হাড়োয়াতে পীর গোরাচাঁদের এক মাস ব্যাপী মেলায় মিলন সর্বধর্মের মানুষের

মেলায় কাওয়ালি তরাণা, মানিকপীরের গান, নানারকম বাজনা, সার্কাস, ম্যাজিক প্রদর্শনী ও বাউল গানের হাট বসে।

March 16, 2023 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi
পীর গোরাচাঁদের মেলা। নিজস্ব চিত্র

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: পীর গোরাচাঁদ বা গোরাই পীর হলেন মধ্যযুগে ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে আরব থেকে বাংলায় আগত এক সুফি সন্ত। শোনা যায়, তাঁর জন্ম আরবের মক্কা নগরীতে। প্রকৃত নাম পীর হজরত শাহ সৈয়দ আব্বাস আলী গাজী। চতুর্দশ শতকের গোড়ার দিকে গুরু শাহজালাল-এর নির্দেশে আরও একুশজন পীরভাইকে সঙ্গে নিয়ে দক্ষিণ বাংলার সাবেক চব্বিশ পরগণার (বর্তমানে উত্তর চব্বিশ পরগণা) বালাণ্ডা পরগনায় (বর্তমানে বেড়াচাঁপা ও বসিরহাট অঞ্চল) তিনি ধর্মপ্রচারে আসেন।

প্রচলিত লোককথা অনুযায়ী, গোরাচাঁদ চন্দ্রকেতুগড়ে এসে রাজা চন্দ্রকেতুকে তাঁর অলৌকিক ক্ষমতা প্রদর্শন করেন। রাজার লোহার কলাকে সত্যিকারের পাকা কলায় রূপান্তরিত করেন এবং রাজপ্রাসাদের চারিদিকে লোহার বেড়ায় চাঁপাফুল ফুটিয়ে তোলেন। যা পরবর্তীকালে ঐ স্থানের নাম হয় বেড়াচাঁপা।

চন্দ্রকেতুগড়। ছবি সংগৃহীত

লোককথা অনুসারে, অলৌকিক ক্ষমতাসম্পন্ন এই পীরের স্থানীয় রাজাদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে এবং লড়াইয়ে তিনি নিহত হন। বসিরহাটের হাড়োয়ায় বিদ্যাধরী নদীর তীরে তার সমাধি দরগাহ বর্তমান। হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের মানুষ তাকে আজও শ্রদ্ধাভক্তি করে।

পীর গোরা চাঁদের মাজার (সমাধিস্থল)। ছবি সৌজন্যে: doorersathi

উত্তর ২৪ পরগণার হাড়োয়ায় পীর গোরাচাঁদের সমাধি দরগাহে ১২ই ফাল্গুন তার মৃত্যুর দিন স্মরণ করে প্রতি বছর বিশেষ উৎসব ও মেলা শুরু হয়। গোরাচাঁদের মাজার চত্বরে চলে ধর্মীয় অনুষ্ঠান। সেই উপলক্ষে এক মাস ধরে চলে মেলা। দেশ-বিদেশ থেকে বহু মানুষ আসেন এখানে। মেলায় কাওয়ালি তরাণা, মানিকপীরের গান, নানারকম বাজনা, সার্কাস, ম্যাজিক প্রদর্শনী ও বাউল গানের হাট বসে। ‘সোন্দল’ বা শোভাযাত্রা করে আগত ভক্তদের উপহার খাদিমদাররা পীরের সমাধির উপর সাজিয়ে গোলাপজল ছিটিয়ে দেন। প্রসঙ্গত, যারা মাজার দেখাশোনা করেন তাদেরকে খাদিমদার বলা হয়। বারগোপপুরের গোপদের আনা গোদুগ্ধ সর্বপ্রথম পীরের সমাধিতে ঢেলে দেওয়া হয়।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen