পরিকল্পনা করে মুর্শিদাবাদের ঘটনা ঘটানো হয়েছে, বললেন মুখ্যমন্ত্রী
অশান্তির পরিস্থিতির মধ্যেই জেলা পরিদর্শনে এসেছিল জাতীয় মানবাধিকার, মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরা।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ওয়াকফ ইস্যুতে জেলায় তুমুল বিক্ষোভ হয়েছিল। সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা থেকে শুরু করে পুলিশের গাড়িতে হামলা, ঘর-বাড়ি ভাঙচুর, খুন… সব ঘটনার সাক্ষী থেকেছিল মুর্শিদাবাদ। অশান্তির পরিস্থিতির মধ্যেই জেলা পরিদর্শনে এসেছিল জাতীয় মানবাধিকার, মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরা। গেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও। কিন্তু সেই সময়ে মুর্শিদাবাদে যাননি মমতা। সোমবার মুর্শিদাবাদে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল তুললেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অন্যান্য একাধিক রাজ্যে নানা ঘটনা ঘটে। মণিপুর, রাজস্থান, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, ওড়িশায় হিংসার ঘটনা ঘটেছে। কেন্দ্রের কোনও প্রতিনিধি যায়নি। তবে বাংলায় কিছু হলেই কেন একদিনের মধ্যেই সব চলে আসে, প্রশ্ন তাঁর। এই পরিপ্রেক্ষিতেই মমতার সাফ অভিযোগ, ”একেবার পরিকল্পনা করে এই ঘটনা ঘটনা হয়েছে। ধর্মের নামে কিছু বহিরাগতরা ভুল কথা ছড়িয়েছে। আর কিছু লোক প্ররোচিত হওয়ার ফলে এক গোষ্ঠীর সঙ্গে অন্য গোষ্ঠীর গন্ডগোল লেগেছে।” যারা এই হিংসার ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাঁদের উদ্দেশে মমতার কড়া হুঁশিয়ারি, ”বাংলার মানুষ এসব বরদাস্ত করবে না।”
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার ঘটনায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের সেই তালিকায় পশ্চিমবঙ্গের একাধিক বাসিন্দার নাম ছিল। পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পর দিল্লিতে সর্বদল বৈঠক ডেকেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। সেখানে তৃণমূলের তরফে ছিলেন সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বৈঠকে জানিয়ে এসেছিলেন, জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে তৃণমূল কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করবে। এর আগে পহেলগাঁওয়ের ঘটনা নিয়ে দলের নেতামন্ত্রীদের ‘আলটপকা’ মন্তব্য না করার নির্দেশও দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার মুর্শিদাবাদে যাওয়ার জন্য কপ্টারে চড়ার আগে এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে মমতা বলেন, ‘‘দেশে এখন যা চলছে, জাতীয় নিরাপত্তার যে ব্যাপার, আমরা বলেই দিয়েছি, তাতে আমাদের দল কেন্দ্রীয় সরকারের পাশে থাকবে। কখনও ডিভাইড অ্যান্ড রুল করব না।’’ অর্থাৎ, পহেলগাঁওয়ের ঘটনার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে রাজনীতি করতে চায় না তৃণমূল।
এদিন মুর্শিদাবাদ নেবেই মুখ্যসচিব ও জেলাশাসককে সঙ্গে নিয়ে একাধিক সরকারি দপ্তরে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কথা বলেন সেখানকার কর্মীদের সঙ্গে। জানতে চান ঠিক মতো কাজ হচ্ছে না। প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার তিনি সামশেরগঞ্জের ধুলিয়ানে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াবেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন। জানবেন সমস্যা। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই আর্থিক সাহায্য ও ক্ষতিপূরণের কাজ শুরু করা হয়েছে। প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে সেসব বিষয়ে কথা বলবেন মমতা। এরপর সুতির ছাবঘাটি ময়দানে একটি জনসভায় উপভোক্তাদের পরিষেবা প্রদান কর্মসূচি রয়েছে।