মিউচুয়াল ফান্ডে লগ্নিতে ডাকঘর গুলিকে দায়িত্ব কেন্দ্রের, তবে কী মধ্যবিত্ত ও গ্রামীণ মানুষকে ঝুঁকির বাজারে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে?
পরিসংখ্যান বলছে, ২০২২-২৩ সালে মিউচুয়াল ফান্ডে ৪০ লক্ষ নতুন লগ্নিকারী যুক্ত হয়েছিলেন। ২০২৩-২৪-এ সংখ্যাটা দাঁড়ায় ৬৯ লক্ষে

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৩.০০: গত এক দশকে মূল্যবৃদ্ধি, সোনা, বাড়ি-গাড়ির দাম থেকে শুরু করে শেয়ার বাজার—সব কিছু যেন রকেটের গতিতে ছুটছে। ব্যতিক্রম শুধু আয় এবং কর্মসংস্থানে। মোদী সরকারের ১১ বছরে সাধারণ মানুষের, বিশেষত মধ্যবিত্তের আয় কম, অথচ খরচ বেড়েছে বহু গুণ। তার সরাসরি প্রভাব পড়েছে সঞ্চয়ের ওপর। ব্যাঙ্কের সুদের(Bank Interest) হারও আশানুরূপ নয়, ফলে বহু মানুষ এখন নিরাপদ এফডি ছেড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগের দিকে ঝুঁকতে পারেন, বেশি লাভের জন্য। এই মনোভাব আঁচ করতে পেরই এবার আসরে নেমে পড়েছে কেন্দ্র!
এই পরিস্থিতিতে সরকারের লক্ষ্য এবার গ্রামীণ ভারতের দিকে। শহরের মধ্যবিত্তদের একাংশ শেয়ার বাজার ও মিউচুয়াল ফান্ডে লগ্নি শুরু করলেও, এখনও গ্রামাঞ্চলে সেই প্রবণতাবি এইভাবে বৃদ্ধি পায়নি। আর তাই মিউচুয়াল ফান্ডে(Mutual Fund) লগ্নির প্রসার ঘটাতে ডাকবিভাগকে পাশে টানল কেন্দ্র। বৃহস্পতিবার মুম্বাইয়ে ডাকবিভাগ ও অ্যাসোসিয়েশন অব মিউচুয়াল ফান্ডস ইন ইন্ডিয়ার (AMFI) মধ্যে এক সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়েছে। লক্ষ্য—গ্রামাঞ্চলের কোটি কোটি মানুষের কেওয়াইসি ও তথ্য যাচাইয়ের দায়িত্ব নিয়ে বিনিয়োগ প্রক্রিয়াকে সহজ করা।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০২২-২৩ সালে মিউচুয়াল ফান্ডে ৪০ লক্ষ নতুন লগ্নিকারী যুক্ত হয়েছিলেন। ২০২৩-২৪-এ সংখ্যাটা দাঁড়ায় ৬৯ লক্ষে। আর চলতি অর্থবর্ষে সেই সংখ্যা ৯০ লক্ষ ছাড়াবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এসআইপি এবং মিউচুয়াল ফান্ডে এই স্রোতের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে এখন ডাকবিভাগকে মাঠে নামাচ্ছে কেন্দ্র।
সরকারের দাবি, এতে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিগুলি যেমন উপকৃত হবে, তেমনই সাধারণ গ্রামীণ গ্রাহকদের জন্যও এটি সুবিধাজনক। কারণ অনলাইন কেওয়াইসি সবার পক্ষেই সম্ভব নয়। দরকারে ঘরে গিয়ে ভেরিফিকেশন করবে ডাকবিভাগ।
তবে প্রশ্ন উঠছে—যেখানে ডাকবিভাগের মৌলিক পরিষেবাই বহু ক্ষেত্রে সঠিকভাবে মেলে না, সেখানে এই অতিরিক্ত দায়িত্ব কতটা ফলপ্রসূ হবে সেটাই দেখার! অনেকের মতামত, সরকার মূলত মধ্যবিত্ত ও গ্রামীণ শ্রেণিকে ঝুঁকির বাজারে ঠেলে দিচ্ছে। যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের যুক্তি, দেশের আর্থিক কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করতেই এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে কেন্দ্র। সেবির নিয়ম মেনে সমস্ত গোপনীয়তা বজায় রেখেই কাজ হবে বলেও আশ্বাস মিলেছে। সব মিলিয়ে, মিউচুয়াল ফান্ড এখন শুধু শহুরে নয়—গ্রাম বাংলাতেও জায়গা করে নিতে চলেছে ডাকঘরের হাত ধরে