ভিনরাজ্যে গিয়ে আর ফেরা হলো না, হায়দ্রাবাদে মর্মান্তিক মৃত্যু মালদহের পরিযায়ী শ্রমিকের

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২০:১৫: পেটের তাগিদে ভিনরাজ্যে পাড়ি দিয়েছিলেন যুবক। স্বপ্ন ছিল উপার্জনের টাকা দিয়ে স্বচ্ছল হবে সংসার। কিন্তু সেই স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল। ভিনরাজ্যে কাজ করতে গিয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু হলো মালদহের (Maldah) এক পরিযায়ী শ্রমিকের (Migrant worker)। হায়দ্রাবাদ (Hyderabad) থেকে শুক্রবার রাতে যুবকের কফিনবন্দি দেহ গ্রামে ফিরতেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা এলাকায়।
মৃত ওই পরিযায়ী শ্রমিকের নাম জামিরুল শেখ (২৫)। তাঁর বাড়ি পুরাতন মালদহের মঙ্গলবাড়ি অঞ্চলের বাঁশহাট্টা এলাকায়। স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সংসারের অভাব মেটাতে গত দেড় মাস আগেই হায়দ্রাবাদে নির্মাণ শ্রমিকের কাজে গিয়েছিলেন জামিরুল। সেখানে একটি টাওয়ার নির্মাণের কাজ করছিলেন তিনি।
গত বুধবার সেই টাওয়ারে কাজ চলাকালীনই ঘটে বিপত্তি। কাজ করতে করতে আচমকাই উপর থেকে নিচে পড়ে যান জামিরুল। সহকর্মীরা তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
শুক্রবার রাতে হায়দ্রাবাদ থেকে জামিরুলের নিথর দেহ গ্রামে এসে পৌঁছয়। যে ঠিকাদার সংস্থার অধীনে তিনি কাজে গিয়েছিলেন, তাঁদের উদ্যোগেই দেহ ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয়। বাড়ির ছেলের কফিনবন্দি দেহ দেখেই কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। গোটা গ্রামে নেমে আসে বিষাদের ছায়া।
পারিবারিক সূত্রে খবর, জামিরুলই ছিলেন সংসারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য। বাড়িতে তাঁর বৃদ্ধা মা, স্ত্রী ছাড়াও রয়েছে তিন নাবালক সন্তান। জামিরুলের এই অকালমৃত্যুতে কার্যত অথৈ জলে পড়েছে গোটা পরিবার। এখন কীভাবে তিন সন্তান ও বৃদ্ধা শাশুড়িকে নিয়ে সংসার চালাবেন, তা ভেবেই দিশেহারা মৃতের স্ত্রী। পরিবারের একমাত্র উপাজর্নের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম অনিশ্চয়তার মুখে তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে সরকার যাতে তাঁদের পাশে দাঁড়ায় এবং আর্থিক সাহায্যের ব্যবস্থা করে, সেই কাতর আবেদন জানিয়েছে অসহায় পরিবারটি।