কিশোর-কিশোরীদের Fake News চেনার উপায় শেখাতে অভিনব উদ্যোগ AltNews -এর
কমিউনিটি সেন্টারটি পরিচালনা করে বিক্রমশিলা এডুকেশন রিসোর্স সোসাইটি। এই কর্মসূচির আয়োজক প্রখ্যাত ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা অল্ট নিউজ।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বর্তমানে ভুয়ো খবরের রমরমা চলছে গোটা দেশজুড়ে। ভুয়ো তথা ভুল খবরের কারণে বিড়ম্বনায় পড়েন আমজনতা। ভুয়ো খবর থেকে জনসাধারণকে মুক্ত করতে এগিয়ে এল অল্ট নিউজ। কিশোর-কিশোরীদের জন্য এক অভিনব উদ্যোগ শুরু করেছে তারা। তারাতলা থানা নিকটস্থ নবদিশা কমিউনিটি সেন্টারে দু-মাসব্যাপী এক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সী ৩০ জনকে মিডিয়া সংক্রান্ত সাক্ষরতার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে যাতে তারা সহজেই ভুয়ো তথ্যের মোকাবিলা করতে পারে। কমিউনিটি সেন্টারটি পরিচালনা করে বিক্রমশিলা এডুকেশন রিসোর্স সোসাইটি। এই কর্মসূচির আয়োজক প্রখ্যাত ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা অল্ট নিউজ।
অল্ট নিউজ তরফে বলা হচ্ছে, কিশোর বয়সীদের মধ্যে ভুয়ো তথ্য শনাক্ত করার পাঠ পড়াতেই তারা উদ্যোগী হয়েছে। কীভাবে ভুয়ো খবর চেনা যায়, কোনও সংকেতগুলো দেখে তা বোঝা যায়, পাশাপাশি সমাজ মাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্যগুলিকে সঠিক বা ভুল হিসাবে চিহ্নিত করার দক্ষতা শেখানো হয়েছিল। একই সঙ্গে সংবাদ মাধ্যমে ভুয়ো খবরের প্রভাব, প্রেক্ষাপট ইত্যাদি সম্পর্কেও জানানো হয়ে।
নবদিশা কেন্দ্রসহ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাটানগর বয়েজ হাই স্কুলে এই উদ্যোগের একটি প্রি-পাইলট কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। সেখানে নবম শ্রেণির প্রায় ত্রিশ জন শিশু অংশগ্রহণ করেছিল। এছাড়াও কলকাতা ও সংলগ্ন জেলার সরকারি ও বেসরকারি প্রায় পাঁচটি স্কুলে ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সী পড়ুয়াদের এই কর্মসূচিতে সামিল করা হয়েছে।
এ বিষয়ে এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে অল্ট নিউজের সহ-প্রতিষ্ঠাতা প্রতীক সিনহা জানান, প্রি-পাইলট প্রোগ্রাম আদপে পাঠ্যক্রম ভিত্তিক কর্মসূচি, কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে মিডিয়া সাক্ষরতা সংক্রান্ত জ্ঞান এবং দক্ষতা বিকাশের লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ। ভুয়ো খবর চিহ্নিত করার পাশাপাশি সংবাদ মাধ্যমের ব্যবসা এবং পক্ষপাত দুষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কেও অংশগ্রহণকারীদের জানানো হয়। নবদিশা কমিউনিটি সেন্টারে অংশগ্রহণকারী তিনজন তিনটি আলাদা আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি থেকে একটি শহরে একটি মল স্থাপিত হওয়ার কথা বলেছিল, একটির উদ্দেশ্যে বাণিজ্য অর্থাৎ অর্থনৈতিক লাভ, অন্যটি রাজনৈতিক ক্ষমতার দ্বারা চালিত এবং তৃতীয়টি ছিল মলের জেরে বাস্তুহারা নাগরিকদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে।
১৫ মে, নবদিশা সেন্টারে প্রাক-পাইলট উদ্যোগে অংশগ্রহণকারী পড়ুয়ারা একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিল। যা তারা শিখেছে এখানে তার উপর ভিত্তি করেই, পড়ুয়ারা বিভিন্ন জিনিস বানিয়েছিল। বাচ্চারা যাতে ভাল মন্দের তফাৎ নিজেরাই করতে পারে, তাই এহেন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তাজমহল ছিল তেজো মহালয়া অর্থাৎ শিব মন্দির, এই তথ্যটির সত্যতা খোঁজাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের খেলার ছলে দুইভাগে ভাগ করা হয়েছিল। একদলের দায়িত্ব ছিল তথ্যের সত্যতা খোঁজা, আরেক দলের কাজ ছিল তা ‘ফ্যাক্ট চেক’-এর মাধ্যমে যাচাই করা।
প্রতীক সিনহা আরও জানান, তারা বিভিন্ন স্কুলে স্কুলে যাচ্ছেন এবং এই বিষয়ে পাঠ্যক্রম চূড়ান্ত করার জন্যও কাজ করছেন। এরপর তারা, এই বিষয়টি পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার জন্যে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করবেন। কৈশোর হল গঠনমূলক সময়, তাই দুনিয়াকে ভুয়ো খবরের বাড়বাড়ন্ত থেকে বাঁচাতে শিশুদের মধ্যে যেকোনও তথ্যকে সমালোচনামূলকভাবে দেখার বোধ তৈরি করতে হবে। এই কিশোর বয়সেই সবাই হাতে প্রথম স্মার্টফোন পায়, সমাজ মাধ্যম, ভার্চুয়াল দুনিয়া তাদের সামনে উন্মোচিত হয়, সেখানেই ভুয়ো খবরের রাজত্ব। তাই তার আগে থেকেই ভুয়ো খবরের সঙ্গে মোকাবিলা করার ক্ষমতা তৈরির চেষ্টায় নেমেছে অল্ট নিউজ।