মহানায়ক উত্তম কুমারের বাড়ির লক্ষ্মীপুজো: নেপথ্যে অলৌকিক কাহিনিটি জানেন?

October 6, 2025 | 2 min read
Published by: Saikat

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৬:০০: ভবানীপুরের সেই পুরনো চাটুজ্যে বাড়ির লক্ষ্মীপুজো, আজও সেখানে উপচে পড়ে আলো, আড্ডা আর অটুট ঐতিহ্য। এই পুজো শুরু করেছিলেন স্বয়ং মহানায়ক উত্তম কুমার, আর তাঁর সেই উদ্যোগ আজও অব্যাহত রেখেছেন নাতি গৌরব চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু জানেন কি, এই পুজোর শুরুটা একেবারেই সাধারণ ছিল না? এর নেপথ্যে লুকিয়ে আছে এক রোমহর্ষক, অলৌকিক গল্প।

অরুণ কুমার চট্টোপাধ্যায় সেই সময় পোর্ট ট্রাস্টের চাকরি ছেড়ে সদ্য রুপোলি পর্দায় নিজের জায়গা পাকা করছেন। এক বিকেলে, দুর্গাপুজো শেষ হওয়ার পর, ভবানীপুরের পৈতৃক বাড়ির ছাদে হাঁটছিলেন তিনি। হালকা হাওয়া বইছে, মনটা কেমন অস্থির। হঠাৎই তাঁর চোখ আটকে গেল ছাদের কিনারায়, একটি ছোট্ট মেয়ে বসে আছে পা ঝুলিয়ে!

মুহূর্তে তাঁর মনে প্রশ্ন, এই মেয়েটি কে? বাড়িতে তো একমাত্র ভাইঝি রত্না। তবে সে নাকি? ছুটে গিয়ে খবর নিলেন, দেখা গেল রত্না তখন নিজের ঘরে গভীর ঘুমে। উত্তম কুমার আবার দৌড়ে ছাদে ফিরলেন কিন্তু মেয়েটি উধাও!

এর কিছুদিন পরেই ঘটে আরও এক অদ্ভুত ঘটনা। একদিন ভবানীপুরের চাটুজ্যে বাড়িতে এসে হাজির হয় এক লক্ষ্মী পেঁচা। পাড়ার মানুষ অবাক, বাড়ির লোকও হতবুদ্ধি। কিন্তু উত্তম কুমার তখন যেন বুঝে গিয়েছিলেন কিছু, সেই ছাদের ছোট্ট মেয়েটি নাকি স্বয়ং দেবী লক্ষ্মীরই রূপ।

সেই বিশ্বাস থেকেই শুরু হয় চাটুজ্যে বাড়ির লক্ষ্মীপুজো। প্রতিমার মুখ গড়া হয় তাঁর স্ত্রী গৌরী দেবীর মুখের আদলে, যেন গৃহলক্ষ্মীই মূর্ত হয়ে উঠছেন পূজামণ্ডপে। বাইরে থেকে মিষ্টি না এনে বাড়িতেই তৈরি হত সব নৈবেদ্য। ভোগ সাজাতেন স্বয়ং মহানায়ক, অতিথিদের হাতে পরিবেশন করতেন হাসিমুখে।

বছরের সেই সময়টায় ভবানীপুরের চাটুজ্যে বাড়ি হয়ে উঠত টলিপাড়ার মিলনক্ষেত্র। সিনেমা জগতের তারকারা, সুরকার, পরিচালক- সবাই আসতেন মহানায়কের পুজোয়। আলো, আড্ডা, আর এক অদ্ভুত পবিত্রতার মিশেলে পূজোটা হয়ে উঠেছিল এক অনন্য ঐতিহ্য।

আজও সেই ধারা অব্যাহত। গৌরব চট্টোপাধ্যায় একই আন্তরিকতায় পুজোর আয়োজন করেন। তিনি বলেন, “দাদুর বিশ্বাস, এই পুজোই তাঁর সংসার ও সাফল্যের আশীর্বাদ। আমরা শুধু সেই বিশ্বাসটাকেই বাঁচিয়ে রাখছি।”

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen