NCRB-র রিপোর্ট অনুযায়ী পরপর চতুর্থবার দেশের সবচেয়ে নিরাপদ শহর কলকাতা

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১২:২৫: ভারতের নিরাপত্তা তালিকায় আবারও শীর্ষে উঠে এল কলকাতা। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (NCRB)-এর সর্বশেষ ২০২৩ সালের রিপোর্টে দেখা গেছে, দেশের ২০ লাখের বেশি জনসংখ্যা বিশিষ্ট ১৯টি শহরের মধ্যে কলকাতায় অপরাধের হার সবচেয়ে কম প্রতি এক লক্ষ জনে মাত্র ৮৩.৯টি দণ্ডনীয় অপরাধ। এ নিয়ে পরপর চার বছর ভারতের সবচেয়ে নিরাপদ শহর হিসেবে নিজের অবস্থান ধরে রাখল তিলোত্তমা।
অপরাধ পরিসংখ্যান বলছে, ২০২২ সালে কলকাতায় এই হার ছিল ৮৬.৫ এবং ২০২১ সালে ১০৩.৫। ২০১৬ সালে যেখানে এই হার ছিল ১৫৯.৬, সেখানে ধীরে ধীরে অপরাধের গ্রাফ নেমেছে শহরে । গত বছর (২০২৩) শহরে মোট দণ্ডনীয় অপরাধের সংখ্যা দাঁড়ায় ১১,৮৪৩, যা ২০২২ সালের তুলনায়ও কম (১২,২১৩)।
নারী সংক্রান্ত অপরাধের ক্ষেত্রেও শহরের পারফরম্যান্স প্রশংসনীয়। ২০২৩ সালে কলকাতায় মোট ১,৭৪৬টি নারী-নির্যাতনের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় কম। নারীদের বিরুদ্ধে অপরাধের হার প্রতি এক লক্ষ জনে ২৫.৭, যা দেশের মধ্যে তৃতীয় সর্বনিম্ন চেন্নাই (১৭.৩) ও কোয়েম্বাটুর (২২.৭)-এর পরেই কলকাতা। শহরে প্রাপ্তবয়স্ক নারীর ধর্ষণ মামলার সংখ্যা ২০২৩ সালে মাত্র ১০, যদিও নাবালিকা ধর্ষণের ঘটনা ছিল ১৭২টি।
তবে ইতিবাচক ছবির মধ্যেও কিছু সতর্কবার্তা রয়েছে। গত বছর শহরে ৪৩টি খুনের ঘটনা ঘটেছে, যা ২০২২ সালের তুলনায় কিছুটা বেশি (৩৪), যদিও ২০২১ ও ২০২০ সালের তুলনায় কম।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (দ্বিতীয়) শুভঙ্কর সিনহা রায় জানিয়েছেন, “প্রযুক্তির কার্যকর ব্যবহার, রাতের টহল, পরিকাঠামোগত উন্নয়ন ও নাগরিকদের আইন মেনে চলার মানসিকতাই এই সাফল্যের মূল কারণ।”
রাজ্যের শিল্প ও নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী শশী পাঞ্জা বলেন, “এনসিআরবি’র রিপোর্ট আমাদের দাবি প্রমাণ করেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বলেছেন, অপরাধে শূন্য সহনশীলতা থাকবে। কলকাতার নিরাপত্তা সেই নীতিরই প্রতিফলন।”
অন্যদিকে রাজ্য স্তরেও পশ্চিমবঙ্গ এগিয়ে রাজ্যের দণ্ডনীয় অপরাধের হার ১৮১.৬, যেখানে জাতীয় গড় ৪৩৩। কেবল ঝাড়খণ্ড, নাগাল্যান্ড, সিকিম ও মেঘালয় এই ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের চেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে।
কলকাতা আজ শুধু সংস্কৃতি নয়, নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও ভারতের অন্যতম উদাহরণ একটি শহর, যেখানকার নাগরিকেরা ও প্রশাসন একসাথে প্রমাণ করছে, নিরাপত্তা মানে কেবল আইন নয়, এটি সচেতনতার সংস্কৃতি।