দোমোহনির দুর্ঘটনা স্থলে উদ্ধারকাজে কাতারে কাতারে মানুষ, ক্ষতিগ্রস্ত চাষের জমি
কৃষিজমি ক্ষয়ক্ষতির কথা স্বীকার করে নিয়েছে ময়নাগুড়ি কৃষিদপ্তর। কৃষি প্রযুক্তি সহায়কদের (কেপিএস) দ্রুত গ্রামে গিয়ে খেত পরিদর্শন করে রিপোর্ট জমা করতে বলা হয়েছে।

ময়নাগুড়ির দক্ষিণ মৌয়ামারীতে রেল দুর্ঘটনার পর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু চাষের জমি। এতে মাথায় হাত পড়েছে গ্রামের কৃষকদের। আলু, রসুন, সর্ষে খেত সহ শীতকালীন সব্জি খেত তছনছ হয়েছে। কারণ শুধু ট্রেনের বগি পড়াই নয়, অ্যাম্বুলেন্স আসায়, কাতারে কাতারে লোকজন জমির উপর দিয়ে যাতায়াত করায় ফসল নষ্ট হয়েছে। এমন অবস্থায় চাষিরা সরকারি সাহায্যের দাবি করছেন। কৃষিজমি ক্ষয়ক্ষতির কথা স্বীকার করে নিয়েছে ময়নাগুড়ি কৃষিদপ্তর। কৃষি প্রযুক্তি সহায়কদের (কেপিএস) দ্রুত গ্রামে গিয়ে খেত পরিদর্শন করে রিপোর্ট জমা করতে বলা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে দোমোহনির দক্ষিণ মৌয়ামারীতে গুয়াহাটিগামী বিকানির এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। আহতদের উদ্ধারে ঘটনাস্থলে আসে ৯০ টিরও বেশি অ্যাম্বুলেন্স, এছাড়া পুলিসের গাড়ি, সহ প্রশাসনিক আধিকারিকদের যানবাহনও। অভিযোগ, ফসল ভর্তি জমির উপরই গাড়ি চলে আসে। এতে জমির ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এছাড়াও কাতারে কাতারে লোকজন এলাকায় জমির উপর দিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছে। অসংখ্য মানুষের পায়ের চাপে জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। কৌতহূলী লোকজন কৃষি জমির উপর দিয়ে হেঁটে গিয়েছে। মোটর বাইক, স্কুটার এমনকী টোটোও চাষের জমির উপর দিয়ে গিয়েছে। এতে প্রচুর সব্জি নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
স্থানীয় এক কৃষক তহিদূল ইসলাম বলেন, আধ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছিলাম। মানুষের পায়ে ফসল নষ্ট হয়েছে। জমিতেই গাড়ি পার্ক করা হয়েছিল। কৃষিকাজ করে সংসার চালাই। এখন কী করব বুঝতে পারছি না। সরকার আমাদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করুক সেটাই চাইছি। আরএক চাষী ফরিদুল ইসলাম বলেন, করলা খেত, বিনস, রসুন, সরিষা খেত তছনছ হয়েছে। এত টাকা খরচ করে চাষ করেছিলাম সব শেষ হয়ে গেল। সরকারি সাহায্য না পেলে মরে যাব।
আলু চাষি কেশব রায় বলেন, আড়াই বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি। অর্ধেক জমির ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছে। চড়া দামে সার কিনতে হয়েছে এবার। জমিতে ৬৫ হাজার টাকা খরচ করেছি। আগামী মাসেই আলু জমি থেকে তোলার সময় ছিল। বিপুল ক্ষতি হয়ে গেল। সরকার আমাদের জন্য কিছু করুক। নাহলে পরিবার নিয়ে অনাহারে কাটাতে হবে। ময়নাগুড়ি ব্লক কৃষি আধিকারিক কৃষ্ণা রায় বলেন, জমির ফসল নষ্টের খবর পেয়েছি। কেপিএসরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের নাম নথিভুক্ত করবেন। আমাদের দপ্তর থেকে যতটা পারি সাহায্য করার চেষ্টা করব। কৃষকদের প্রয়োজনীয় সার, কীটনাশক, বীজ দেওয়া হবে।