২৬শের ভোটের আগেই জোড়া প্রকল্প বাস্তবায়নে তৎপর নবান্ন, দরপত্রের জন্য চালু হল পৃথক পোর্টাল

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৬:৫০: সামনেই ছাব্বিশের নির্বাচন। তার আগে রাজ্যের উন্নয়নমূলক কাজগুলিকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করতে কোমর বেঁধে নামল রাজ্য সরকার। বিশেষত গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে নেওয়া ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ এবং ‘পথশ্রী’, এই দুই প্রকল্পের বাস্তবায়নে যাতে কোনও বিলম্ব না হয়, তার জন্য একটি পৃথক পোর্টাল তৈরি করল নবান্ন (Nabanna)। বৃহস্পতিবার থেকেই এই নতুন পোর্টালটি চালু হয়েছে বলে অর্থ দপ্তরসূত্রে খবর। জেলা প্রশাসনগুলিকে ইতিমধ্যেই বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসনিক মহলের খবর, ভোটের আগেই জনমানসে উন্নয়নের সুফল পৌঁছে দিতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সেই লক্ষ্যেই এই বিশেষ পদক্ষেপ। পুজোর আগে থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত প্রায় আড়াই মাস ধরে রাজ্যজুড়ে চলা শিবিরে বুথ স্তরে সাধারণ মানুষের অভাব-অভিযোগ শুনেছিল প্রশাসন। সেখানে মূলত পানীয় জল, রাস্তার হাল, পথবাতি এবং ছোটখাটো সেতু সংস্কারের মতো স্থানীয় সমস্যার কথা উঠে আসে। এই সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য ইতিমধ্যেই বুথপিছু ১০ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ করেছে নবান্ন। রাজ্য সরকার চাইছে, নির্বাচনী নির্ঘণ্ট প্রকাশের আগেই এই কাজগুলি শেষ করে ফেলতে।
অন্যদিকে, গ্রামসড়ক যোজনার বকেয়া টাকা নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের দীর্ঘদিনের টানাপড়েন চলছে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের মুখাপেক্ষী না হয়ে রাজ্য নিজের কোষাগারের অর্থেই ‘পথশ্রী’ প্রকল্পের মাধ্যমে রাস্তা তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ভোটের আগে নতুন রাস্তা তৈরি ও পুরনো রাস্তা সংস্কারের কাজকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই নতুন পোর্টালে ‘পথশ্রী’ প্রকল্পের দরপত্র বা টেন্ডার প্রক্রিয়াও সম্পন্ন করা হবে।
শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্বের ধারণা, কর্মসংস্থানের মতো ইস্যুর পাশাপাশি সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে রাস্তা, জল ও আলোর মতো মৌলিক পরিষেবাগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘ মেয়াদের সরকারের বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া স্বাভাবিক ‘প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা’ বা অ্যান্টি-ইনকাম্বেন্সি রুখতে স্থানীয় স্তরের এই উন্নয়নই তুরুপের তাস হতে পারে। তাই নবান্নের নির্দেশিকায় স্পষ্ট ইঙ্গিত রয়েছে যে, এই দুটি প্রকল্পের কাজ যাতে মানুষ চাক্ষুষ করতে পারেন, তার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবারই নবান্নে সরকারের কাজের খতিয়ান ‘উন্নয়নের পাঁচালি’ পেশ করার সময় প্রশাসনিক কর্তাদের কড়া বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি বা অন্যান্য কাজের দোহাই দিয়ে সাধারণ মানুষের পরিষেবামূলক কাজ ফেলে রাখা যাবে না। জেলায় জেলায় আবাস, সড়ক, জলসংযোগ ও স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর কাজ যাতে শ্লথ না হয়, তার জন্য ১৩ জন পর্যবেক্ষকের একটি বিশেষ বাহিনী তৈরি করে দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, গোটা প্রক্রিয়ার ওপর নজর রাখতে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে (Manoj Pant) একটি কেন্দ্রীয় ‘মনিটরিং টিম’ গঠনের নির্দেশও দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই নির্দেশের ঠিক পরেই জোড়া প্রকল্পের জন্য পৃথক পোর্টাল চালুর সিদ্ধান্ত প্রশাসনের তৎপরতাকেই নির্দেশ করছে।
: