লজিস্টিক্সকে শিল্পের মর্যাদা, তাজপুর-রঘুনাথপুর আর্থিক করিডর: বড় পদক্ষেপ রাজ্যের

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১১:০০: পূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার পশ্চিমবঙ্গ। তাই এই বঙ্গভূমিকে আরও এগিয়ে নিতে বড় সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার নবান্নে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ঘোষণা করেন, তাজপুর-ডানকুনি-রঘুনাথপুর আর্থিক করিডর তৈরির জন্য পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিগমকে (WBIDC) ২০০ একর জমি দেওয়া হবে।
আগেই শিল্পোন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে অমৃতসর-ডানকুনি শিল্প করিডরের ধাঁচে রাজ্যে ছয়টি আর্থিক করিডর তৈরির পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এর মধ্যে রয়েছে, রঘুনাথপুর-তাজপুর, ডানকুনি-কল্যাণী, ডানকুনি-ঝাড়গ্রাম, ডানকুনি-কোচবিহার, জোকা-গুরুভি, খড়্গপুর-মোরগ্রাম।
এবার তাজপুর-রঘুনাথপুর করিডর তৈরির জন্য জমি বরাদ্দ হওয়ায় প্রকল্প বাস্তবায়নের পথে আরও এক ধাপ এগোল রাজ্য। শুধু জমি নয়, বৈঠকে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়েছে। রাজ্যের সমস্ত লজিস্টিক ব্যবসাকে শিল্পের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। সরকারের মতে, এর ফলে ই-কমার্স ও পরিবহণ ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বাড়বে, একই সঙ্গে নতুন কর্মসংস্থানের পথও খুলবে। ইতিমধ্যেই নদীয়ার হরিণঘাটায় কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে লজিস্টিক হাব গড়েছে ফ্লিপকার্ট। অন্যান্য ই-কমার্স সংস্থাও রাজ্যে একইভাবে ব্যবসা বাড়িয়েছে। এবার সরকারিভাবে শিল্পের তকমা দেওয়ায় এই খাতে আরও দ্রুত প্রসার ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এদিনের বৈঠকে নিউটাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (NKDA)-র ১৫টি শূন্যপদ পূরণের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনিক স্তরে এই নিয়োগকে নগরায়ণ ও অবকাঠামো উন্নয়নের প্রক্রিয়ায় সহায়ক বলে মনে করা হচ্ছে।
সূত্রের খবর, পশ্চিম বর্ধমানের হিরাপুর থানার কুলাইপুর, পুরুষোত্তমপুর ও চাপরডি মৌজার মোট ১৯৩.২৯ একর লিজ জমি ফ্রি হোল্ড করে পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিগমকে দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। একইসঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে চলা বারুইপুর টাউনশিপ ও উত্তম সিটির জমি-সংক্রান্ত মামলাগুলি আদালতের বাইরে মীমাংসার উদ্যোগ নিয়েও আলোচনা হয়। এছাড়া দক্ষিণ ২৪ পরগনার নোনাডাঙায় ৩.৮ একর জমির রেকর্ড সংশোধন এবং বারাখোলায় ৩.১৬ একর হাসপাতালের লিজ জমি ৩০ বছরের জন্য নবায়নের প্রস্তাবেও সায় দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
পুজো-পর্ব মিটলেই রাজ্যে একটি শিল্প সম্মেলন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে। তার আগে জমি বরাদ্দ, লজিস্টিকস খাতে মর্যাদা বৃদ্ধি ও প্রশাসনিক নিয়োগ-এই তিন সিদ্ধান্তকে শিল্পায়নের দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে নবান্ন (Nabanna)। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর ফলে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে এবং বড় আকারের বিনিয়োগের সম্ভাবনাও উন্মুক্ত হবে।