মুখ্যমন্ত্রীর হাতে গড়া হাসপাতালে অবদান রাখতে চেয়ে মরণোত্তর দেহদান বৃদ্ধার!

এ রাজ্যে করোনা আক্রান্ত বিভিন্ন রোগীর মৃতদেহ চিকিৎসা শাস্ত্রের ব্যবহারের জন্য মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

June 23, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

একটা সময়ে ‘রক্তদান জীবনদান’ এই স্লোগান ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় হয়েছিল। সেই জনপ্রিয়তার জন্য আজ রক্তদান একটি আন্দোলনের রূপরেখা নিয়েছে। রক্তদানের মতো জনপ্রিয় না হলেও আস্তে আস্তে মানুষের মধ্যে দেহদান করার প্রবণতা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। এ রাজ্যে করোনা আক্রান্ত বিভিন্ন রোগীর মৃতদেহ চিকিৎসা শাস্ত্রের ব্যবহারের জন্য মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

দেহদানের এই প্রচার কোথাও যেন মনের মধ্যে গেঁথে গিয়েছিল ৭২ বছরের বীথিকা মণ্ডলের (Bithika Mondal) । রামপুরহাট পুরসভার অন্তর্গত সারদাপল্লির বাসিন্দা তিনি।

তাঁর দীর্ঘদিনের ইচ্ছা ছিল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে রামপুরহাটে যে মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতাল গড়ে উঠেছে তার জন্য তিনি কিছু করতে চান। তারই অংশ হিসেবে তিনি স্থির করেছিলেন যে তাঁর মৃত্যুর পর কোনও সৎকার নয়, বরং চিকিৎসাশাস্ত্রের জন্য এবং আগামী দিনের চিকিৎসকদের জন্য তাঁর দেহকে তিনি রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দান করবেন। সেই শেষ ইচ্ছার কথা তিনি জানিয়েছিলেন তাঁর সন্তানদের।

মঙ্গলবার মায়ের শেষ ইচ্ছে পূরণ করলেন ছেলেমেয়েরা। মৃতদেহ সৎকার না করে দান করলেন রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। করোনাবিধি মেনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দেহ গ্রহণ করে পরিবারের হাতে শংসাপত্র তুলে দেন।

বীথিকা মণ্ডলের স্বামী দমকল বিভাগে কর্মরত ছিলেন। স্বামীর মৃত্যুর পর তাঁর পেনশন নিয়ে সংসার চলত। কিন্তু সামান্য পেনশনে দুই মেয়ে ও এক ছেলের ভরণপোষণ করতে নুন আনতে পান্তা ফুরনো অবস্থা। কিন্তু অভাবের মধ্যেও তাঁর শেষ ইচ্ছে ছিল দেহ পুড়িয়ে দিয়ে বিলীন না করে হাসপাতালে দান করা হোক।

সোমবার তিনি কিডনি ও হার্টের সমস্যায় রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। মঙ্গলবার দুপুরে মৃত্যু হয়। এরপরেই শেষ ইচ্ছে পূরণ করতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন ছেলেমেয়েরা। করোনা অতিমারির কারণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রথমে দেহ নিতেই চায়নি। পরে সমস্ত বিধি মেনে বীথিকা মণ্ডলের শেষ ইচ্ছে পূরণ করা হয়।

মেয়ে শান্তা মণ্ডল বলেন, ‘মায়ের শেষ ইচ্ছে পূরণ করতে পেরে দুঃখের সময়েও ভালো লাগছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দেহ না নিলে খুব কষ্ট পেতাম।‘

রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার ও ভাইস প্রিন্সিপাল ডঃ পলাশ মিত্র বলেন, ‘মৃতদেহের করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ রিপোর্ট হওয়ার পরেই আমরা দেহ গ্রহণ করি। আরও বেশি করে মানুষ এই কাজে এগিয়ে আসুক।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen