‘নো এন্ট্রি জোনে’ অঞ্জলি, আইনি নোটিসের কোপে পড়তে পারেন নুসরত, সৃজিত, মহুয়ারা

শনিবার সকালে নিউ আলিপুরের সুরুচি সঙ্ঘের পুজোয় অঞ্জলি দিতে গিয়েছিলেন নুসরত, সৃজিত, মিথিলা। ছিলেন নুসরতের স্বামী নিখিল জৈনও

October 25, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

অষ্টমীর সকালে পুজো মণ্ডপের ‘নো এন্ট্রি জোনে’ ঢুকে অঞ্জলি দিয়ে আদালত অবমাননার দায়ে পড়তে পারেন সাংসদ-অভিনেত্রী নুসরত জাহান, সাংসদ মহুয়া মৈত্র, পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রী রাফায়েত রশিদ মিথিলা।

শনিবার সকালে নিউ আলিপুরের সুরুচি সঙ্ঘের পুজোয় অঞ্জলি দিতে গিয়েছিলেন নুসরত, সৃজিত, মিথিলা। ছিলেন নুসরতের স্বামী নিখিল জৈনও। ওই পুজোটি মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের পুজো বলেই সমধিক পরিচিত। প্রতিবারই সেখানে বিভিন্ন সেলিব্রিটিরা যান অঞ্জলি দিতে এবং ঢাকের তালে নাচতে। কিন্তু এ বারের পরিস্থিতি আলাদা। এ বার করোনা পরিস্থিতির কারণে কলকাতা হাইকোর্ট সমস্ত পুজো মণ্ডপ ‘দর্শকশূন্য’ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। বলা হয়েছে, স্থানীয় বাসিন্দা এবং পুজোর উদ্যোক্তা ছাড়া কেউ ‘নো এন্ট্রি জোনে’ ঢুকতে পারবেন না। তাঁদের সংখ্যাও বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ, ‘বহিরাগত দর্শকদের’ প্রবেশ নিষিদ্ধ। প্রসঙ্গত, কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া তাঁর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বিভিন্ন মণ্ডপে ঘুরে অঞ্জলি দিয়েছেন বলে তাঁর ফেসবুক পেজে দেখা গিয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, নুসরত-সৃজিতরা অঞ্জলি দিয়েছেন হাইকোর্ট নির্ধারিত মণ্ডপের ‘নো এন্ট্রি জোনে’। সেখান থেকেই জন্ম হয়েছে বিতর্কের। কারণ, কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দুই বিচারপতি স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিলেন, মণ্ডপের চারদিকে ব্যারিকেড করে তৈরি করতে হবে ‘নো এন্ট্রি জোন’। সেই ‘নিষিদ্ধ’ এলাকায় পুজোর উপাচারের প্রয়োজনে উদ্যোক্তাদের তরফে আদালতের ঠিক করে দেওয়া সংখ্যার কয়েকজন ঢুকতে পারবেন বলে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।

সূত্রের খবর, আদালতের ‘নির্দেশ’ ভেঙে নুসরতদের ওই মণ্ডপে ভিড় করার ঘটনাকে আদালতে ‘হাতিয়ার’ করতে চলেছেন পুজো মামলার আইনজীবীরা। মামলার আবেদনকারীর আইনজীবীদের বক্তব্য স্পষ্ট— আদালতের নির্দেশ সকলের জন্যই প্রযোজ্য। সেক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিদের নিয়ম মানার ক্ষেত্রে আরও ‘সদর্থক এবং ইতিবাচক’ ভূমিকা নেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু বাস্তবে তা দেখা যায়নি।

নুসরত-ঘনিষ্ঠদের অবশ্য দাবি, তিনি গত কয়েকবছর ধরেই ওই ক্লাবের সদস্য।তাই তিনি কর্মকর্তাদের তরফে ‘নো এন্ট্রি জোনে’ ঢুকতেই পারেন। একই ভাবে সৃজিতকেও ‘ক্লাব সদস্য’ বলেই বর্ণনা করেছেন তাঁর ঘনিষ্ঠরা। কিন্তু নুসরতের স্বামী নিখিল এবং সৃজিতের স্ত্রী মিথিলা সম্পর্কে তা বলা যায় কি না, তা নিয়ে তর্কের অবকাশ রয়েছে। মিথিলা আদতে বাংলাদেশের নাগরিক। সৃজিতের সঙ্গে মাত্রই কয়েকমাস আগে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন তিনি। তিনি কি ওই ক্লাবের সদস্য হতে পারেন?নুসরতের স্বামী নিখিলকে নিয়েও একই প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। যে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে মহুয়াকে নিয়েও। মিথিলা এবং নিখিল সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব এদিন মেলেনি। বেশি রাতে মহুয়াকে ফোন করা হয়েছিল তাঁর বক্তব্য জানতে। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি।

লক্ষীপুজোর পর আবার ওই মামলার শুনানি। তার আগে আদালতের নির্দেশ কতটা পালন করা হল, সে বিষয়ে আদালতে হলফনামা জমা দিতে হবে রাজ্যকে। পুজো মামলার সঙ্গে যুক্ত আইনজীবীদের তরফে ইঙ্গিত মিলছে যে, পরবর্তী শুনানির সময় এদিনের অঞ্জলি দেওয়ার ঘটনাকে হাতিয়ার করতে পারেন মামলাকারী। তবে এখনই মামলাকারী নুসরতদের আইনি নোটিস পাঠাবেন কি না, তা নিয়ে কোনও নিশ্চিত জবাব পাওয়া যায়নি। এখন দেখার, রবিবার, নবমীর দিন কোনও মণ্ডপে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয় কি না বা নুসরতরা ওই বিষয়ে মুখ খোলেন কি না। মন্ত্রীর অরূপ গোটা বিষয়ে কী ভূমিকা নেন, তা-ও দেখার।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen