ভোটার হতে লাগবে বৈধ নথির প্রমাণ, জালিয়াতি রুখতে কী পদক্ষেপ কমিশনের?
Authored By:

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৮:৫২: ভোটার তালিকা সংশোধনের শুনানিতে জমা দেওয়া নথি আসল না নকল, তা নিয়ে আর অন্ধকারে থাকতে চাইছে না নির্বাচন কমিশন। এবার শুনানির সময় জমা পড়া প্রতিটি নথি কঠোরভাবে যাচাই করার জন্য অভিনব পন্থা অবলম্বন করতে চলেছে কমিশন। বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের (সিইও) কাছে এই মর্মে একটি কড়া নির্দেশিকা পাঠিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন।
কমিশনের নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, ভোটার তালিকায় নাম তোলানো বা সংশোধনের শুনানিতে যাঁদের ডাকা হবে, তাঁদের নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হবে। অর্থাৎ, তিনি যে দেশের বৈধ নাগরিক এবং ভোটার হওয়ার যোগ্য, সেই দায় বর্তাবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ওপরেই। এর জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা দিতে হবে। কমিশন জানিয়েছে, কেবল নথি জমা নিলেই চলবে না, তা সঠিক কি না, তা নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে যাচাই করা হবে।
নির্দেশিকা অনুযায়ী, শুনানিতে ভোটাররা যেসব নথি জমা দেবেন, তা ফেলে রাখা যাবে না। নথি হাতে পাওয়ার সর্বোচ্চ পাঁচ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট আধিকারিককে তা ‘বিএলও অ্যাপ’ (BLO App) অথবা কমিশনের নির্দিষ্ট পোর্টালে আপলোড করতে হবে। এরপর শুরু হবে যাচাই পর্ব।
জেলা নির্বাচনী আধিকারিক বা ডিইও-রা (DEO) আপলোড করা নথিগুলি পরীক্ষা করবেন। যে সরকারি দপ্তর থেকে ওই নথি ইস্যু করা হয়েছে (যেমন- পুরসভা, পঞ্চায়েত বা অন্য কোনও বিভাগ), ডিইও সরাসরি সেই দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে তথ্যের সত্যতা যাচাই করবেন।
কমিশন আরও জানিয়েছে, যদি কোনও নথিপত্র একই রাজ্যের অন্য জেলার হয়, তবে বর্তমান জেলার ডিইও অ্যাপের মাধ্যমেই সংশ্লিষ্ট জেলার ডিইও-র কাছে তা যাচাইয়ের জন্য পাঠাবেন। আর যদি নথিটি ভিন রাজ্যের হয়, তবে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সিইও-র সঙ্গে যোগাযোগ করে তথ্য যাচাই করবেন। সমস্ত ডিইও, নির্বাচন নিবন্ধন আধিকারিক (ইআরও) এবং পর্যবেক্ষকদের এই নিয়ম কড়াকড়িভাবে মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।পশ্চিমবঙ্গে গত ৪ নভেম্বর থেকে এসআইআর (SIR) প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং ১৬ ডিসেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। কমিশন সূত্রে খবর, আগামী ২৭ ডিসেম্বর থেকে রাজ্যে শুরু হচ্ছে শুনানি পর্ব।
এই শুনানিতে প্রথম পর্যায়ে প্রায় ৩০ লক্ষের বেশি ‘নো ম্যাপিং’ ভোটারকে নোটিস পাঠানো হচ্ছে। এঁরা ২০০২ সালের ভোটার তালিকার সঙ্গে নিজেদের কোনো যোগসূত্র বা প্রমাণ দেখাতে পারেননি। এছাড়াও আরও ১ লক্ষ ৩৬ হাজার ভোটারকে ‘সন্দেহজনক’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদেরও শুনানিতে সশরীরে হাজির হয়ে বৈধ নথিপত্র দেখিয়ে ভোটাধিকার প্রমাণ করতে হবে। ভুয়ো ভোটার রুখতে কমিশনের এই ডিজিটাল ও আন্তঃবিভাগীয় যাচাইকরণ প্রক্রিয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।