যোগীরাজ্যে ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, চিকিৎসা করাতে বাংলায় অযোধ্যার দম্পতি

ভোটের বাংলায় যখন গেরুয়া শিবির নেতৃত্ব ‘ডবল ইঞ্জিন’ গুণকীর্তনের বেলুন লাগাতার ফুলিয়ে যাচ্ছেন, তখন ওই দম্পতি মমতার ‘সিঙ্গল ইঞ্জিন’ রাজ্যে চলে আসা প্রতিশ্রুতির ফানুস চুপসে দিচ্ছে বলেই দাবি তৃণমূলের।

April 27, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

প্রায় ৯০০ কিলোমিটার যাত্রা। গাড়িভাড়া ৭০ হাজার টাকা। যোগীরাজ্যে চিকিৎসা না পেয়ে বাংলারই দ্বারস্থ হতে হল অযোধ্যার দম্পতিকে। প্রাণ হাতে নিয়ে পেরতে হল এই দুস্তর বাধা। ‘মমতা’ময় রাজ্যে এসেই লালজি যাদব এবং রেখা যাদব পেলেন হাসপাতাল… অক্সিজেনের নিশ্চয়তা। ‘রামরাজ্য’ অযোধ্যা থেকে হুগলির চুঁচুড়ার এসে এখন একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন ওই দম্পতি। জানিয়েছেন, ‘আমরা সুস্থ। আর তার থেকেও অনেক বেশি নিশ্চিন্ত।’ চুঁচুড়ার নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষও বলছেন, ওই রোগী-দম্পতি অনেকটাই ভালো আছেন। সুচিকিৎসার খোঁজে ওই দম্পতির দীর্ঘ সফর ঘিরে ইতিমধ্যেই নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে। ভোটের বাংলায় যখন গেরুয়া শিবির নেতৃত্ব ‘ডবল ইঞ্জিন’ গুণকীর্তনের বেলুন লাগাতার ফুলিয়ে যাচ্ছেন, তখন ওই দম্পতি মমতার ‘সিঙ্গল ইঞ্জিন’ রাজ্যে চলে আসা প্রতিশ্রুতির ফানুস চুপসে দিচ্ছে বলেই দাবি তৃণমূলের।

ঠিক কী ঘটেছে? সে মর্মান্তিক বাস্তব। যা বলতে গিয়ে বারবার চোখের জল ফেলছিলেন ওই চিকিৎসাধীন দম্পতির ঘনিষ্ঠ আত্মীয়রা। উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যাতেই বহু বছর ধরে বাস করছেন ওই দম্পতি। লালজি যাদব কাজ করেন অযোধ্যার আদালতে। সম্প্রতি তিনি করোনা আক্রান্ত হন। তার পরপরই স্ত্রী রেখাদেবীর দেহেও করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ে। অযোধ্যাতেই চেষ্টা করেছিলেন চিকিৎসার জন্য। কিন্তু কাজ হয়নি। এরই মধ্যে লালজির দেহে অক্সিজেনের অভাব দেখা দিতে শুরু করে। একের পর এক হাসপাতাল, ডাক্তার ফিরিয়ে দেয়। মেলে না অক্সিজেন। এরপরই হুগলির মগরায় আত্মীয়দের বাড়ি ফোন করেন তাঁরা। সেখানেই মেলে ব্যবস্থার আশ্বাস… চিকিৎসার নিশ্চয়তা। ‘মমতারাজ্য’ থেকে আশ্বাস মিলতেই কপাল ঠুকে উত্তরপ্রদেশ ছেড়ে গত বৃহস্পতিবার রওনা দেন ওই দম্পতি ও তাঁর এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। প্রায় ২৩ ঘণ্টার টানা যাত্রাশেষে শুক্রবার রাতে চুঁচুড়ার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে পৌঁছন। সঙ্গে সঙ্গে ভর্তি করে নেওয়া হয় যাদব দম্পতিকে। দেওয়া হয় অক্সিজেনও। নার্সিংহোম সূত্রে জানা গিয়েছে, লালজির অবস্থাই বেশি সঙ্কটজনক ছিল। এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন তাঁরা। দম্পতির ঘনিষ্ঠ আত্মীয় তথা সফরসঙ্গী রবিশঙ্কর যাদব সজল চোখে বলেন, ‘আমরা ভাবিনি দিদি-জামাইবাবুকে বাঁচাতে পারব। অযোধ্যায় না আছে অক্সিজেন, না চিকিৎসা। বাংলায় এসে আমরা নিশ্চিন্ত হয়েছি।’ তবে যে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এরাজ্যে এসে উন্নয়নের স্বপ্ন ফেরি করছিলেন? রবিশঙ্করবাবু বলেন, ‘তা আমি জানি না। কিন্তু ভয়ানক একটা পরিস্থিতি থেকে পালিয়ে বেঁচেছি।’ বিজেপির প্রাক্তন রাজ্যনেতা স্বপন পাল বলেন, ‘একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা দিয়ে কোনও কিছু ব্যাখ্যা করা সঠিক নয়।’ তৃণমূল কংগ্রেসের হুগলি জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, ‘একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। রামরাজ্যের মিথ্যাচার, ডবল ইঞ্জিনের ভাঁওতা বেআব্রু হয়ে গিয়েছে। ছিঃ।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen