লক্ষ্মী বনাম সরস্বতী! গণেশ-কার্তিকের বড় দিদি কোন জন?

পুরাণ অনুসারে, সরস্বতী হলেন পার্বতীর কন্যা।

October 7, 2024 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: পুরাণ অনুসারে, সরস্বতী হলেন পার্বতীর কন্যা। বাংলার লোকসাহিত্যে তিনি লক্ষ্মী-গণেশ-কার্তিকের দিদি হিসাবেই পরিচিতা। যদিও তা প্রচলিত ইতিহাস। কোনও শাস্ত্রীয় যুক্তি নেই। পরমব্রহ্ম অর্থাৎ সৃষ্টিকারী রূপের নাম ব্রহ্মা আর ব্রহ্মার নারী শক্তির নাম সরস্বতী। যার অর্থ সরস্বতী হল ব্রহ্মা, আর ব্রহ্মা মানেই পরমব্রহ্ম বা ঈশ্বর, অর্থাৎ সরস্বতীই পরমেশ্বর বা ঈশ্বর।

ঋগ্বেদে বাগদেবী ত্রয়ীমূর্তি – ভূ: ভুব: স্ব:, জ্ঞানময়ীরূপে সর্বত্রব্যাপিনী। জ্যোতিজ্ঞানই ব্রহ্মজ্ঞান, এই জ্যোতিই সরস্বতী। আলোকময়ী, তিনি সর্বশুক্লা। তিন গুণের মধ্যে তিনি সত্ত্বগুণময়ী, অনন্ত জ্ঞানময় ঈশ্বরের বাকশক্তির প্রতীক সারদা। তান্ত্রিক বৌদ্ধ ধর্মেও দেবী সরস্বতীর উল্লেখ পাওয়া যায়। বাঙালিরা মনে করে ছেলেমেয়ে অর্থাৎ লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক আর গণেশদের নিয়েই দেবী আসেন। সে রূপের পুজো হয়।

বৈদিক যুগে যজ্ঞবেদীর নাম ছিল দক্ষ-তনা। দক্ষ-তনা কালে কালে হয়ে উঠল দক্ষতনয়া। যজ্ঞবেদীতে থাকে অগ্নি। মনে করা হয়, এই অগ্নি হলেন মহাদেব। অগ্নিরূপে মহাদেব আর দক্ষতনয়া ক্রমে রূপ পেয়ে শিব ও দুর্গার বিয়ের গল্পে পরিণত হয়েছে। একদা বেদীতে আর আগুন জ্বালানো হত না। ঋষিরা বেদী রক্ষা করে তার চারপাশে ধ্যানে নিমগ্ন হতেন। ঋষিরা আগুন না জ্বালিয়ে একটি মূর্তি নির্মাণ করলেন। মূর্তিকেই তাঁরা অগ্নি ভাবতেন। মূর্তির নাম হল হব্যবাহিনী। এই মূর্তিই ক্রমে দশভুজা দেবীর রূপ নিয়েছে। যজ্ঞবেদীর দশ দিক দেবীর দশ হাত হয়ে ধরা দিয়েছে। বৈদিক যুগের শেষে দক্ষতনা হল উমা, উমা থেকে অম্বিকা হয়ে দুর্গার উৎপত্তি।

কুণ্ডে আরও কয়েকজন দেবতার ছোট ছোট মূর্তি রাখা থাকত। একজন যোদ্ধা, যিনি কুণ্ডকে রক্ষা করতেন। অন্যজন যজ্ঞের সূচনা করে দিতেন, তাঁর চার হাত। একজন ছিলেন যজ্ঞের জ্ঞানদাত্রী, অপরজন যজ্ঞের জন্য অর্থাগমের ব্যবস্থা করতেন। চার দেবমূর্তিই কালক্রমে কার্তিক, গণেশ, সরস্বতী এবং লক্ষ্মীর রূপ পেয়েছে। বৈদিক যুগে যজ্ঞ-বেদীর যে স্বরূপ, তা দশভুজা এবং তাঁর সন্তান-সন্ততি হিসেবে ধরা দিয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen