তৃণমূলের বিধায়ক সংখ্যা বেড়ে চলায় কমিটির সদস্য সংখ্যা বাড়াতে পারে অধ্যক্ষের সচিবালয়
কেন এই বিধায়কদের কমিটিতে ঠাঁই দেওয়ানোর জন্য সচিবালয়কে কার্যত ঝাঁপিয়ে পড়তে হয়েছে?

একের পর এক উপনির্বাচনে ছক্কা মেরে দলের বিধায়ক সংখ্যা বাড়িয়ে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। সাম্প্রতিক উপনির্বাচনের পর তাদের প্রতীকে জয়ী বিধায়কের সংখ্যা ২১৭। এছাড়া বিজেপি থেকে আসা আরও পাঁচ বিধায়কও শাসক শিবিরকে ভারী করেছেন। সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বালিগঞ্জে ভোট হবে ছ’মাসের মধ্যে। তৃণমূল সেখানেও হেলায় জয় পাবে, নিশ্চিত তৃণমূল নেতৃত্ব। পাশাপাশি বিজেপি থেকে আরও কয়েকজনকে ভাঙিয়ে আনার প্ল্যান রয়েছে তৃণমূলের। সব মিলিয়ে বামফ্রন্টের ২৩৫-এর রেকর্ড ভাঙাটা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করছে জোড়াফুল শিবির।
কিন্তু শাসকের বিধায়ক সংখ্যা বেড়ে চলায় বিধানসভার কমিটিতে সকলকে ঠাঁই দেওয়ার সমস্যা তৈরি হয়েছে। সমাধানে আপাতত একটি কমিটির সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করার রাস্তা বেছে নিচ্ছে অধ্যক্ষের সচিবালয়। এজন্য আজ শুক্রবার অধ্যক্ষের পৌরোহিত্যে বসবে রুলস কমিটির বৈঠক। রিফমর্স কমিটির সদস্য সংখ্যা ১৫ থেকে বাড়িয়ে ২০ করা হতে পারে। কিন্তু তাতেও পুরো সমস্যা মিটবে না। তাই বর্তমানে তিনটি করে কমিটির সদস্য হয়ে রয়েছেন এমন কয়েকজন তৃণমূল বিধায়কের শরণাপন্ন হতে হচ্ছে সচিবালয়কে। তাঁদের একটি করে কমিটি থেকে পদত্যাগ করানোর নির্দেশ দিয়েছে পরিষদীয় নেতৃত্ব। সেই জায়গায় নবনির্বাচিত বিধায়কদের নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
কেন এই বিধায়কদের কমিটিতে ঠাঁই দেওয়ানোর জন্য সচিবালয়কে কার্যত ঝাঁপিয়ে পড়তে হয়েছে? সচিবালয় সূত্রের খবর, বিভিন্ন দপ্তরের কাজের পর্যালোচনা করতে বিধানসভায় ১৫টি স্থায়ী কমিটি রয়েছে। সেগুলির সদস্য সংখ্যা ১৫। এছাড়া বিধানসভার নানা কাজকর্ম খতিয়ে দেখার জন্য রয়েছে আরও ২৬টি কমিটি। এগুলিতে সর্বোচ্চ ২০ জন বিধায়ক থাকতে পারেন। প্রত্যেক বিধায়ককে ন্যূনতম দুটি করে কমিটির সদস্য করা হয়। সেক্ষেত্রে ফি মাসে প্রত্যেক কমিটির দুটি করে মিটিং হলে মোট চারবার আলোচনায় বসার জন্য বিধায়করা নিশ্চিতভাবে ৬০ হাজার টাকা ভাতা পাবেন। দু’দফার উপনির্বাচনে জোড়াফুল প্রতীকে যে সাতজন জিতেছেন তাঁদের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বিধি অনুযায়ী বিধানসভার কোনও কমিটির সদস্য হবেন না। কিন্তু বাকি পাঁচজনকে অন্তত দুটি করে কমিটিতে রাখতে হবে তাঁদের বৈঠক-ভাতা নিশ্চিত করতে। উপায় খুঁজতে গিয়ে একমাত্র রিফমর্স কমিটিতে আরও পাঁচজন নতুন সদস্য করার সুযোগ থাকার বিষয়টি সামনে আসে। পাশাপাশি কলকাতা বা কাছেপিঠের বাসিন্দা এবং তিনটি করে কমিটির সদস্য হয়ে থাকা কয়েকজনের নামের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তাঁদের একটি করে কমিটির পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ানোর পর সেই শূন্যস্থানে নবনির্বাচিত বিধায়কদের নাম ঢুকিয়ে তাঁদের বৈঠক-ভাতা সুনিশ্চিত করা যাবে। তবে ভবিষ্যতে আরও একাধিক উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থীরা জিতলে কী হবে? ভেবে এখনই আকুল আধিকারিকরা।