আত্মনির্ভর ভারত: জোরাবরের সঙ্গে নাগ এমকে-২ রণকৌশল বদলে দিচ্ছে সীমান্তের চিত্র

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৭:০০: ভারতের প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিতে এক বড় মাইলফলক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে জোরাবর লাইট ট্যাংক। ২০২৪ সালের শুরুতে ডিআরডিও এবং লারসেন অ্যান্ড টুব্রো যৌথভাবে ভারতের প্রথম স্বদেশীভাবে তৈরি এই হালকা ট্যাংকটি উন্মোচন করে। বিশেষভাবে পাহাড়ি এলাকা, মরুভূমি এবং নদীমুখী অঞ্চলের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে এই ট্যাংক, যেখানে সাধারণ ট্যাংকগুলোর চলাচল সীমিত। মাত্র ২৫ টন ওজনের জোরাবর, দ্রুত মোতায়েনযোগ্য এবং সীমান্ত অঞ্চলে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কৌশলগত সক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক।
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরেই ডিআরডিও প্রথম ধাপের ফিল্ড ফায়ারিং ট্রায়াল সম্পন্ন করেছিল। এই ট্রায়ালে ট্যাংকের গতি, আকার এবং লক্ষ্যভেদ ক্ষমতা যাচাই করা হয়। কিন্তু আসল পরীক্ষার দিন ছিল ১৭ অক্টোবর ২০২৫, যখন জোরাবর থেকে নাগ এমকে-২ এন্টি-ট্যাংক গাইডেড মিসাইল সফলভাবে ছোড়া হয়। “টপ অ্যাটাক” মোডে এই মিসাইল লক্ষ্যবস্তুকে অত্যন্ত নিখুঁতভাবে আঘাত করে। পরিসরের, সঠিকতা, স্ট্রাইক ভেলোসিটি এবং গাইডেন্স স্থিতিশীলতা—সবকটি মানক এই পরীক্ষায় পূর্ণ হয়েছে।
এই সাফল্য জোরাবরকে নতুন মাত্রায় নিয়ে এসেছে। নাগ এমকে-২ যুক্ত হওয়ায় এখন ট্যাংকটি দীর্ঘ পরিসরে শত্রু বর্মবাহিনীকে আঘাত করতে সক্ষম, এবং “ফায়ার-অ্যান্ড-ফরগেট” প্রযুক্তি ব্যবহার করে দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেওয়া সম্ভব। সীমান্ত পরিস্থিতিতে চীনের টাইপ-১৫ লাইট ট্যাংক মোকাবেলায় এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সমাধান।
পরবর্তী পদক্ষেপ হলো ভারতীয় সেনাবাহিনীর ব্যবহারকারী ট্রায়াল, যা আগামী ১২–১৮ মাসে বিভিন্ন ভৌগোলিক অঞ্চলে অনুষ্ঠিত হবে মরুভূমি থেকে বরফে ঢাকা উচ্চ পাহাড় পর্যন্ত। সফল ট্রায়াল শেষ হওয়ার পর উৎপাদন মডেল তৈরি শুরু হবে, এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রায় ৩৫০টি লাইট ট্যাংক ধাপে ধাপে সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
জোরাবর লাইট ট্যাংক এবং নাগ এমকে-২ এর এই একীকরণ কেবল সীমান্ত নিরাপত্তা বাড়ায় না, ‘আত্মনির্ভর ভারত’ উদ্যোগকে শক্তিশালী করতেও সহায়ক। ভারতীয় প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিতে স্বনির্ভরতা অর্জনের ক্ষেত্রে এটি একটি নতুন অধ্যায়। আগামী বছরগুলোতে সীমান্তের প্রতিটি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এই হালকা ট্যাংক ভারতকে আরও শক্তিশালী ও আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে।