নির্ভয়া তহবিলের অর্ধেকের বেশি টাকা বকেয়া, গড়িমসি কেন্দ্রের
কলকাতায় সিসি ক্যামেরা ও বাতিস্তম্ভ বসানো থেকে শুরু করে মহিলাদের নিরাপত্তার বিষয়ে প্রচারের জন্য নেওয়া হয় একগুচ্ছ প্রকল্প।

সেফ সিটি প্রকল্পের জন্য গঠিত হয় নির্ভয়া তহবিল। কলকাতার নিরাপত্তা বাড়াতে এই তহবিল থেকে অনুমোদিত হয়েছে মোট ১০৫ কোটি টাকা। প্রথম পর্যায়ে ৪৫ কোটি টাকা দিলেও, নবান্ন সূত্রে খবর, দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রাপ্য ৫৫ কোটি টাকা দিতে গড়িমসি করছে মোদী সরকার। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প নিয়েও কলকাতার সঙ্গে কেন্দ্রের দুয়োরানির মতো আচরণে ক্ষুব্ধ নবান্ন। ইতিমধ্যে কেন্দ্রকে চিঠি লিখেছে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দপ্তর। একমাস পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু উত্তর আসেনি।
নির্ভয়া কাণ্ডের পর বিভিন্ন শহরের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে কেন্দ্র নির্ভয়া তহবিল গড়ে। পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়। কলকাতায় সিসি ক্যামেরা ও বাতিস্তম্ভ বসানো থেকে শুরু করে মহিলাদের নিরাপত্তার বিষয়ে প্রচারের জন্য নেওয়া হয় একগুচ্ছ প্রকল্প।
এই প্রকল্পে কেন্দ্রের ৮০ শতাংশ ও রাজ্যের ২০ শতাংশ টাকা দেওয়ার কথা। এ পর্যন্ত কেন্দ্র ৪৫ কোটি টাকা দিলেও রাজ্য ইতিমধ্যে ১৭ কোটি টাকা খরচ করেছে। অর্থাৎ শতাংশের হিসেবে উপরের নিয়মে কেন্দ্রের থেকে অধিক দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছে রাজ্য। প্রসঙ্গত, কেন্দ্র জানিয়েছিল, বহু রাজ্যই প্রথম পর্যায়ের টাকা খরচের হিসেব দেয়নি। তবে বাংলা এই রাজ্যগুলির মধ্যে পড়ে না। কারণ, ইতিমধ্যে বাংলার সেই হিসেব অর্থাৎ প্রথম পর্যায়ের টাকার ‘ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে জমা পড়েছে।
গতবছরের ২৪ ডিসেম্বর দ্বিতীয় পর্যায়ের টাকার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে চিঠি পাঠায় রাজ্য। চিঠির সঙ্গে প্রথম পর্যায়ের পাওয়া টাকার হিসেবের খসড়াও পাঠানো হয়। তবে কেন্দ্র আরও কিছু তথ্য যুক্ত করে ফের একবার চিঠি পাঠাতে অনুরোধ করে রাজ্যকে। কেন্দ্রের নির্দেশ অনুযায়ী, এই বিষয়ে দ্বিতীয় চিঠি পাঠানো হয় গত ১৪ জানুয়ারি। কেটে গিয়েছে একমাসের বেশি। দ্বিতীয় পর্যায়ের টাকা ছাড়ার বিষয়ে কেন্দ্রের তরফে রাজ্যকে এখনও কিছু জানানো হয়নি ।
রাজ্যের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, এতদিন সময় লাগাটা নজিরবিহীন। কারণ প্রথম পর্যায়ের টাকা পাওয়া গিয়েছিল খুব কম সময়ের মধ্যেই। তা কীভাবে খরচ হয়েছে, তাও কেন্দ্রকে যথাসময়ে জানিয়েছে রাজ্য। রাজ্যের প্রাপ্য অর্থের ৫২ শতাংশ টাকা দিতে বাকি কেন্দ্রের। এতে আমরা সত্যিই অবাকই হচ্ছি। কলকাতা শহরকে সিসি ক্যামেরায় মুড়ে ফেলতে খরচ করা হচ্ছে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা। নজরদারি বাড়াতে পরিকাঠামো উন্নয়নের দিকে জোর দেওয়া হচ্ছে। বাড়ানো হচ্ছে প্রচার। শিশু ও নারী পাচার ঠেকাতেও করা হচ্ছে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। তবে দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রদেয় অর্থ না পেলে এই কাজ থমকে যেতে পারে। এমনই আশঙ্কা আধিকারিকদের।