বাড়ি বাড়ি যাচাই থেকে ‘হেল্প ডেস্ক’, ভোটার তালিকা নিয়ে BLA-দের একগুচ্ছ নির্দেশ দিলেন মমতা
Authored By:

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৫:২১: সোমবার জমজমাট নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম। এদিনের বিশেষ সভাতেই দলের বিএলএ (BLA) ১ এবং ২-দের একগুচ্ছ দায়িত্ব বুঝিয়ে দিলেন নেত্রী। ভোটার তালিকার নিবিড় পরিমার্জনের দ্বিতীয় পর্যায়ে কাজের চাপ বাড়ল তৃণমূলের বুথ স্তরের কর্মীদের। ভোটার যাচাই থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষকে সহযোগিতা- সব ক্ষেত্রেই বিএলএ-দের ‘কান খাড়া’ রাখার নির্দেশ দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
এদিন বিএলএ-দের ঠিক কী কী দায়িত্ব দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো?
১) মমতার স্পষ্ট নির্দেশ, বিএলএ-দের বাড়ি বাড়ি ঘুরতে হবে। জেলাশাসক, মহকুমা শাসক এবং ওয়েবসাইটে প্রকাশিত পোলিং স্টেশন ভিত্তিক ‘এএসডি’ (ASD) তালিকা ধরে যাচাই করতে হবে যে, ওই ভোটাররা বাস্তবে সেখানে রয়েছেন কি না। যদি কোনও ‘বাদ পড়া’ ভোটারের সন্ধান পাওয়া যায়, তবে তাঁদের নাম নথিভুক্ত করতে ফর্ম ৬ এবং অ্য়ানেক্সচার ৪ ইআরও-দের কাছে জমা দেওয়ার দায়িত্ব বিএলএ-দেরই নিতে হবে।
২) যেসব ভোটারকে বিএলও-রা ‘আনম্য়াপড’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন, তাঁরা শুনানির নোটিস পেয়েছেন কি না এবং শুনানিতে উপস্থিত থাকছেন কি না- তা নিশ্চিত করতে হবে বিএলএ-দের। এই ভোটারদের ১১টি নির্দিষ্ট নথির মধ্যে যে কোনও একটি সংগ্রহে রাখতে বলতে হবে। যাঁদের কাছে কোনও নথি নেই, তাঁদের স্থায়ী বাসিন্দা শংসাপত্র বা জাতিগত শংসাপত্র (যদি যোগ্য হন) পাওয়ার জন্য দ্রুত আবেদনের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। পাশাপাশি, সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে বিএলএ-২ দের ‘May I help desk’ চালু করার কথাও বলেন তিনি।
৩) বিএলও অ্যাপে ‘লজিক্যাল ডিসক্রিপেন্সি’ বা তথ্যের অমিল থাকা ভোটাররা যাতে শুনানিতে সঠিক নথি জমা দিতে পারেন এবং কোনও হয়রানির শিকার না হন, তা দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে বুথে বুথে ক্যাম্প করার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। এই কাজের দায়িত্ব মূলত বিধায়ক ও কাউন্সিলরদের। এদিন কাউন্সিলরদের একাংশকে ভর্ৎসনা করে মমতা বলেন, ‘‘অনেক কাউন্সিলর কাজ করেন না। শুধু দলের বদনাম করেন। আমি তাঁদের পরিবর্তে দরকার হলে ব্লক প্রেসিডেন্ট তৈরি করে দেব।’’
আরও পড়ুন: ‘বাংলাকে যাঁরা জব্দ করতে চাইছে, তাঁদের স্তব্ধ করব’, নেতাজি ইনডোর থেকে BJP-কে তোপ মমতার
৪) নতুন ভোটার (১৮ বছর উর্ধ্ব) বা ফর্ম ৬ (Form 6) জমাকারীদের তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ে জোর দিয়েছেন নেত্রী। তাঁর অভিযোগ, ‘‘আগের তালিকায় অনেক বাইরের নাম ঢোকানো হয়েছে। একটা বাঙালি, ১০টা গুজরাটি। এখন আবার এআই (AI) দিয়ে নাম ঢোকানো হচ্ছে।’’ তাই এই বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
৫) ফর্ম ৮-এর মাধ্যমে যাঁরা নাম তুলছেন, তাঁরা কোথা থেকে আসছেন তা নিশ্চিত হতে হবে। পরিযায়ী শ্রমিকদের (Migrant worker) নাম ভোটার তালিকায় (Voter list) তোলার ব্যাপারে অভয় দিয়ে মমতা বলেন, ‘‘নিজেদের ভবিষ্যতের স্বার্থে তাঁদের আসতে বলুন। যদি কেউ বলে ওখান থেকে গেলে আর চাকরি দেবে না, তা হলে কাজ দেওয়ার গ্যারান্টি আমাদের।’’
৬) সর্বোপরি, গোটা এসআইআর (SIR) প্রক্রিয়ার ওপর নজর রাখা এবং প্রয়োজনে দলের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়ে এদিনের সভা শেষ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আবেদনকারীদের সর্বদা ‘হাসি মুখে’ সাহায্য করার কথাও মনে করিয়ে দেন তিনি।