আজ মদনচতুর্দশী, জানেন মদনদেব কে?

এরপর স্বামীর জীবন ফিরে পেতে কামদেব পত্নী রতি শিবের কাছে প্রার্থনা করেন। তারপর কামদেবের পুনর্জন্ম হয়।

April 11, 2025 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: আজ মদনচতুর্দশী। উত্তরবঙ্গের রাজবংশী সমাজে প্রচলিত বহু পুজো পার্বনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মদনকামের পুজো বা বাঁশ পুজো। কোচবিহার জেলার বিভিন্ন স্থানে বিশেষত রাজবংশী মানুষের বাড়িতে বাড়িতে বাঁশ পুজো চলে। পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, সতীর দেহ ত্যাগের পর শোকাতুর শিব অসমের নীলাচল পাহাড়ে ধ্যানে মগ্ন হন, তখন কামদেব মহাদেবের হৃদয়ে কামের উদ্রেক করতে গেলে শিবের ত্রিনয়ন থেকে অগ্নি নির্গত হয়ে কামদেব ভস্মীভূত হয়। এরপর স্বামীর জীবন ফিরে পেতে কামদেব পত্নী রতি শিবের কাছে প্রার্থনা করেন। তারপর কামদেবের পুনর্জন্ম হয়। সে স্থানের নাম হয় কামরূপ।

মদন কামের পুজো হয় বাঁশের প্রতীকে। সাধারণত চৈত্র বা বৈশাখ মাসের মদন চতুর্দশী তিথিতে মদনদেবের বা বাঁশদেবের পুজো শুরু হয়।

বলা হয়,


“ত্রয়োদশীতে বাঁশত কাপড় চতুর্দশীতূ হোম।
পূর্ণিমাতে বাড়ি বাড়ি বেড়ায় মদনকাম।”


ত্রয়োদশীতেই ভক্তরা বাঁশ কেটে আগুনে সেঁকে সোজা করে নেয়। এরপর বাঁশগুলিকে লাল শালুক কাপড়ে জড়িয়ে মাথায় চঙর (চঙর) বেঁধে তুলসী তলায় প্রথিত করা হয়। পর দিন অর্থাৎ চতুর্দশীতে ব্রাহ্মণ এসে হোম যজ্ঞ করে মদন দেবের পুজো পাঠ করা হয়। গ্রামে গ্রামে মদনদেবের ভক্তরা মাগন গান করে দক্ষিণা তোলে। বাদ্যযন্ত্র সহযোগে নাচ গানে মদনদেবের মাহাত্ম্য প্রচারিত হয়। সাধারণত আতপচাল, দুধ, চিনি, আটা দিয়ে তৈরি বাঁশের নাড়ু এই পুজো প্রধান প্রসাদ।

পুজোকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্থানে প্রতিযোগিতা আসর জমে। যেমন বাঁশর দৈর্ঘ্য, বাঁশের দৌড় প্রভৃতির উপর খেলা খুবই জনপ্রিয়। উত্তরবঙ্গ, অসমের মতো বিস্তির্ণ এলাকাজুড়ে অতি প্রাচীন কাল থেকেই বাঁশ গাছ বিস্তার লাভ করে আসছে। প্রাচীন কাল থেকেই বাঁশ মানুষের অতি প্রয়োজনীয় গাছ যা মানুষের গৃহ নির্মাণ থেকে গৃহস্থালী জিনিস পত্র সমস্ত কিছুতে ব্যবহৃত হত। সেই বাঁশকে প্রতীক হিসাবে পুজো করা হয়।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen