SSC- তে ‘দাগি অযোগ্য’ চাকরি প্রাপকদের নামের তালিকায় বাম-বিজেপি ঘনিষ্ঠদের নাম

শনিবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে দাগি অযোগ্য চাকরি প্রাপকদের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)।

September 1, 2025 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ০৯:৩০: শনিবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে দাগি অযোগ্য চাকরি প্রাপকদের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)।এই ‘অযোগ্য’ মানচিত্রে একে একে ভেসে উঠছে বাম-বিজেপি ঘনিষ্ঠদের নাম। দক্ষিণ থেকে উত্তরবঙ্গ, ছবি সর্বত্র অল্পবিস্তর একই। ‘অযোগ্য’ মানচিত্রে একে একে ভেসে উঠছে বর্ধমান, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুর, বা উত্তর ২৪ পরগনা। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ কী? এঁরা কেউ ‘নিয়ম মেনে’ শিক্ষকের চাকরি পাননি। অন্তত সুপ্রিম কোর্ট, সিবিআই এবং এসএসসি সে কথাই বলছে।

যেমন ২০১৬ সালের শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় বেআইনি ভাবে চাকরি পাওয়া দাগিদের তালিকায় উঠে এল বীরভূম জেলা বিজেপির নবনিযুক্ত কোষাধ্যক্ষ সুরজিৎ সরকারের স্ত্রী লক্ষ্মী বিশ্বাসের নাম। তালিকায় তাঁর নাম ও ছবি প্রকাশ্যে আসতেই তা ছড়িয়ে পড়ে সমাজমাধ্যমে। এই নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে প্রবল গুঞ্জন।

আবার বিজেপির রাজ্য নেতা পিন্টু শ্যাম। দুই বর্ধমান ও বীরভূম সাংগঠনিক জেলার যুব মোর্চার ইনচার্জ তিনি। অযোগ্যদের তালিকায় জ্বলজ্বল করছে তাঁরই দাদা সৌরভ শ্যামের নাম। সৌরভবাবু উত্তরবঙ্গের একটি স্কুলে চাকরি করতেন। পিন্টু শ্যাম বলেন, ‘সিবিআই ভালোভাবে তদন্ত করলে সবকিছু স্পষ্ট হয়ে যাবে। এসবই ষড়যন্ত্র।’ এছাড়াও বর্ধমানের ম্যাপে উঠে এসেছেন মৌমিতা কুণ্ডু। তিনি নাকি এক বিজেপি নেতার বউদি। পূর্ব মেদিনীপুর ঢুকলে শোনা যাচ্ছে সৌমেন করের নাম। কে তিনি? ময়নার গোজিনা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান। বরাবরই বিজেপি করেন। পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলা থানার মুণ্ডুমারী ঊষানন্দ বিদ্যাপীঠে অঙ্কের শিক্ষক ছিলেন। ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ ঘিরে সিবিআই তদন্ত চলাকালীন ওই বিজেপি নেতার ওএমআর শিট ভাইরাল হয়েছিল। ৫৫টি এমসিকিউ প্রশ্নের মধ্যে তিনি দাগ কেটেছিলেন মাত্র তিনটিতে। তাতেই অঙ্কের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগপত্র! মুণ্ডুমারী ঊষানন্দ বিদ্যাপীঠের টিচার ইনচার্জ দিলীপ মাইতি বলেন, ‘২০১৬ সালে এসএসসির মাধ্যমে আমাদের স্কুলে তিনজন নিযুক্ত হন। আগেই স্কুলে যোগ্যদের একটা তালিকা এসেছিল। তাতে সৌমেনবাবু বাদে বাকি দু’জনের নাম ছিল।’ সৌমেন বলেন, ‘অযোগ্য তালিকায় নাম আছে কি না দেখিনি। তবে সর্বোচ্চ আদালতের রায় বেরনোর পর স্কুলে যাচ্ছি না।’

উত্তর দিনাজপুরের চাকুলিয়ার বিজেপি নেতা তথা দলের জেলা কমিটির সহ সভাপতি অসীমকুমার মৃধার ভাই অনুপকুমার মৃধার নামও রয়েছে অযোগ্যের তালিকায়। অসীমবাবু ২০১৬ নির্বাচনে চাকুলিয়া কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী ছিলেন। তাঁর ভাই অনুপবাবু ইসলামপুরের ধনতলা হাইস্কুলে ভূগোলের শিক্ষক। ১৮০৬ জনের তালিকায় ভাইয়ের নাম ওঠায় অসীমবাবু বলেন, ‘দোষীরা যে দলেরই হোক, আইন অনুযায়ী তাদের বিচার হবে। এর বেশি কিছু বলব না।’

অযোগ্য’ তালিকায় নাম রয়েছে বনগাঁর একাধিক শিক্ষকেরও। তারই মধ্যে একজন রীতেশ ঘোষ। নদীয়ার একটি স্কুলের শিক্ষক ছিলেন তিনি। সিপিএমের নেতা হিসেবেও এলাকায় পরিচিতি ছিল তাঁর। যদিও রীতেশবাবুর দাবি, এখন আর দলের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ নেই। তিনি বলেন, ‘কী কারণে অযোগ্য, সেটা স্পষ্ট করুক এসএসসি। আমি আদালতে যাব। আদালতের নির্দেশে যে বাগ কমিটি গঠন হয়েছিল, সেটাই এসএসসি মানেনি।’

প্রসঙ্গত, আগামী ৭ এবং ১৪ সেপ্টেম্বর এসএসসির নিয়োগ পরীক্ষা রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কুমার এবং বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মার বেঞ্চের নির্দেশ রয়েছে, ‘দাগি অযোগ্য’ প্রার্থীরা পরীক্ষায় বসতে পারবেন না।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen