চন্দননগর নয়! কোথায় প্রথম শুরু হয়েছিল জগদ্ধাত্রী পুজো? জানুন ইতিহাস

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ১৫:১০: জগদ্ধাত্রী হলেন দেবী দুর্গার এক রূপ। জগৎকে ধারণ করেন তিনি, তাই তাঁর নাম জগদ্ধাত্রী। দেবীর বিশাল রূপ, টানা চোখ, ত্রিনয়ন, চার হাতে অসুর সংহারের অস্ত্র, আর সিংহবাহিনী রূপে তিনি পূজিত হন সারা বাংলায়। দুর্গাপুজোর মতোই কার্তিক মাসে পাঁচদিন ধরে চলে জগদ্ধাত্রী পুজো।
জগদ্ধাত্রী পুজো ( Jagaddhatri Puja) মানেই চন্দননগরের আলোকসজ্জা, শিল্পের সমাহার আর দর্শনার্থীর ঢল। এই চিত্রই যেন আজ রাজ্যবাসীর মনে গেঁথে আছে। কিন্তু ইতিহাস বলছে, এই পুজোর সূচনা হয়েছিল নদীয়ার কৃষ্ণনগরের মাটিতে, রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের হাত ধরে। সেই ঐতিহ্য আজও গর্বের সঙ্গে বহন করে চলেছে কৃষ্ণনগরবাসী।
১৭৬৩-৬৪ সালের দিকে, ব্রিটিশ শাসনকালে নবাব মিরকাশিমের বিদ্রোহ দমনের সময় বন্দি হন কৃষ্ণনগরের রাজা কৃষ্ণচন্দ্র ও তাঁর পুত্র। বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়ে জানতে পারেন দুর্গাপুজো শেষ। কথিত আছে, মন খারাপের সেই মুহূর্তে দেবী স্বপ্নে দেখা দিয়ে জগদ্ধাত্রী রূপে পুজোর নির্দেশ দেন। রাজা সেই আদেশ মেনে শুরু করেন নতুন পুজো, যা প্রথমে রাজবাড়িতে সীমাবদ্ধ থাকলেও পরে তা শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর সূচনা হয় তার কিছু বছর পর।
আরেক মতে, রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের ঘনিষ্ঠ ফরাসি দেওয়ান ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির পুজো দেখে মুগ্ধ হয়ে চন্দননগরের লক্ষ্মীগঞ্জে নিজের বাড়িতে পুজো শুরু করেন। যদিও তাঁর মৃত্যুর সময়কাল (১৭৫৬) নিয়ে মতভেদ থাকায় এই কাহিনির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
তৃতীয় মতে, রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের দেওয়ান দাতারাম শূরের বিধবা কন্যা আনুমানিক ১৭৬২ সালে ভদ্রেশ্বরের গৌরহাটি অঞ্চলে প্রথম জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু করেন। রাজা কৃষ্ণচন্দ্র এই পুজোতেও অনুদান দিতেন বলে জানা যায়। সেই পারিবারিক পুজোই পরে সর্বজনীন হয়ে ওঠে।
পরবর্তীকালে এই পুজো স্থানান্তরিত হয় শিবতলা অঞ্চলে। অর্থনৈতিক সংকটে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হলে গৌরহাটি অঞ্চলের বাসিন্দারা পুজোর দায়িত্ব নেন। আজ সেই পুজোই পরিচিত ‘তেঁতুলতলার পুজো’ নামে।