রীতি মেনে শান্তিনিকেতনে শুরু পৌষমেলা, প্রথম দিনেই উপচে পড়ল ভিড়
Authored By:

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২০:০০: উৎসবের রঙে রঙিন শান্তিনিকেতন (Shantiniketan)। শীতের সকালেই শুরু হল বিশ্বখ্যাত পৌষমেলা (Poush Mela) ও পৌষ উৎসব। প্রথম দিন থেকেই মেলার মাঠে দেখা গেল সেই পরিচিত জনজোয়ার। দেশ-বিদেশের পর্যটক আর স্থানীয় মানুষের ভিড়ে মেলা প্রাঙ্গণ হয়ে উঠল সত্যিকারের মিলনক্ষেত্র।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টায় শান্তিনিকেতনের ছাতিমতলায় ব্রহ্ম উপাসনার মধ্য দিয়ে চলতি বছরের উৎসবের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়। পরনে সাদা ধুতি-পাঞ্জাবি ও শাড়িতে সজ্জিত বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মী এবং আধিকারিকদের উপস্থিতিতে ছাতিমতলা হয়ে ওঠে গাম্ভীর্যপূর্ণ। উপাসনা অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করেন বিশ্বভারতীর সঙ্গীত ভবনের পড়ুয়া এবং অধ্যাপক-অধ্যাপিকারা। ভোর থেকেই এই ঐতিহ্যবাহী মুহূর্তের সাক্ষী থাকতে ছাতিমতলায় ভিড় জমিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে দূরদূরান্ত থেকে আসা পর্যটকরা।
এদিন উপাসনা পর্বে শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্য, ব্রাহ্ম ভাবধারা এবং পৌষ উৎসবের তাৎপর্য সকলের সামনে তুলে ধরেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রবীরকুমার ঘোষ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বীরভূমের জেলাশাসক ধবল জৈন, জেলা পরিষদের সভাধিপতি-সহ জেলা প্রশাসনের বিশিষ্ট আধিকারিকেরা।
আরও পড়ুন: আজ থেকে শুরু ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা, শান্তিনিকেতন জুড়ে উৎসবের আমেজ
এবারের পৌষমেলা চলবে মোট ছয় দিন, অর্থাৎ আগামী ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত মেলার আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন দর্শনার্থীরা। মেলা কমিটি সূত্রে খবর, এবছর মেলার মাঠে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ১৩৫০টি স্টল বসেছে। গ্রামীণ কুঠির শিল্পের সম্ভারে সেজে উঠেছে স্টলগুলি। মাটির হাঁড়ি, কুলো থেকে শুরু করে জিআই ট্যাগ প্রাপ্ত কাঁথা স্টিচের পোশাক, ডোকরার গয়না এবং ঘর সাজানোর সামগ্রী- কী নেই সেখানে! অবশ্যই রয়েছে পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ শান্তিনিকেতনি ঝোলা।
কেনাকাটার পাশাপাশি থাকছে সংস্কৃতি চর্চার ব্যবস্থাও। শিক্ষা ভবন, কলাভবন, রবীন্দ্র ভবন, চিনা ভবন এবং ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সেল-সহ বিশ্বভারতীর বিভিন্ন বিভাগের তরফে বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। মেলার প্রথম দিনেই লক্ষাধিক পর্যটকের সমাগম বুঝিয়ে দিয়েছে, সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়েও পৌষমেলার জৌলুস বিন্দুমাত্র কমেনি। শীতের দুপুরে বাউল গানের সুর আর ধুলো ওড়া মেলার মাঠ ফের একবার প্রমাণ করল, শান্তিনিকেতন আছে শান্তিনিকেতনেই।