বৃষ্টি উপেক্ষা করেই মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড় দর্শনার্থীদের
প্রতিকূল আবহাওয়াকে উপেক্ষা করেই চতুর্থীর দুপুর থেকে উৎসব মুডে কল্লোলিনী তিলোত্তমা। কোভিডবিধি এবং আদালতের নির্দেশের জেরে মণ্ডপের ভিতরে প্রবেশ নিষিদ্ধ

বিদায়ের প্রাক্কালে এসেও আগ্রাসী বর্ষা। প্রায় মাটি হতে বসেছে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব। চতুর্থীতে তা ভালোই টের পেলেন কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের বাসিন্দারা। শনিবার মহানগরী সহ দক্ষিণবঙ্গের অনেক জায়গায় কয়েক পশলা ভারী বৃষ্টি হয়েছে। যদিও তাতে আম বাঙালির পুজোর হুজুগে ভাটা পড়েনি। প্রতিকূল আবহাওয়াকে উপেক্ষা করেই চতুর্থীর দুপুর থেকে উৎসব মুডে কল্লোলিনী তিলোত্তমা। কোভিডবিধি এবং আদালতের নির্দেশের জেরে মণ্ডপের ভিতরে প্রবেশ নিষিদ্ধ। তাই বাইরে দিনভর উপচে পড়ল প্যান্ডেল হপিংয়ের জনস্রোত। টালা থেকে টালিগঞ্জ—সর্বত্র।
আবহাওয়া অফিস অবশ্য আগাম আশঙ্কার কথা শুনিয়েছে। আন্দামান সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে অষ্টমী থেকে দশমী (১৩ থেকে ১৫ অক্টোবর) কলকাতা, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি এবং দুই মেদিনীপুরে বৃষ্টির সম্ভাবনা। আবহাওয়ার এহেন ভ্রুকুটিতেও অবশ্য ‘কুছ পরোয়া নেই’ মনোভাব বাঙালির। আগাম তারা নেমে পড়েছে রাজপথে। প্যান্ডেল হপিংয়ের সঙ্গে চলছে পুজোর শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা। আর সেই ভিড়ের চাপে এদিন শহরের বেশ কিছু রাস্তায় যানজটে ভুগতে হয়েছে সাধারণকে।
আজ, রবিবার মহাপঞ্চমী। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বজ্রগর্ভ মেঘের প্রভাবে পঞ্চমীতেও কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তার পরিমাণ বেশি হবে না। মেগা উৎসবের এই পর্বের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় এবং যানবাহন সুগম রাখতে এদিন থেকেই রাস্তায় নেমেছে কলকাতা পুলিসের বাড়তি ১৬ হাজার কর্মী। চতুর্থীতে পুজো উদ্বোধন পর্বের মেগাতারকা ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ৩০টি মণ্ডপ তিনি পরিক্রমা করেন। ভবানীপুরের ৭৫ পল্লির পুজোর উদ্বোধনে গিয়ে ধামসাও বাজান মমতা। এক ফাঁকে স্বামী নারায়ণ মন্দিরে গিয়ে করেন আরতিও। আজ, মহাপঞ্চমীতে মন্ত্রিসভার সহকর্মী অরূপ বিশ্বাসের সুরুচি সঙ্ঘের পুজোর উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর যাবেন চেতলার নবনীড় বৃদ্ধাশ্রমে। প্রতি বছর নিয়ম করে সেখানকার আবাসিকদের সঙ্গে শারদ শুভেচ্ছা বিনিময় এবং পুজোর উপহার দিতে হাজিন হন মুখ্যমন্ত্রী।
আবহাওয়া দপ্তরের হুঁশিয়ারি অবশ্য স্পষ্ট, উত্তর আন্দামান সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণাবর্তের জেরে একটি নিম্নচাপ সক্রিয় হচ্ছে। আজ, রবিবার নিম্নচাপটি তৈরি হবে। এরপর ক্রমেই তা শক্তি বাড়িয়ে এগবে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে। নিম্নচাপটি সাইক্লোনে পরিণত হয় কি না সেটাই দেখার। সেটির অভিমুখ অবশ্য ওড়িশা এবং অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল। এই নিম্নচাপের প্রভাবেই কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় অষ্টমী থেকে দশমী পর্যন্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তবে হাওয়া অফিসের দাবি, আগামী দু’-তিনদিনের মধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মৌসুমি বায়ু সরে যাবে। অর্থাৎ বিদায় নেবে বর্ষা।