মমতার সরকারে রাজ্যে নির্মাণ শিল্পে জোয়ার, ইঙ্গিত পরিসংখ্যানে
তথ্য বলছে, তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরে তা বেড়ে হয়েছে ৩২০০ কোটি টাকারও বেশি। ফলে প্রত্যাশিতভাবেই নির্মাণ শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা খাতে রাজ্য সরকার অনেক বেশি ব্যয় করতে সক্ষম হয়েছে।

বাম জমানার তুলনায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে রাজ্যে নির্মাণ শিল্পে কার্যত জোয়ার এসেছে। সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে এক সরকারি পরিসংখ্যান। শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা খাতে বামফ্রন্ট সরকার এই শিল্পের জন্য যে সেস ধার্য করেছিল, তা আদায়ের পরিসংখ্যানে চোখ বোলালেই সেই প্রমাণ মিলছে। বাম আমলের শেষ পাঁচ বছরে এই সেস থেকে আদায় হয়েছিল প্রায় ২৫০ কোটি টাকা। তথ্য বলছে, তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরে তা বেড়ে হয়েছে ৩২০০ কোটি টাকারও বেশি। ফলে প্রত্যাশিতভাবেই নির্মাণ শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা খাতে রাজ্য সরকার অনেক বেশি ব্যয় করতে সক্ষম হয়েছে।
বাম আমলের শেষ লগ্নে কেন্দ্রীয় আইন অনুযায়ী নির্মাণ শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা খাতে সাহায্যের জন্য রাজ্যের শ্রমদপ্তরের অধীনে একটি পরিচালন বোর্ড গঠন করা হয়। ওই আইনে মেনে ১০ লক্ষ টাকার উপর যে কোনও নির্মাণের ক্ষেত্রে মোট প্রকল্প খরচের ১ শতাংশ সেস ধার্য করা হয়। যা জমা পড়ার কথা বোর্ডের তহবিলে। ব্যক্তিগত বা সংস্থাগতভাবে এই টাকা স্থানীয় পুরসভা, পঞ্চায়েত বা বিল্ডিং প্ল্যান অনুমোদনকারী এজেন্সির কাছে জমা দিতে হয়। তারাই ওই টাকা জমা করে নির্দিষ্ট তহবিলে। ২০০৬-’০৭ আর্থিক বছর থেকে এই সেস আদায় শুরু হয়।
সদ্য অনুষ্ঠিত বোর্ডের বৈঠকে যে আয়-ব্যয়ের হিসেব পেশ করা হয়েছে, তার নথিতেই সেস আদায়ের ওই ছবি ধরা পড়েছে। হিসেব বলছে, ২০০৬-’০৭ সাল থেকে শুরু হয়ে বাম জমানার শেষপর্ব পর্যন্ত রাজ্যে এই খাতে জমা পড়েছিল ২৪৯ কোটি ২৯ লক্ষ ৪২ হাজার ৬১০ টাকা। রাজনৈতিক পালাবদল হয় ২০১১ সালে। তারপর থেকে গত সাড়ে ১০ বছরে এই খাতে জমা পড়েছে তার প্রায় ১৩ গুণ টাকা। অর্থাৎ এর পরিমাণ ৩ হাজার ২০৩ কোটি ৩ লক্ষ ৬৫ হাজার ৯৯৬ কোটি টাকা। আধিকারিকরা বলছেন, এই জমানায় সেস আদায়ের জন্য পুরসভা, জেলা পরিষদ, জেলাশাসকের দপ্তর এবং অন্যান্য সরকারি এজেন্সিকে নিয়মিত চিঠি দিয়ে চাপে রাখা হয়। পাশাপাশি এই আমলে আবাসন শিল্পের পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের সংখ্যাও অনেক বেড়েছে। আদায়কৃত সেসের অঙ্কই সে কথা প্রমাণ করছে। ফলে সামগ্রিকভাবে এই ক্ষেত্রে কাজের পরিধিও বেড়েছে। বেড়েছে কর্মসংস্থান।
দপ্তর সূত্রের খবর, এ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত বিনামূল্যে সামাজিক সুরক্ষা যোজনায় মোট ৪১ লক্ষ ৩০ হাজার ৫০৩ জন নির্মাণ শ্রমিকের নাম নথিভুক্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত নির্মাণ শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা ও পেনশন খাতে ১২০০ কোটি টাকারও বেশি ব্যয় করেছে রাজ্য।