আন্তর্জাতিক মঞ্চে কোনঠাসা রাশিয়া, পারমাণবিক আক্রমণের প্রচ্ছন্ন হুমকি পুতিনের

রাশিয়ার কৌশলগত ক্ষেপণাস্ত্র বহরের জন্য এটাই সর্বোচ্চ স্তরের সতর্ক অবস্থা বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি

February 27, 2022 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

রাশিয়ার কৌশলগত ক্ষেপণাস্ত্র বহরের জন্য এটাই সর্বোচ্চ স্তরের সতর্ক অবস্থা বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।

রোববার টেলিভিশনের এক ভাষণে রুশ বাহিনীর জ্যেষ্ঠ জেনারেলদের উদ্দেশে পুতিন বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার প্রতি বৈরী পদক্ষেপ নিয়েছে এবং ‘বেআইনি নিষেধাজ্ঞা’ আরোপ করেছে।

আর কেবল পশ্চিমারাই নয়, নেটোর নেতৃস্থানীয় দেশগুলোও রাশিয়াকে নিয়ে আগ্রাসী বক্তব্যে সামিল হয়েছে উল্লেখ করে পুতিন বলেন, এ কারণেই তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং চিফ অব জেনারেল স্টাফকে তার বাহিনীর পারমাণবিক অস্ত্রের বহরকে ‍যুদ্ধের জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত থাকার আদেশ দিয়েছেন।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের এই পদক্ষেপকে পুরোপুরি ‘অগ্রহনযোগ্য’ বলে বর্নণা করেছে ‍যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড সিবিএস নিউজকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “এর অর্থ হচ্ছে, পুতিন এমনভাবে রুশ-ইউক্রেইন যুদ্ধের উত্তেজনা বাড়াচ্ছেন যা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”

আমাদেরকে খুবই তীব্র এবং কড়া ভাষায় এই পদক্ষেপের নিন্দা করে যেতে হবে”, বলেন তিনি।

পুতিনের এই নিদেশ দেওয়ার অর্থ হচ্ছে, তিনি রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র উৎক্ষেপণের জন্য অনেকটাই প্রস্তুত রাখতে চান। এর মধ্য দিয়ে ইউক্রেইনে রাশিয়ার আগ্রাসন এবং এর বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের জবাব পারমাণবিক যুদ্ধে গড়ানোর আশঙ্কাও আরও বাড়ল।

পুতিনের নেওয়া পদক্ষেপে রাশিয়ার অস্ত্র উৎক্ষেপণ করা সহজ হল। তবে বিবিসি’র নিরাপত্তা বিষয়ক সংবাদদাতা গর্ডন কোরেয়া বলছেন, এই পদক্ষেপের মানে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ইচ্ছা আছে – এমন আভাস দেওয়া নয়, বরং এটি নেটোকে সতর্কবার্তা পাঠানোর জন্য রাশিয়ার একটি পন্থা।

রাশিয়ার কাছে বিশ্বের বৃহত্তম পরমাণু অস্ত্রের মজুদ আছে। কয়েকদিন আগেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেইন অভিযান শুরুর সময় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, “কেউ এতে বাধা দেওবার চেষ্টা করলে এমন পরিণতি হবে যা তার ইতিহাসে কখনও দেখা যায়নি। “ তখন অনেকেই একে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি বলেই ধরে নিয়েছিলেন।

হোয়াইট হাউজের এক কর্মকর্তা বলেছেন, পুতিনের সিদ্ধান্ত উত্তেজনা আরেক দফা বাড়িয়েছে। এর কোনও প্রয়োজন ছিল না। এই সংঘাতের প্রতিটি পদক্ষেপে পুতিন তার একের পর এক আগ্রাসী কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করতে গিয়ে হুমকি সৃষ্টি করেছেন।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, তিনি (পুতিন) কখনওই ইউক্রেইন কিংবা নেটো থেকে হুমকির মুখে ছিলেন না। নেটো প্রতিরক্ষা জোট। এই জোট ইউক্রেইনে লড়াই করবে না। তার (পুতিন) বাহিনী আজ হুমকির মুখে পড়ার কারণ একটিই- তা হচ্ছে, তারা একটি সার্বভৌম দেশে আগ্রাসন চালিয়েছে।

ওদিকে, ইউক্রেইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা রোববার বলেছেন, পুতিনের পারমাণবিক অস্ত্র বহরকে বিশেষ সতর্কাবস্থায় রাখাটা ইউক্রেইনের ওপর চাপ সৃষ্টির চেষ্টা। সোমবারের আলোচনায় ইউক্রেইনের প্রতিনিধিদলের ওপর চাপ বাড়াতে চাইছে রাশিয়া।

তিনি বলেন, দুইপক্ষের প্রতিনিধিদল আলোচনায় বসতে রাজি থাকা নিয়ে ঘোষণা আসার পরপরই পুতিন পারমাণবিক অস্ত্র প্রস্তুত রাখার এই আদেশ দিয়েছেন- এমনটিই দেখা যাচ্ছে। “আমরা পুতিনের নির্দেশকে ঝুঁকি বাড়ানো এবং ইউক্রেইনের প্রতিনিধিদলের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হিসাবেই দেখছি। তবে আমরা চাপের কাছে নতি স্বীকার করব না,” বলেন দিমিত্রো।

তিনি আরও বলেন, “পুতিনের পারমাণবিক অস্ত্র সতর্কাবস্থায় রাখার সিদ্ধান্ত আমাদের জন্য সরাসরি হুমকি। এ ব্যাপারে আমার বার্তা খুবই সরল। আর তা হচ্ছে, বিশ্বের জন্য এ হবে এক বিপর্যয়। কিন্তু আমরা এতে ভেঙে পড়ব না।”

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen