বসু পরিবারের ভোলবদল! রেনকোজি থেকে ফেরত আনা হোক নেতাজির চিতাভস্ম, দাবি একাংশের

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর অন্তর্ধান রহস্য ঘিরে ফের নয়া বিতর্ক।

April 26, 2022 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর অন্তর্ধান রহস্য ঘিরে ফের নয়া বিতর্ক। তাইহোকু বিমান দুর্ঘটনায় এই বরেণ্য দেশপ্রেমিকের মৃত্যু হওয়ার কথা এতদিন আগাগোড়া উড়িয়ে দিয়ে এসেছেন বসু পরিবারের একাংশ। এবার তাঁরাই সেই দাবি থেকে সরে এলেন। শুধু তাই নয়, জাপানের রেনকোজি মন্দির থেকে নেতাজির চিতাভস্ম দেশে ফেরাতে চিঠি পাঠালেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। বছর কয়েক আগে কেন্দ্র ও রাজ্যের তরফে প্রকাশিত ‘গোপন ফাইল’ খুঁটিয়ে পরীক্ষা করেই নাকি এই সিদ্ধান্ত! সোমবার একথা জানিয়েছেন বসু পরিবারের ওই অংশের মুখপাত্র তথা সুভাষচন্দ্রের নাতি চন্দ্রকুমার বসু। এমনকী চিঠিতে তিনি চিতাভস্ম দেশে ফিরিয়ে নেতাজির মেয়ে অনিতা পাফকে দিয়ে অন্ত্যেষ্টির ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন। চন্দ্রকুমারের দাবি, বসু পরিবারের সংশ্লিষ্ট সদস্যদের ‘অজ্ঞতা’র কারণে কয়েক যুগ ধরে নানা তথ্য ও যুক্তিতে বিমান দুর্ঘটনা তত্ত্বের বিরোধিতা করা হয়েছে। আচমকা তাঁদের এই ভোলবদলে ক্ষুব্ধ গোটা বাংলা।


কৃষ্ণা বসু বা সুগত বসুর মতো নেতাজির পরিবারের একাংশ বরাবরই বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু তত্ত্বের উপর আস্থা রেখেছে। এনিয়ে চন্দ্রবাবুদের সঙ্গে তাঁদের মনোমালিন্য ছিল চরমে। বিমান দুর্ঘটনার তত্ত্ব বাতিলের দাবিতে এতদিন গলা ফাটানো চন্দ্রকুমারের হঠাৎ ১৮০ ডিগ্রি ডিগবাজি খাওয়ায় স্বাভাবিকভাবে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো তাঁর চিঠির বক্তব্যকে খারিজ করেছেন একাধিক নেতাজি গবেষক। তাঁদের কেউ কেউ আবার এর পিছনে ‘অন্য গন্ধ’ পাচ্ছেন।


চন্দ্রকুমার অবশ্য জানিয়েছেন, ‘সরকারি স্তরে প্রকাশ করা ফাইলগুলি আমরা এতদিন খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করিনি। সম্প্রতি কয়েকজন বিশেষজ্ঞকে নিয়ে ফাইলগুলির সমস্ত নথি ও তথ্য পড়ে দেখি। তাতে দেখা যাচ্ছে, নেতাজির অন্তর্ধান নিয়ে দেশি-বিদেশি পর্যায়ে অন্তত ১১টি তদন্ত হয়েছিল। একমাত্র মুখার্জি কমিশন ছাড়া বাকি সব তদন্ত তাইহোকুতে বিমান দুর্ঘটনার কথা বলেছে। এছাড়া নেতাজির আইএনএ-র প্রশাসনিক শাখা ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্স লিগের করা তদন্তেও বিমান দুর্ঘটনার কথা বলা হয়েছে। মুখার্জি কমিশন আবার বলতে পারেনি নেতাজির কবে, কোথায়, কীভাবে মৃত্যু হয়েছিল। আসলে আমাদের পূর্বপুরুষ বা আমরা অজ্ঞতার কারণে কেবল আবেগতাড়িত হয়ে একটা ভ্রান্ত ধারণার পিছনে ছুটেছি। সকলের সংশয় দূর করতে রেনকোজি মন্দিরে রক্ষিত চিতাভস্মের ডিএনএ টেস্ট করাক সরকার।’


চন্দ্রবাবুদের এভাবে সুর পাল্টানো মেনে নিতে পারছে না আপামর বাঙালি। সরব হয়েছেন ওড়িশার প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী নন্দিনী শতপথীর নাতি সুপর্ণ সতপথী এবং নেতাজি গবেষক ডঃ জয়ন্ত চৌধুরীও। তাঁদের কথায়, তাইহোকুতে বিমান দুর্ঘটনার কোনও তথ্য জানা নেই বলে মুখার্জি কমিশনকে জানিয়েছে তাইওয়ান সরকার। এছাড়া নেতাজির মৃত্যুর একাধিক শংসাপত্র বিভিন্ন সময়ে বাজারে এসেছে। এমনকী, তদন্ত কমিশনে মৃত্যুর দিন বা সময় নিয়ে ভিন্ন তথ্য দিয়েছেন একাধিক সাক্ষী। জাপান, ইংল্যান্ড, আমেরিকা, রাশিয়া, জার্মানির মতো নেতাজির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কোনও বড় রাষ্ট্র কেন এতদিন এব্যাপারে ভারতকে কোনও নির্দিষ্ট তথ্য জানায়নি, সেটাও যথেষ্ট রহস্যের। ফলে সংশয় থাকছেই।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen