কোচবিহারে রাস মেলায় এবার বাংলাদেশের স্টল নেই, নোনা ইলিশ, টাঙ্গাইল সিল্ক ও গুড়ের খোঁজ না পেয়ে হতাশা

উৎসবকে কেন্দ্র করেই ঐতিহ্যবাহী রাসমেলা হয়। যেটি বর্তমানে কোচবিহার পুরসভা আয়োজন করে।

November 20, 2024 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: দুর্গাপুজো-কালীপুজো পর কোচবিহারবাসী এখন মেতেছেন রাস মেলায়। কার্তিক পূর্ণিমায় উদযাপিত হয় রাস উৎসব। তাতে মেতে ওঠে গোটা কোচবিহার। শহরের প্রাচীন বৈরাগীদিঘির পাড়ে মদনমোহনবাড়িতে রাজ আমল থেকেই চলে আসছে রাস উৎসব। এই উৎসব পরিচালনা করে দেবত্র ট্রাস্ট বোর্ড। উৎসবকে কেন্দ্র করেই ঐতিহ্যবাহী রাসমেলা হয়। যেটি বর্তমানে কোচবিহার পুরসভা আয়োজন করে। রাসমেলা মাঠে হওয়া এই মেলা উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্যতম বৃহৎ একটি মেলা।

মঙ্গলবার রাসমেলায় এসেছিলেন স্বপ্না দে। তাঁর শৈশবের দিনগুলি কেটেছিল বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জে। স্বামীর বাড়ি ছিল টাঙ্গাইলের হিংগানগরে। বর্তমানে কোচবিহারের ঘুঘুমারির পানিশালা গ্রামের বাসিন্দা। তবু বাংলাদেশের কথা শুনলেই মনে ভেসে ওঠে শৈশবের ছবি। সেদেশের মানুষ দেখলে কথা বলার, দেখা করার ইচ্ছে জাগে মনে। টাঙ্গাইল মানেই শাড়ি। সিল্ক। এসব চিন্তা করেই মঙ্গলবার এসেছিলেন তিনি। রাসমেলায় বাংলাদেশের স্টল বসে। ইচ্ছে ছিল সেখান থেকে শাড়ি কেনার।

কিন্তু এবার তো সেই জায়গা ফাঁকা। বসেনি বাংলাদেশি স্টল। তার বদলে নবদ্বীপের কয়েকজন বাংলাদেশের জামদানি, সিল্ক প্রভৃতি শাড়ির স্টল দিয়েছেন। তাঁরা আগে রাসমেলায় বাংলাদেশের স্টলে কাজ করতেন। কলকাতায় বাংলাদেশি শাড়ির গোডাউন থেকে শাড়ি নিয়ে এসে এখানে বিক্রি করছেন। ফলে স্বপ্নাদেবীর এদিন আর শাড়ি কেনা যেমন হয়নি, তেমনই বাংলাদেশ থেকে আসা মানুষের সঙ্গে কথা বলাও হল না।

স্বপ্নাদেবী বলেন, আমার বাপের বাড়ি সিরাজগঞ্জ। রাসমেলায় টাঙ্গাইল সিল্ক দেখতে এসেছিলাম। বাংলাদেশের মানুষ এখানে আসেন। তাঁদের সঙ্গে বসে একটু গ্রামের কথা শুনতাম। কিন্তু ওই দেশ থেকে এবার কেউ আসেননি। শাড়িও আর কেনা হল না।

স্টলে ক্রেতাদের শাড়ি দেখাতে ব্যস্ত ছিলেন নবদ্বীপ থেকে আসা মহম্মদ নাসিদ, সম্রাট শেখ। তাঁরা বলেন, এবার রাসমেলায় বাংলাদেশের স্টল আসেনি। নোনা ইলিশ, গুড়ও আসেনি। আমরা ছয়-সাত বছর রাসমেলায় বাংলাদেশের স্টলে কাজ করেছি। কলকাতা থেকে বাংলাদেশের ঢাকাই জামদানি সহ বিভিন্ন ধরনের শাড়ি নিয়ে এসেছি। রাসমেলায় প্রতিবছর যে জায়গায় বাংলাদেশের শাড়ির বেশকিছু স্টল বসে সেখানে এবার বসেছে খাওয়ারের দোকান। আছে অন্যান্য দোকানও। ফলে নির্দিষ্ট ওই জায়গাতেই এসে অনেকে বাংলাদেশের স্টল খুঁজছেন। ওই সব স্টলের সামনেই বসতো নোনা ইলিশ, ফরিদপুরের খেজুর গুড়, পাটালি গুড়। এবার সেসব নিয়েও বাংলাদেশ থেকে কেউ আসেননি। ফলে মেলার ওই জায়গাটা কার্যত জৌলুস হারিয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen