করোনা আবহে এবার বাড়িতে বসেই উপভোগ করুন দুর্গাপুজো, অনলাইনে
জো দেখতে মানুষের ঢল নামবে কতটা, তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। কলকাতার ডাকসাইটে পুজোগুলি তাই এবার অনলাইনে ঠাকুর দেখার আয়োজন করার দিকেও এগচ্ছে।
দুর্গাপুজো এবার অনলাইনে! করোনার কারণে বাজেট কাটছাঁট করছে বেশিরভাগ পুজো কমিটি। তাই জাঁকজমক যে কিছুটা কমবে, তা বলাই বাহুল্য। সবচেয়ে বড় কথা, পুজো দেখতে মানুষের ঢল নামবে কতটা, তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। কলকাতার ডাকসাইটে পুজোগুলি তাই এবার অনলাইনে ঠাকুর দেখার আয়োজন করার দিকেও এগচ্ছে।
পুজোর আর মাস তিনেক বাকি। অন্যান্য বছর জোরকদমে প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় এই সময়। একে অপরকে টেক্কা দিতে গোপনে চলে পুজোর থিমের রূপদান। প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষের রুটি-রুজির জোগান দেয় দুর্গাপুজো। এবারের ছবিটা একেবারেই অন্য। কলকাতার নামজাদা একটি পুজো কমিটির কর্তার কথায়, ‘আমরা এখনও পুজোর বাজেট নিয়ে ভাবিইনি। চলতি মাসের শেষের দিকে এই বিষয়ে কমিটির বৈঠক ডেকেছি। স্পনসর হিসেবে কাদের পাওয়া যাবে, কত টাকা পাওয়া যাবে, তা নিয়ে আলোচনা করব। এটা আর বলার আপেক্ষা রাখে না, অন্যান্যবারের জৌলুস এবার আর থাকবে না। বাজেট কাটছাঁট হবেই। করোনার সংক্রমণ কতটা জিইয়ে থাকবে, সরকারি বিধিনিষেধই বা কতটা থাকবে, কেউই জানি না। ফলে সব মিলিয়ে আমরা বেশ ধন্দে আছি। মানুষ কতটা সাড়া দেবে, তা নিয়েও চিন্তার শেষ নেই।’

সেই দর্শকের কথা ভেবেই এবার অনলাইনে ঠাকুর দেখার পথে এগচ্ছে কলকাতার নামকরা পুজো কমিটিগুলি। শহরের পুজো উদ্যোক্তাদের মঞ্চ ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’ ঠিক করেছে, তারা অনলাইনেই পুজো দেখাবে দর্শকদের। ফোরাম ফর দুর্গোৎসব এবং ‘শিবমন্দির’ পুজো কমিটির অন্যতম কর্তা পার্থ ঘোষের কথায়, ‘ঘরে বসেই মানুষ যাতে পুজোর আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, আমরা সেই চেষ্টা চালাচ্ছি। বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে যে পুজো দেখানো হয়, তেমন নিছক পুজো-পরিক্রমা নয়। একেবারে অন্য আঙ্গিকে দেখানো হবে সেই পুজো। প্রাথমিকভাবে ঠিক করেছি, কলাবউ স্নান থেকে শুরু করে মহাষ্টমীর অঞ্জলি, বা সন্ধিপুজোর মতো সব আচার-অনুষ্ঠানগুলিকে দেখানো হবে অনলাইনে। সরাসরি সম্প্রচারিত হবে চণ্ডীপাঠ থেকে আরতি। পাশাপাশি মণ্ডপের কারুকাজ, আলোকসজ্জা তো আছেই। কোন কোন পুজো কমিটি কী কী দেখাবে, সেগুলি পরবর্তীকালে ঠিক করা হবে।’
ভাবনা অনুযায়ী অনলাইনের প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে ফোরাম ফর দুর্গোৎসব। তাদের অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে পুজোর আড্ডা। যেখানে অংশ নিচ্ছেন বিভিন্ন কমিটির কর্তা, শিল্পী ও কলাকুশলীরা। উম-পুনের পর ইন্টারনেট বিভ্রাটে তা সাময়িক বন্ধ ছিল। শীঘ্রই তা চালু হবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের কর্তারা। তাঁরা বলছেন, অনলাইনে পুজো দেখানোর বিষয়টি প্রাথমিকভাবে আলোচনা হয়েছে এবং সম্মতি মিলেছে। আপাতত পুজো নিয়ে লাইভ আড্ডা চলবে। এরই মধ্যে চূড়ান্ত হবে অনলাইন পুজোর ব্যাপারটি। প্রয়োজনে কোনও পোর্টাল বা বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়া হবে। করোনা আতঙ্কে ঠাকুর দেখতে আসতে না পারলেও আফশোস নেই। দর্শকরা যাতে শহরের পুজোগুলির আনন্দ থেকে বঞ্চিত না হন, সার্বিকভাবে সেই চেষ্টাই সর্বোতভাবে করা হবে।