বারাসতে নরেন্দ্র মোদীর সভা ভরল না

উত্তর শহরতলি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি কিশোর কর বলেন, প্রধানমন্ত্রী আসার পর তিনটে হ্যাঙ্গার ভরে গিয়েছিল। তবে আমাদের মতো কর্মসূচি কোনও দল করছে না। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও প্রচুর সভা হচ্ছে। প্রতিটি কর্মসূচিতেই কর্মী সমর্থকরা যাচ্ছেন।

April 13, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় প্রথম দফার ভোটের আগে আজ সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) জনসভা দিয়ে প্রচারে ঝড় তোলার কৌশল নিয়েছিল বিজেপি নেতৃত্ব। কিন্তু সেই সভায় মাঠ ভরা তো দূরের কথা হ্যাঙ্গারই ভরল না। প্রধানমন্ত্রী আসার প্রাক মুহূর্তে হ্যাঙ্গারের বিরাট অংশ ফাঁকা দেখে বিজেপি নেতাদের মুখ কার্যত পাংশুবর্ণ হতে শুরু করে। প্রধানমন্ত্রী আসার পর সমর্থকরা এলেও হ্যাঙ্গারের অনেকটাই ফাঁকা থেকে যায়। সাংগঠনিক ত্রুটি, নাকি অত্যাধিক কর্মসূচির চাপে বারাসতে জনজোয়ার হল না, তা নিয়ে গেরুয়া শিবিরের অভ্যন্তরে তোলপাড় শুরু হয়েছে। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় গুলিতে চারজন ভোটারের মৃত্যু হয়েছে। সেই ঘটনার নিন্দা না করে উল্টে বিজেপি নেতারা হুমকির সুরে কথা বলছেন। তাঁদের এই ঔদ্ধত্য মানুষ ভালোভাবে নিচ্ছেন না। ফলে মোদীর সভায় ভিড় টানতে শীতলকুচির ছায়া পরোক্ষে হলেও প্রভাব ফেলেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন কাছারি ময়দানে প্রধানমন্ত্রীর সভার জন্য স্টেজ ছাড়াও পেল্লাই সাইজের তিনটে হ্যাঙ্গার টাঙানো হয়েছিল। এদিন বিকেল ৩টে নাগাদ প্রধানমন্ত্রীর সভা শুরুর কথা ছিল। তিনি সভাস্থলে পৌঁছন ৩টা ৪৭মিনিটে। তাঁর আগে বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়, বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তারক ঘোষ, উত্তর শহরতলি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি কিশোর কর, রাজ্য নেতা শমীক ভট্টাচার্য, রাহুল সিনহা, রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় ও রীতেশ তেওয়ারির মতো নেতারা বক্তব্য রাখেন। মঞ্চে খোদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রদীপ ষড়ঙ্গী উপস্থিত থাকলেও তখন তিনটি হ্যাঙ্গারের বড় অংশ ফাঁকা ছিল। সমর্থকদের উপস্থিতির হার দেখে দলের রাজ্য নেতারা নিজেদের মধ্যে মুখ চাওয়াচাওয়ি করতে থাকেন। প্রধানমন্ত্রীর সামনে মুখ পোড়ার আশঙ্কায় বার বার ফাঁকা হ্যাঙ্গারের দিকে চোখ রেখে ফোন করে কর্মীদের হ্যাঙ্গার ভরানোর কথাও বলা হয়। প্রধানমন্ত্রী আসার পর ফাঁকা হ্যাঙ্গারের কিছুটা অংশ ভর্তি হয়। কিন্তু পুরো হ্যাঙ্গার আর ভরেনি। তখনও মাঠের আশপাশের অংশ ফাঁকা।

শুধু তাই নয়, যেকোনও বড় সভা হলে ছোট্ট বারাসত (Barasat) শহর কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। জনতার বড় বড় মিছিলে যানজট তীব্র আকার নেয়। কিন্তু এদিন শহরে সেই অর্থে যানজটও ছিলনা। এমনকি সভা শেষ হওয়ার পর মিনিট দশেকের মধ্যে পুরো মাঠ ফাঁকা হয়ে যায়। এদিনের সভায় বিজেপির বারাসত, বসিরহাট ও উত্তর শহরতলি সাংগঠনিক জেলা থেকে কর্মীদের আনা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও কেন এই ঘটনা ঘটল তা নিয়ে দলের অভ্যন্তরে চুলচেরা বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে। উপস্থিতির হার কর্মীদের ভোকাল টনিক দেওয়ার পরিবর্তে অনেকটাই মানসিক ভাবে দুর্বল করে দিয়েছে বলে রাজনৈতিক মহলের মত। এই বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বিজেপি (BJP) নেতা বলেন, প্রত্যেক দিন এত কর্মসূচির চাপ আর নিতে পারছেন না কর্মীরা। সেকারণে সভায় এদিন আশানরূপ ভিড় হয়নি। বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শঙ্কর চট্টোপাধ্যায় বলেন, এদিন জেলার ১২টি বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থীদের নিয়ে মিটিং ছিল। শুনেছি দমদমের দিকে কিছু বাস তৃণমূল আটকে দিয়েছিল। তাছাড়া হ্যাঙ্গার প্রথম দিকে ফাঁকা থাকলেও প্রধানমন্ত্রী আসার পর তা ভর্তি হয়ে যায়। উত্তর শহরতলি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি কিশোর কর বলেন, প্রধানমন্ত্রী আসার পর তিনটে হ্যাঙ্গার ভরে গিয়েছিল। তবে আমাদের মতো কর্মসূচি কোনও দল করছে না। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও প্রচুর সভা হচ্ছে। প্রতিটি কর্মসূচিতেই কর্মী সমর্থকরা যাচ্ছেন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen