LIC-কাণ্ডে আদানিকে রক্ষা মোদীর, তদন্তের দাবি বিরোধীদের

October 26, 2025 | 2 min read
Published by: Raj

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১১.২০: ওয়াশিংটন পোস্টের এক বিস্ফোরক প্রতিবেদনের পর ফের চাপে মোদী সরকার, কারণ ওই আন্তর্জাতিক দৈনিক জানিয়েছে, চলতি বছরের মে মাসে নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) সরকার রাষ্ট্রায়ত্ত জীবন বীমা কর্পোরেশনকে (Life Insurance Corporation of India) আদানি গোষ্ঠীর (Adani Group) সংস্থাগুলিতে প্রায় ৩.৯ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে বাধ্য করেছিল। এই খবরে শনিবার বিরোধীরা অভিযোগ করেছে, জনগণের করের টাকা ব্যক্তিগত কর্পোরেট স্বার্থে অপচয় করা হয়েছে। বিরোধীরা অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি তুলেছে।

যদিও এলআইসি (LIC) ও আদানি গোষ্ঠী উভয়েই কোনও অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেছে, তবুও বিরোধীদের ক্ষোভ কমেনি। কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, বামফ্রন্ট-সহ একাধিক দল দাবি করেছে, ২০২৩ সালের হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টে (Hindenburg) যে গুরুতর আর্থিক জালিয়াতি ও শেয়ার কারচুপির অভিযোগ ওঠে, তার পরেও সরকারী সংস্থাগুলিকে জোর করে ওই কর্পোরেট গোষ্ঠীতে বিনিয়োগ করানো হয়েছে।

সেই রিপোর্টের পর থেকেই সংসদে বারবার বিরোধীরা তদন্তের দাবি জানিয়েছিল, কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করে এসেছে। কংগ্রেস বরাবরই আদানি গোষ্ঠীকে “প্রধানমন্ত্রীর প্রিয় শিল্পগোষ্ঠী” বলে কটাক্ষ করেছে।

ওয়াশিংটন পোস্টের দাবি, তাদের হাতে থাকা আর্থিক পরিষেবা দপ্তর, নীতি আয়োগ ও এলআইসির অভ্যন্তরীণ নথি প্রমাণ করছে যে, সরকারি স্তরে সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রায় ৩.৪ বিলিয়ন ডলার আদানির কর্পোরেট বন্ডে এবং আরও প্রায় ৫০ কোটি ডলার তাদের সহযোগী সংস্থাগুলির শেয়ারে বিনিয়োগ করা হয়েছিল। অথচ ওই নথিতেই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিল যে, আদানির শেয়ার সংবেদনশীল, ফলে স্বল্পমেয়াদে দামের ওঠানামা হতে পারে।

রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৩ সালে হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট প্রকাশের পর এলআইসি প্রায় ৫.৬ বিলিয়ন ডলারের সম্ভাব্য লাভ হারায়। তখন তাদের বিনিয়োগমূল্য নেমে আসে ৩ বিলিয়ন ডলারে, যা ২০২৪ সালের মার্চে সামান্য ঘুরে দাঁড়ালেও আগের ক্ষতি পূরণ হয়নি।

গত বছর মার্কিন প্রসিকিউটরদের অভিযোগেও বলা হয়েছিল, আদানি গোষ্ঠী মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে কোটি-কোটি ডলার তুলেছিল এবং প্রায় ২৫ কোটি ডলারের ঘুষ দিয়ে সরকারি সৌর প্রকল্পের চুক্তি পেয়েছিল।

কংগ্রেস মুখপাত্র জয়রাম রমেশ বলেছেন, “সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল কোন চাপে অর্থ মন্ত্রক ও নীতি আয়োগের আধিকারিকরা এমন সিদ্ধান্ত নিলেন যে, তাঁদের কাজ এখন এক ব্যক্তিগত কোম্পানিকে আর্থিক বিপর্যয় থেকে উদ্ধার করা?”

বিরোধীদের মতে, এই ঘটনা প্রমাণ করে যে মোদী সরকারের নীতিনির্ধারণ আজ সম্পূর্ণভাবে কর্পোরেট স্বার্থনির্ভর, আর দেশের সাধারণ মানুষের অর্থ দিয়ে চলছে প্রিয় শিল্পপতির অর্থনৈতিক রক্ষা অভিযান।

 

 

 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen