শাড়িতে নেতাজির মুখাবয়াব তৈরি ফুলিয়ার তাঁত শিল্পীর

আগামী রবিবার ২৩ জানুয়ারি দেশব্যাপী পালিত হবে নেতাজির ১২৫তম জন্মদিবস। তার আগে ফুলিয়া তাঁতশিল্পীর এমন সৃষ্টি দেখে উচ্ছ্বসিত প্রতিবেশী ও পরিজনেরা

January 21, 2022 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

শাড়িতে কখনও তিনি ফুটিয়ে তুলেছিলেন ‘চিরসবুজ হোক মন’। কখনও আবার ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্প। এবার জামদানি শাড়িতে দেশনায়ক নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মুখাবয়ব ফুটিয়ে তুলেছেন ফুলিয়ার পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত তাঁতশিল্পী বীরেনকুমার বসাক। নেতাজির ১২৫তম জন্মদিনে এভাবেই তাঁকে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে চান ৭১ বছর বয়সের এই শিল্পী। ওই শাড়িটি আগামী দিনে কলকাতার নেতাজি ভবনের হাতে তুলে দিতে চান শিল্পী।

আগামী রবিবার ২৩ জানুয়ারি দেশব্যাপী পালিত হবে নেতাজির ১২৫তম জন্মদিবস। তার আগে ফুলিয়া তাঁতশিল্পীর এমন সৃষ্টি দেখে উচ্ছ্বসিত প্রতিবেশী ও পরিজনেরা। তাঁদের অনেকেই বলেন, এর আগেও দেশের প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীর মুখাবয়ব শাড়িতে ফুটিয়ে তুলে নজির গড়েছিলেন বীরেনবাবু. সেই তালিকায় এবার যুক্ত হয়েছে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু।

কোরা সিল্কের উপর কালো সুতোর কাজে এমন শাড়ি তৈরিতে শিল্পীর সময় লেগেছে প্রায় দেড় মাস। শাড়িটি দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে তিন ফুট। খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। বীরেনবাবু বলেন, দেশনায়ককে শ্রদ্ধা জানাতে নতুন কিছু করার ভাবনা আগে থেকেই ছিল। সেই মতো এবার জামদানিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সুভাষচন্দ্র বসুর মুখাবয়ব। এক নজরে দেখলে মনে হবে এটি ফাইন আর্টের কাজ। কিন্তু সুতোর মাধ্যমেই কাজটি সম্পন্ন করা হয়েছে। তবে দেশনেতাকে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাতে এই শাড়িটি বিক্রি করতে চাই না। পরবর্তীতে কেউ বরাত দিলে এমন শাড়ি আবারও তৈরি করে দেওয়া হবে।

শিল্পীর ছেলে অভিনব বসাক বলেন, ইতিমধ্যে আমরা নেতাজি ভবনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাঁদের সম্মতি পেলে শাড়িটি বিনামূল্যে নেতাজি ভবনের হাতে তুলে দেওয়া হবে। ফুলিয়া চটকাতলার বাসিন্দা বীরেনবাবুর জন্ম বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের ঘরিন্দ্রা গ্রামে। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় তিনি ফুলিয়া আসেন। সেই সময় ফুলিয়ার স্থানীয় বাসিন্দা যোগেন্দ্রমোহন বসাকের কাছেই তাঁর ঠাঁই হয়। মাত্র ১৫ বছর বয়সে শুরু হয় শিল্পীর জীবন সংগ্রাম। তখন থেকেই তিনি তাঁত বোনার কাজ শুরু করেন।

কর্মজীবনের প্রথম ১০ বছর শিল্পী তাঁত বোনার কাজে যুক্ত ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি কাপড় ফেরি করে বিক্রি করেন। এছাড়াও দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর সময় ধরে জামদানি শাড়ি নিয়ে কাজ করেছেন। গত বছর ৯ নভেম্বর তিনি পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হন। এছাড়াও তাঁর ঝুলিতে রয়েছে রাষ্ট্রপতি পুরস্কার, জাতীয় পুরস্কার। এমনকী বিশ্বের বড় শাড়ি তৈরির জন্য গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসেও তাঁর নাম নথিভুক্ত হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই বলেন, বিভিন্ন সমস্যার কারণে বর্তমানে অনেকেই এই পেশা থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু বীরেনবাবু আমাদের নতুন করে প্রেরণা যোগাচ্ছেন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen