সৈকত শহরে নয়া ইতিহাস! ১ কোটির পথে দীঘা জগন্নাথ ধামের দর্শনার্থী সংখ্যা
Authored By:

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৯:১০: পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে নির্মিত দীঘার জগন্নাথ ধাম (Digha Jagannath Dham) উদ্বোধনের পর আট মাসও পূর্ণ হয়নি। তার মধ্যেই নয়া ইতিহাস তৈরি করতে চলেছে সৈকত শহরের এই নবনির্মিত মন্দির। মন্দির কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই জগন্নাথ ধামে দর্শনার্থী (Visitor) তথা পুণ্যার্থীর সংখ্যা ৯৫ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে। বড়দিন ও বর্ষশেষের মরশুমে পর্যটকদের যে ঢল নেমেছে, তাতে এই ডিসেম্বরেই দর্শনার্থীর সংখ্যা এক কোটির গণ্ডি স্পর্শ করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এক বছর আগেও পূর্ব মেদিনীপুরের এই উপকূল ছিল শুধুই নিছক পর্যটন কেন্দ্র। সপ্তাহান্তে ঝটিকা সফর, সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত দেখা, সমুদ্রস্নান আর ইলিশ-কাঁকড়ার স্বাদ নেওয়াই ছিল পর্যটকদের প্রধান উদ্দেশ্য। কিন্তু গত অক্ষয় তৃতীয়ায় এই মন্দিরের দরজা খোলার পর থেকেই দীঘার পর্যটন মানচিত্রে আমূল পরিবর্তন এসেছে। এখন পর্যটকদের কাছে দীঘা একাধারে প্রমোদভ্রমণ ও তীর্থক্ষেত্র- আক্ষরিক অর্থেই ‘ফুল প্যাকেজ’।
স্থানীয় অর্থনীতিতেও এর বড়সড় প্রভাব পড়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী, হোটেল মালিক থেকে শুরু করে টোটো চালক সকলেই একবাক্যে স্বীকার করছেন যে, গত আট মাসে পর্যটকদের আনাগোনা লক্ষণীয়ভাবে বেড়েছে, যার ফলে বেড়েছে রোজগারও। দীঘা জগন্নাথ ধাম ও কালচারাল সেন্টার ট্রাস্টের সদস্য তথা ইসকনের প্রতিনিধি রাধারমণ দাস (Radharaman Das) বলেন, ‘‘মন্দির উদ্বোধনের পর থেকেই ভক্তদের ভিড় অব্যাহত। বিশেষ করে ছুটির দিনগুলোতে দর্শনার্থীদের ঢল নামছে। বর্তমানে যা পরিস্থিতি, তাতে আমরা নিশ্চিত খুব শীঘ্রই এক কোটির মাইলফলক ছোঁয়া যাবে।’’
ভিড়ের প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে মন্দিরের দানপাত্রেও। সম্প্রতি মাত্র তিন-চার দিনের ব্যবধানে দানপাত্র খুলে পাওয়া গিয়েছে ৭ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা। প্রণামী ছাড়াও মন্দিরের আয়ের অন্যতম উৎস হল ‘ভোগ’ বা মহাপ্রসাদ। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চার বেলা নামমাত্র মূল্যে ভক্তদের জন্য প্রসাদের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। খিচুড়ি ভোগ, পুরিভাজি থেকে শুরু করে দুপুরের স্পেশ্যাল থালি- দাম ৫০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে। বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ৫০০-৫৫০টি থালি তৈরি হচ্ছে, যা নির্দিষ্ট নম্বরে আগাম বুকিংয়ের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে হয়।
প্রবল ভিড়ের কথা মাথায় রেখে পরিকাঠামোগত উন্নয়নেও জোর দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি রাজ্যের মন্ত্রী তথা হিডকোর চেয়ারম্যান চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (Chandrima Bhattacharya) মন্দির পরিদর্শনে এসে বসে খাওয়ার আসন সংখ্যা ১ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২ হাজার করার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই মতো কাজও শুরু হয়েছে।
সামনেই বড়দিন ও নতুন বছরের ছুটি। দীঘায় পর্যটকদের ভিড় উপচে পড়ার সম্ভাবনা। এই আবহে জগন্নাথ ধাম যে পর্যটনের আঙিনায় নিজস্ব রেকর্ড গড়তে চলেছে, তা বলাই বাহুল্য।