গরম রডের ছ্যাঁকা, কাটা হল কান, নাম জেনে বিহারে মুসলমান কাপড় বিক্রেতার উপর চলল নৃশংস অত্যাচার
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৭:৩০: NDA শাসিত বিহার সাক্ষী থাকল নারকীয় অত্যাচারের। শ্রমজীবী মানুষের প্রাণ গেল বেধড়ক প্রহারে। অভিযোগ, নাম-পরিচয় জেনে এক মুসলমান কাপড় বিক্রেতার উপর চড়াও হন কয়েকজন। বেধড়ক মারধর করা হয় তাঁকে। অভিযোগ, গরম রডের ছ্যাঁকা দেওয়া হয়, কেটে দেওয়া হয় দু’টি কান। এহেন নৃশংস অত্যাচার সহ্য করতে না-পেরে মারা গেলেন ওই কাপড় বিক্রেতা। আতহারের ভাই মহম্মদ সাকিব আলমের অভিযোগ, নাম-পরিচয় জেনে তাঁর দাদার উপর হামলা করা হয়।
ঘটনাটি ঘটেছে বিহারের নওয়াদা জেলায়। মৃত ব্যক্তির নাম মহম্মদ আতহার হুসেন। ৫০ বছরের আতহারের পেশায় ছিলেন কাপড় বিক্রেতা। সাইকেলে চেপে ঘুরে ঘুরে জামাকাপড় ফেরি করতেন।
আতহার গগন দিওয়ান গ্রামের বাসিন্দা। ৫ ডিসেম্বর ভট্টাপার হয়ে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। তখন তাঁর সাইকেলের চাকা পাংচার হয়ে যায়। তিনি সাইকেল সারাইয়ের দোকানের খোঁজ করতে থাকেন।
সেই সময় গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা আতহারকে ঘিরে ধরে, তাঁর নাম ও পেশা জানতে চায়।
সমাজ মাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি দৃষ্টিভঙ্গি। ভিডিওতে আতহার জানান, ১৫-২০ জন মিলে তাঁকে ঘিরে ধরে। সাইকেল থেকে নামিয়ে আনা হয়। ব্যাগে থাকা ১৮ হাজার টাকা কেড়ে নেওয়া হয়। শুরু হয় মারধর, অত্যাচার। জামা-কাপড় খুলিয়ে পুরুষাঙ্গে আঘাত করা হয়। লোহার রড গরম করে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়। ভিডিওয় আতহার বলেন, তাঁর হাত-পা বেঁধে দেওয়া হয়। তারপর মারধর চলে। অভিযোগ, পাথর দিয়ে মারা হয়, রড দিয়েও মারা হয়। হাত, আঙুল ভেঙে দেয়। প্লাস দিয়ে আঙুল এবং দুই কান কেটে দেওয়া হয়। জামাকাপড় খুলে নেওয়া হয়। লোহার রড গরম করে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়। একজন বুকের উপর উঠে দাঁড়ায়। গলা চেপে ধরে, মুখ দিয়ে রক্ত বেরিয়ে আসে আতহারের।
পুলিশ সূত্রে খবর, গভীর রাতে ১১২-তে ফোন করে গোটা ঘটনা জানান কেউ। সেই মতো উদ্ধার করে আনা হয় আতহারকে। আতহারকে প্রথমে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। তারপর নওয়াদা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত পাওয়াপুরি VIMS-এ শুক্রবার রাতে মারা যান আতহার। আতহারের দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। ৬ ডিসেম্বর অভিযোগ দায়ের করেন আতহারের স্ত্রী শবনম পরভীন। ঘটনায় ছ’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে দুই নাবালকও রয়েছে বলে খবর। এখনও বহু হামলাকারীকে শনাক্ত করা যায়নি বলে জানা গিয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, তাঁদের পরিবারের লোকজনকেও হুমকি দেওয়া হয়।