শিলিগুড়িতে মমতার পদযাত্রার প্রস্তুতি তুঙ্গে
সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ কোথায় কীভাবে করা হবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই কাজে নেমে পড়েছে পুলিস প্রশাসন।

বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়, স্লোগানে নয়, তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গে রাস্তায় হেঁটে সেই বার্তা দেবেন শিলিগুড়ির সব ভাষা ও বর্ণের মহিলারা। রবিবার শিলিগুড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর এই পদযাত্রাকে সফল করতে ইতিমধ্যেই প্রস্তুতিতে নেমে পড়েছে দার্জিলিং জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। আর তাঁর নিরাপত্তার পাশাপাশি এই পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে শহরবাসীর যাতে কোনও সমস্যা না হয় সেজন্য পুলিস প্রশাসনও প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ কোথায় কীভাবে করা হবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই কাজে নেমে পড়েছে পুলিস প্রশাসন।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রাক্কালে শিলিগুড়িতে তৃণমূল সুপ্রিমোর এই কর্মসূচি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। তাঁদের ধারণা, বিধানসভা ভোটের দলীয় প্রচারে রবিবারই কলকাতায় ব্রিগেডে জনসভা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। ওইদিনই শিলিগুড়িতে মহিলাদের নিয়ে পদযাত্রা করে বিজেপিকে বার্তা দিতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। কারণ গত লোকসভা নির্বাচনে ফলের নিরিখে উত্তরবঙ্গ বিজেপির শক্তঘাঁটি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। সেই উত্তরবঙ্গের অঘোষিত রাজধানী শিলিগুড়িতে পদযাত্রায় মহিলাদের ব্যাপক সমাবেশ করে গেরুয়া শিবিরকে ধাক্কা দিতে চাইছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। আর কেবল মহিলাদের নিয়ে উত্তরবঙ্গের মাটিতে এধরনের পদযাত্রা এই প্রথম, দাবি তৃণমূলের। তাই উত্তরবঙ্গের দলীয় মহিলাকর্মীরাও সবোর্চ্চ নেত্রীর সঙ্গে পদযাত্রায় শামিল হতে পারবেন জেনে প্রবল উৎসাহিত তাঁরা।
শনিবার বিকেলেই মুখ্যমন্ত্রীর শিলিগুড়িতে পৌঁছনোর কথা রয়েছে। রবিবার বেলা ১২টায় শহরের দার্জিলিং মোড় থেকে হাসমিচক (ভেনাস মোড়) পর্যন্ত এই পদযাত্রা। সেই কর্মসূচি শেষ করে সেদিনই তাঁর কলকাতায় ফেরার কথা রয়েছে। এর আগে ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে শিলিগুড়িতে (siliguri) দলীয় প্রার্থী বাইচুং ভুটিয়ার সমর্থনে পদযাত্রা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আর এই পদযাত্রাকে সফল করতে প্রচারে নেমে পড়েছে জেলা তৃণমূল (Trinamool) নেতৃত্ব। দলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেন, নেত্রীর সঙ্গে রবিবার শহরের সর্বস্তরের মহিলারা হাঁটবেন। এই অঞ্চলের সব সম্প্রদায়ের মহিলারা তাঁদের নিজস্ব সংস্কৃতির পোশাকে থাকবেন। উলু ও শঙ্খধ্বনির সঙ্গে বিভিন্ন জনজাতির মহিলা তাঁদের সংস্কৃতির বাদ্যযন্ত্র নিয়ে হাঁটবেন। তাঁরা গাইবেনও। সেই মতো একটি ঐতিহাসিক পদযাত্রা করার জন্য আমরা সব রকম প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছি। বিভিন্ন জায়গায় এই পদযাত্রা সফল করার আহ্বানে ফ্লেক্স, ফেস্টুন লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে। গেটও তৈরি করা হচ্ছে।
এদিকে তৃণমূল সুপ্রিমোর এই কর্মসূচি ঘিরে যাতে কোনওভাবে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত না হয় এবং ওই কর্মসূচির জেরে শহরের যান চলাচল স্বাভাবিক থাকে, সেজন্য অতিরিক্ত বাহিনীর ব্যবস্থা রাখছে পুলিস। শিলিগুড়ির পুলিস কমিশনার দেবেন্দ্র প্রতাপ সিং জানিয়েছেন,অন্যান্য দিনের থেকে অতিরিক্ত ৪০০ পুলিস মোতায়েন থাকবে। সেদিন শহরে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতেও সচেষ্ট থাকবে পুলিস।
পুলিস জানিয়েছে, রবিবার ছুটির দিনে এমনিতেই যানবাহন কম থাকে। তবুও যাতে কোনওভাবে গাড়ি চলাচল স্তব্ধ না হয়ে যায় সেজন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেমন জলপাইগুড়ি থেকে শিলিগুড়ি আসার ক্ষেত্রে সেবক রোডকে গুরুত্ব দেন গাড়ি চালকরা। জলপাইগুড়ি থেকে আসা গাড়িগুলিকে এনজেপি হয়ে বাইপাস দিয়ে গন্তব্যের দিকে পাঠানো হবে। অন্যদিকে,খাপরাইল মোড় থেকে দার্জিলিং মোড়গামী গাড়ির পথ সাময়িক বন্ধ রাখা হবে। ওই সব গাড়ী খাপরাইল মোড় থেকে বিকল্প পথ দিয়ে চালানো হবে।