Bangladesh: জামাতে লীন হওয়ার পথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের দল এনসিপি? তুঙ্গে জল্পনা
Authored By:

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৮:০০: জুলাই-আগস্টের রক্তঝরা বিপ্লব কি তবে শেষ পর্যন্ত বুড়িগঙ্গার জলেই ভেসে গেল? বাংলাদেশে (Bangladesh) নির্বাচনের দামামা বাজতেই পাল্টে যাচ্ছে রাজনৈতিক সমীকরণ। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, সমস্ত রাখ-ঢাক সরিয়ে এবার জামাত ইসলামির (Jamaat-e-Islami) সঙ্গে পুরোপুরি মিশে যেতে চলেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজনৈতিক দল এনসিপি (NCP)। রাজনৈতিক মহলের মতে, এই ঘটনা ঘটলে তা হবে তথাকথিত বিপ্লবীদের ‘সলিল সমাধি’।
নির্বাচন ঘোষণার পর থেকেই আসন সমঝোতা নিয়ে জামাতের সঙ্গে নাহিদ ইসলাম, হাসনাত আব্দুল্লাহদের দলের দড়ি টানাটানি চলছিল। প্রথমে এনসিপি জানিয়েছিল তারা এককভাবেই নির্বাচনে লড়বে। সেই লক্ষ্যে প্রথম পর্বে ১২৫টি আসনে প্রার্থীর নামও ঘোষণা করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে সুর বদলে ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’ গঠনের ঘোষণা করে তারা এবং জামাতের সঙ্গে জোট বাঁধার ইঙ্গিত দেয়।
সূত্রের খবর, জোটের আলোচনায় এনসিপি জামাতের কাছে ৫০টি আসন দাবি করেছিল। কিন্তু জামাত ৩০টির বেশি আসন ছাড়তে নারাজ। এদিকে এনসিপি আগেভাগেই যে ১২৫ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছিল, তাঁদের অনেকেই প্রচার শুরু করে দিয়েছেন। এই জটিল পরিস্থিতি এবং আসন নিয়ে বনিবনা না হওয়াতেই শেষমেশ দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে জামাতের সঙ্গে মিশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলে জল্পনা তুঙ্গে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, বিএনপি (BNP) নেতা তারেক রহমান (Tarique Rahman) দেশে ফেরার পর বিএনপির জনসমর্থন ও শক্তি বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিস্থিতিতে এনসিপি নেতারা বুঝতে পারছেন, এককভাবে বা ছোট জোট করে বিএনপির মতো বড় শক্তির মোকাবিলা করা কঠিন। তাই কি নিজেদের ‘বিপ্লবী’ খোলস ছেড়ে কট্টরপন্থী জামাতের সঙ্গে মিশে যাওয়ার এই কৌশল?
এনসিপি-র এই সম্ভাব্য সিদ্ধান্তে দলের অন্দরেই ফাটল ধরেছে। দলের জামাত-বিরোধী অংশ এই মেরুকরণ মেনে নিতে পারছে না। ইতিমধ্যেই তারেক রহমান দেশে ফিরতেই তাঁকে সমর্থন জানিয়ে দল ছেড়েছেন মির আরশাদুল হক, যিনি জামাত-বিরোধী হিসেবে পরিচিত। দলত্যাগী ও বিক্ষুব্ধদের মতে, হাসিনা সরকার, ভারত এবং মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করতে গিয়ে এনসিপি ক্রমশ বাংলাদেশে একটি ইসলামপন্থী দল হিসেবেই পরিচিতি লাভ করেছে। বিরোধীরা অনেক আগে থেকেই তাদের ‘জামাতের বি-টিম’ বলে দাগিয়ে দিয়েছিল। এবার সেই তকমাই বাস্তবে রূপ নিতে চলেছে। পদ্মাপাড়ের বাতাসে এখন একটাই প্রশ্ন, তবে কি জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের আবেগ শেষ পর্যন্ত কট্টর মৌলবাদের হাতেই সমর্পিত হলো?