জাতীয় সঙ্গীত ‘রঘুপতি রাঘব’! কঙ্গনার মন্তব্যে তোলপাড় নেটপাড়া

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৮:৩০: বেফাঁস মন্তব্য করে ফের বিতর্কে কঙ্গনা রানাউত (Kangana Ranaut) এবার ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প বা ‘মনরেগা’র নাম বদল ও মহাত্মা গান্ধীর নাম অপসারণ নিয়ে মুখ খুলতে গিয়ে ফের তুমুল বিতর্কের জন্ম দিলেন ‘বলিউড ক্যুইন’। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে দাবি করলেন, মহাত্মা গান্ধী নাকি ‘রঘুপতি রাঘব রাজা রাম’ গানটিকে ভারতের ‘জাতীয় সঙ্গীত’ করেছিলেন!
ঘটনার সূত্রপাত কেন্দ্রীয় সরকারের (central government) একটি বিলকে কেন্দ্র করে। ‘মহাত্মা গান্ধী ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি স্কিম’, যা সংক্ষেপে ‘মনরেগা’ (MGNREGA) নামে পরিচিত, সেই প্রকল্পের নাম বদলে ‘বিকশিত ভারত গ্যারান্টি ফর রোজগার অ্যান্ড আজীবিকা মিশন (গ্রামীণ) বিল ২০২৫’ করার প্রস্তাব এনেছে মোদী সরকার (Modi government) । অভিযোগ, এই পরিবর্তনের ফলে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প থেকে কার্যত মুছে ফেলা হচ্ছে মহাত্মা গান্ধীর (Mahatma Gandhi) নাম। স্বাভাবিকভাবেই, জাতির জনকের নাম বাদ পড়ায় কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। তাদের দাবি, মোদী সরকারের এই পদক্ষেপ গান্ধীজির প্রতি চরম অপমান। অন্যদিকে, প্রকল্পের নতুন নামকরণে বা ভাবনায় ‘রাম’-এর অনুষঙ্গ থাকা নিয়েও আপত্তি তুলেছে বিরোধীদের একাংশ। বুধবার রাত পর্যন্ত সংসদে এই বিল নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চলে।
বুধবার সংসদ চত্বরে এই উত্তপ্ত বিষয়টি নিয়েই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন হিমাচলের মাণ্ডির বিজেপি (BJP) সাংসদ কঙ্গনা রানাউত। মনরেগা থেকে গান্ধীর নাম বাদ যাওয়া প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে সাংসদ-অভিনেত্রী ক্যামেরার সামনেই দেশের ইতিহাস ও জাতীয় সঙ্গীত সম্পর্কে এক অদ্ভুত দাবি করে বসেন। কঙ্গনা বলেন, “রামজির নাম থাকায় গান্ধীজিকে কীভাবে অপমান করা হল এখানে? মহাত্মা গান্ধী তো সমগ্র দেশকে একসুতোয় বাঁধার জন্য ‘রঘুপতি রাঘব রাজা রাম’ গানটিকে জাতীয় সঙ্গীত করেছিলেন। অতঃপর রাম নাম যোগ করে মোদী সরকার তো আখেড়ে গান্ধীজিরই স্বপ্নপূরণ করলেন।”
গান্ধীজির প্রিয় ভজন ‘রঘুপতি রাঘব রাজা রাম’-কে ভারতের ‘জাতীয় সঙ্গীত’ বলে সম্বোধন করায় মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায় কঙ্গনার ভিডিও। একজন নির্বাচিত সাংসদ হয়ে দেশের জাতীয় সঙ্গীত এবং ভজনের পার্থক্য জানেন না- এই অভিযোগ তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিন্দার ঝড় উঠেছে।
নেটিজেনদের একাংশ কঙ্গনাকে ‘দেশের নতুন ইতিহাসবিদ’ বলে কটাক্ষ করেছেন। কেউ কেউ হিমাচলের মাণ্ডির ভোটারদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে মন্তব্য করেছেন, “এমন জ্ঞানী সাংসদকে নির্বাচিত করার ফল ভুগতে হচ্ছে।” আবার কারও মন্তব্য, “রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কবে ‘রঘুপতি রাঘব’ লিখলেন জানা ছিল না!” সব মিলিয়ে, মনরেগা বিতর্ক ছাপিয়ে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে কঙ্গনার এই ‘নয়া ইতিহাস’ জ্ঞান।