আর চলবে না দাদাগিরি! দীঘা-মন্দারমণিতে হোটেলের ভাড়ায় ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি রাজ্য প্রশাসনের

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২০:২৫: দোরগোড়ায় বড়দিন ও ইংরেজি নববর্ষ। উৎসবের মরশুমে প্রতি বছরের মতো এবারও দীঘা ও মন্দারমণিতে পর্যটকদের ঢল নামার অপেক্ষায়। তবে ভিড়ের সুযোগ নিয়ে পর্যটকদের পকেট কাটার দিন শেষ। উৎসবের মরশুমে হোটেল ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য, বেআইনি নির্মাণ এবং পর্যটক হয়রানি রুখতে এবার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে-উৎসবের অজুহাতে অযৌক্তিক ভাড়া বাড়ানো চলবে না, আর নিয়ম ভাঙলে মিলবে না রেহাই।
প্রশাসন সূত্রে খবর, আসন্ন পর্যটন মরশুমকে সামনে রেখে সম্প্রতি দীঘায় একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিক, পুলিশ কর্তা, দীঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের প্রতিনিধি এবং হোটেল মালিক সংগঠনের সদস্যরা। সেখানেই প্রশাসনের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, পর্যটকদের সঙ্গে প্রতারণা বা অসৎ আচরণ বরদাস্ত করা হবে না।
বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দীঘা ও মন্দারমণিপ প্রতিটি হোটেল ও লজে বাধ্যতামূলকভাবে ভাড়ার তালিকা (Rate Chart) এমন জায়গায় টাঙাতে হবে যা পর্যটকদের চোখে সহজেই পড়ে। কোনো হোটেল নির্দিষ্ট তালিকার বাইরে বাড়তি টাকা দাবি করলে এবং সেই অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পর্যটকদের অভিযোগ জানানোর জন্য বিশেষ সহায়তা কেন্দ্র ও নজরদারি ব্যবস্থাও চালু থাকছে।
শুধুমাত্র হোটেল ভাড়াই নয়, মন্দারমণিতে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধেও প্রশাসনিক অভিযান শুরু হয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকার পরিবেশ ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে গড়ে ওঠা একাধিক অবৈধ নির্মাণ ইতিমধ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে বলে খবর। পরিবেশ বিধি ও সিআরজেড (CRZ) নিয়মাবলী মানা হচ্ছে কি না, তা নিয়ে চলছে কড়া নজরদারি।
পাশাপাশি, ছুটির মরশুমে লাখো মানুষের ভিড় সামলাতে ঢেলে সাজানো হচ্ছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। দীঘা ও মন্দারমণির সৈকত ও সংলগ্ন এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন, সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ এবং সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা নজরদারির পরিকল্পনা নিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। যানজট রুখতে ট্রাফিক ব্যবস্থাতেও আনা হচ্ছে বিশেষ পরিবর্তন। প্রশাসনের এই কড়া পদক্ষেপে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন ভ্রমণপিপাসু বাঙালি।