনো সঙ্গীতপ্রেমীদের কাছে অনন্য উজ্জ্বল হয়ে আছেন।

April 5, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

জীবদ্দশায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন, ‘আমার গান যাতে আমার গান বলে মনে হয় এইটি তোমরা কোরো’। কথাটি তার গানের নিজস্বতা বা স্বাতন্ত্রিক সত্ত্বার বিষয়টিকেই ইঙ্গিত করে। সময়ের বিবর্তনে এখন রবীন্দ্রনাথের গানের স্বভাব কিংবা ঢং কতটা মৌলিকত্ব বজায় থাকছে সেটি আসলে ভাববার বিষয়।  

রবীন্দ্রসঙ্গীতের যথার্থ সুর, ঢং বা ঘরানাকে প্রকৃত গায়কীতে তুলে ধরার মধ্য দিয়ে যে ক’জন সঙ্গীতশিল্পী আজন্ম সাধনার মধ্য দিয়ে রবীন্দ্রনাথের গানকে গণমানুষের কাছে ছড়িয়ে দিয়েছেন তাদেরই একজন রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী ও শিক্ষিকা কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। 

কনিকা বন্দোপাধ্যায় – কবিগুরু যার নাম ‘অণিমা’ থেকে কণিকা রেখেছিলেন, যার গানে মুগ্ধ হয়ে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ডাকতেন ‘আকবরী মোহর’ সেই কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এখনো সঙ্গীতপ্রেমীদের কাছে অনন্য উজ্জ্বল হয়ে আছেন। 

শান্তিনিকেতনের শারদোৎসবে একটি অনুষ্ঠানে বালক-বালিকাদের দলে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। জানা যায়, রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তার সেই প্রথম ও শেষ মঞ্চাবতরণ; কারণ সেই অনুষ্ঠানটিই ছিল রবীন্দ্রনাথের শেষ মঞ্চাভিনয়। ২৪ জুলাই ১৯৪০ বোলপুর টেলিফোন কেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি ওগো তুমি পঞ্চদশী গানটি গেয়েছিলেন। গানটি তিনি সরাসরি রবীন্দ্রনাথের কাছেই শেখেন। এই অনুষ্ঠানটি বেতারে সম্প্রচারিত হয়। এটিই কণিকার প্রথম বেতার অনুষ্ঠান। 

১৯৪১ সালে রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর সময় কণিকা ছিলেন শান্তিনিকেতনে। এই সময় রবীন্দ্রনাথের নির্দেশ মতো ‘সমুখে শান্তি পারাবার’ গানটি যে বৃন্দদলে গাওয়া হয়, সেই দলে ছিলেন কণিকা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই গানটি মৃত্যুর কয়েক বছর আগে রচনা করলেও, রবীন্দ্রনাথের নির্দেশে তাঁর মৃত্যুর পরেই প্রকাশিত ও গীত হয়। 

দেশের বাইরে বাংলাদেশেও তিনি বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। বিশেষ করে টপ্পা আঙ্গিকের গানে তিনি সব থেকে বেশি জনপ্রিয়তা লাভ করেন। তিনি তাঁর জীবনের বেশিরভাগ সময়ই শান্তিনিকেতনে কাটান। 

আনন্দধারা বহিছে ভুবনে কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সর্বাধিক জনপ্রিয় রবীন্দ্রসংগীত। ১৯৫৬ সালে এই গানটি তিনি প্রথম রেকর্ড করেন। গানটি তিনি শিখেছিলেন সঙ্গীতচর্চার রমেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে। এই গানটি ছাড়াও ‘বাজে করুণ সুরে’সহ রবিঠাকুরের বহু গান কণিকার কণ্ঠে জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

শুনে নেওয়া যাক তাঁর গাওয়া কিছু বিখ্যাত রবীন্দ্র সঙ্গীত:

১। আনন্দধারা বহিছে ভুবনে

২। আমার সকল নিয়ে বসে আছি

৩। দাঁড়িয়ে আছ তুমি আমার গানের ওপারে

৪। আমার যে সব দিতে হবে

৫। বাজে করুণ সুরে

এছাড়াও তিনি অতুলপ্রসাদের গানেও ছিলেন অত্যন্ত সাবলীল।

১। ওগো নিঠুর দরদী

২। পাগলা মনটারে তুই

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen