টাকার রেকর্ড পতন, দোসর মূল্যবৃদ্ধি! আঁধারে দেশের অর্থনীতি

আমদানির খরচ দিন দিন বাড়ছে, ফলে বাণিজ্য ঘাটতি পর্বতসম হয়ে উঠেছে।

July 15, 2022 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

মোদী সরকারের ভ্রান্ত আর্থিকনীতি আর সেই সঙ্গে কোভিডের ধাক্কায় থমকে গিয়েছে ভারতের অর্থনীতি। বেকারত্ব, মুদ্রাস্ফীতি আর সেই সঙ্গে মাত্রাতিরিক্ত মূল্য বৃদ্ধির দৌলতে নাজেহাল সাধারণ মানুষ। খুচরোর মতোই পাইকারি বাজারের মূল্যবৃদ্ধিও চাপ বাড়াচ্ছে। সংখ্যাতত্ত্বের হিসেবে তা কমলেও জিনিসের দাম কমছে না।

১৪ জুলাই কেন্দ্রের তরফে প্রকাশিত হিসেব অনুযায়ী, টানা তিন মাস যাবৎ দেশের পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির হার ১৫.১৮ শতাংশ। বিগত ১৫ মাস ধরে পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির পরিমাণ ১০ শতাংশের বেশি। খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ১৪ শতাংশের গণ্ডি ছাড়িয়েছে। সবজির মূল্যবৃদ্ধি ৫৭ শতাংশ পেরিয়েছে। পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি চড়তে থাকার কারণেই শাক-সবজি, আলু, ফলের মতো খাদ্যপণ্যের দর মাত্রা ছাড়িয়েছে। এখনও ৭ শতাংশের বেশি খুচরোর বাজারের মূল্যবৃদ্ধির হার ৭ শতাংশ। খুচরো বাজারের মূল্যবৃদ্ধির হার ১৭.৩৭ শতাংশ।

আমদানির খরচ দিন দিন বাড়ছে, ফলে বাণিজ্য ঘাটতি পর্বতসম হয়ে উঠেছে। পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, জুন মাসে রেকর্ড গড়ে দেশের বাণিজ্য ঘাটতি ২৬১৮ কোটি ডলার হয়েছে। এক বছর আগেও যার পরিমাণ ছিল ৯৬০ কোটি। ​আর্থিক বৃদ্ধি ধাক্কা খাওয়ায় দেশের রপ্তানি বাণিজ্য ধাক্কা খাবে। আমদানি খরচ বাড়ায় দেশের বিদেশি মুদ্রা লেনদেন ঘাটতি হয়েছে। মোদী সরকারের আত্মনির্ভর ভারতের প্রচারে দেশ ক্রমশ আমদানি নির্ভর হয়ে উঠছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ভারতের বিদেশি মুদ্রার ভান্ডারে ইতিমধ্যেই টান পড়তে শুরু হয়েছে।

গোদের উপর বিষফোঁড়া হল টাকার দরের রেকর্ড পতন। ১৪ জুলাই এক ডলারের মূল্য ৮০ টাকা ছুঁয়েছে। টাকার দর আরও পড়তে পারে। আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের ব্যারেল প্রতি দর কমে ৯৭ ডলারে পৌঁছলেও আমজনতা তার সুফল পাচ্ছে না। ফলে ভারতে রান্নার গ্যাস থেকে শুরু করে পেট্রল-ডিজেলের দাম কমার কোন সম্ভাবনাই নেই। অপরিশোধিত তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস খাতে ৭৭.২৯%, জ্বালানি এবং বিদ্যুতে ৪০.৩৮% মূল্যবৃদ্ধির বাড়তি বোঝা রয়েছে।

​ইউপিএ আমলে টাকার মূল্যের পতন নিয়ে, সরকারকে নিত্যদিন আক্রমণ করত বিজেপি। এবারে বিজেপির আমলে পরিস্থিতি আরও খারাপ, বিরোধীরা মোদী সরকারকে তীব্র আক্রমণ করছেন। খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার বাড়লে সাধারণ মানুষ সরাসরি বিপদের সম্মুখীন হন। মূল্যবৃদ্ধির জেরে পকেটে টান পড়ে। আর দেশে একই সঙ্গে পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির জোড়া ফলার আক্রমণে সাধারণ মানুষ একেবারেই খাদের কিনারে এসে দাঁড়িয়েছে। ক্রয় ক্ষমতা দেশের অধিকাংশ মানুষের নাগালের বাইরে বেরিয়ে গিয়েছে।

পাইকারি বাজার দর বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে, পণ্য উৎপাদনকারীরা ধাক্কা খান। পণ্যের দামে বোঝা চাপে। সেই বোঝা খুচরো বাজারে ক্রেতার উপরে বসে। আদপে গোটা শৃঙ্খলটাই ভেঙে পড়ে। যার ফল অর্থনৈতিক দৈনদশা, সেই আঁধারের ক্রমশ ডুবে যাচ্ছে দেশ।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen